দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি জাপানে বিশ্বের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কুকুরের শততম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গত ২ জুলাই হাচিকো নামে এই কুকুরটির জন্মদিন ছিল।
১০০ বছর আগে এই দিনে জন্ম নিয়েছিল এই কুকুরটি। জাপানের গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই কুকুর হাচিকোর জন্ম ১৯২৩ সালের নভেম্বরে জাপানের আকিতা প্রিফেকচারের ওডেট নামক শহরে। আকিতা জাতের কুকুরের আদি জায়গায় হলো এই শহর। বড় আকৃতির এই কুকুর জাপানের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও পুরোনো জাতগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৩১ সালে জাপান সরকার আকিতা কুকুরকে জাতীয় প্রতীক হিসেবে নির্ধারণ করে। এক সময় জঙ্গলে শুকর কিংবা হরিণ শিকারের জন্য এই কুকুরকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হতো।
১৯৪৮ সালে টোকিওর শিবুইয়া স্টেশনে হাচিকোর একটি ব্রোঞ্জের মূর্তিও নির্মাণ করা হয়। এই স্টেশনের বাইরেই হাচিকো তার মনিবের জন্য অনেকদিন ধরে প্রতীক্ষায় সময় কাটিয়েছে। তবে হাচিকোর ভাস্কর্যটি প্রথম তৈরি করা হয় ১৯৩৪ সালে। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি সরিয়ে ফেলা হয়। জাপানের স্কুলে শিশুদের বিশ্বস্ত হাচিকোর গল্প বলা হয় ভক্তি ও বিশ্বস্ততার উদাহরণ হিসেবে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৩২ সালে জাপানের সংবাদপত্রে কুকুর হাচিকোকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো এবং পুরো দেশজুড়ে তার খ্যাতিও ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। হাচিকোকে নিয়ে জাপানে প্রথম চলচ্চিত্রটি তৈরি হয়েছিলো ১৯৮৭ সালে। তারপর ২০০৯ সালে হলিউডেও তৈরি হয় আরেকটি ছবি, ওই সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন রিচার্ড গের।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org