দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্রিটিশ ইউজারদের কাছে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয় (নগ্ন) ছবি পাঠানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলেছে, “ব্যক্তিগত প্রতিশোধের কারণে একজন যেন অন্য জনের গোপনীয়( নগ্ন) ছবি ফেসবুকে পোষ্ট করতে না পারে সেই জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অনেক সময় দেখা যায়, একজন ব্যক্তি অন্যজনের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অন্য ব্যক্তির ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করে। এমন আশঙ্কা থাকায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নিয়েছে। কেননা অনলাইনে ওই ছবি প্রকাশিত হওয়ার আগেই তা ব্লক করে দেবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া একই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিশুদের হয়রানিমূলক ছবি ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।
ইতিমধ্যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এই প্রক্রিয়াটি অস্ট্রেলিয়াতে পরীক্ষা করেছে। এখন তারা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাতে এই পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছে। এদিকে ফেসবুকের একজন মুখপাত্র নিউজবিটকে জানিয়েছেন, “এখন ব্রিটেনের মানুষদের জন্য বিষয়টি উন্মুক্ত করা হয়েছে।”
প্রক্রিয়াটি যেভাবে কাজ করবেঃ
কোন ব্যক্তি যদি নিজের কোন গোপন বা নগ্ন ছবি অন্য কারোর দ্বারা ফেসবুকে প্রকাশিত হওয়ার আশঙ্কায় থাকে তবে সেই ব্যক্তিকে ফেসবুকের যে সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। ব্রিটেনে যেমন রিভেঞ্জ পর্ণ হেল্প-লাইনে এজন্য যোগাযোগ করা যাবে। তখন সেই হেল্পলাইনের কর্মীরা ফেসবুকের সাথে যোগাযোগ করবে এবং অভিযোগকারী ব্যক্তিকে তার যে সকল গোপন ছবি নিয়ে সে আশঙ্কায় আছে ওই ছবিগুলো আপলোড করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাবে।
এই নগ্ন ছবিগুলো কারা দেখতে পাবে?
এই প্রশ্নের জবাবে ফেসবুকের নিরাপত্তা বিষয়ক বৈশ্বিক প্রধান অ্যান্টিগন ডেভিস নিউজবিটকে বলেন, “এই ছবি দেখতে পাবে কেবলমাত্র পাঁচজন প্রশিক্ষিত রিভিউয়ার্স নিয়ে গড়া ক্ষুদ্র একটি দল। তারা ছবিটিতে ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংযোজন করবেন। এরপর সেই কোডটি ডাটাবেজে সংরক্ষণ করা হবে। অন্য কোন ব্যক্তি যদি সেই একই ছবি কোনভাবে আপলোড করার চেষ্টা করে কোডটি তখন শনাক্ত করবে এবং সেটা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং মেসেঞ্জারে প্রকাশ হওয়ার আগেই ব্লক করে দেবে।”
এই পদ্ধতি কতটা কার্যকর হবে?
পদ্ধতিটি কতটা কার্যকর হবে সেই প্রশ্নের জবাবে ফেসবুকের অ্যান্টিগন ডেভিস স্বীকার করেন যে, “যখন ফটো-ম্যাচিং প্রযুক্তির বিষয় জড়িত তখন ১০০% নিশ্চয়তা দেয়া যাবে না। কারণ ছবিকে বিকৃত করা সম্ভব তাই মূল ছবি থেকে সেগুলো আলাদা হতে পারে। কিন্তু তিনি বলছেন তারা ভালো ফল পাচ্ছেনা।”
তার মতে পুরো প্রক্রিয়াটি সঠিক ভাবে কাজ করতে হলে ব্যবহারকারীর কাছেও সেই ছবিগুলো থাকতে হবে। নইলে এই প্রক্রিয়া কাজ করবে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোন ব্যক্তি যদি তার সাবেক স্বামী/স্ত্রী/প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে কোন গোপন ছবি তুলে থাকেন এবং সেই ছবিগুলো তার কাছে না থাকে তবে এই প্রক্রিয়া কোন কাজ করবে না।
ব্রিটেনের রিভেঞ্জ পর্ণ হেল্প-লাইন ২০১৫ সালে চালুর পর থেকে প্রতি বছর এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার রিপোর্ট দেখতে পেয়েছে। হেল্পলাইনটি চালুর পর থেকে শুধু ২০১৫ সালেই ৫০০ এর বেশি এই ধরণের রিপোর্ট পেয়েছে। এছাড়া ২০১৭ সালে এই ধরনের রিপোর্ট এসেছে ১০০০ এর বেশি।