দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একজন কর্মচারীও তার কর্মদক্ষতা দেখিয়ে মালিকের কাছে সুনাম অর্জন করতে পারেন। যেমনটি ঘটেছে সৌদি আরবে কর্মরত এক বাংলাদেশীর। সৌদি মালিক সালেহ সেনাইদি কর্মচারীর বিয়েতে অংশ নিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন!
দীর্ঘদিনের বিশ্বাসী কর্মচারীর বিয়েতে অংশগ্রহণ করতে সুদূর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন জনৈক সৌদি ব্যবসায়ী।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশের নিজস্ব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি জানার আগ্রহ ও কর্মচারির বিয়ের দাওয়াত রক্ষা করতে সৌদি থেকে বাংলাদেশে উড়ে এসেছিলেন সৌদি নাগরিক সালেহ আল সেনাইদি।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজকে তিনি জানান, এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানী ঢাকার পাশে অবস্থিত একটি গ্রামে, নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর বিয়েতে আসেন তিনি।
কর্মচারি সম্পর্কে সেনাইদি জানিয়েছেন, “আমি তাকে বিগত ৫ বছর ধরেই চিনি। তার সততা ও কর্মক্ষেত্রে বিশ্বস্ততার জন্য তার উপর আমি অনেকাংশে নির্ভর করি।”
নিজের বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে সালেহ আল সেনাইদি আরও বলেন, সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্যই ছিল নিজেদের মধ্যে দূরত্ব ঘুচানো, আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতা বৃদ্ধি করা, নতুন অভিজ্ঞতা নেওয়া ও বাংলাদেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সম্পর্কেও জানা।
বাংলাদেশীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা দেখে মুগ্ধ হন সালেহ আল সেনাইদি। তিনি জানিয়েছেন, “তাদের মধ্যে অনেকেই তাকে লাঞ্চ, ডিনার কিংবা চায়ের জন্য আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন। তারা আমাদের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং সম্মানে অভিভূত করেছেন, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এই সফরটির খুব ভালো ছিল। জেলার সবাই আমাদের স্বাগত জানাতেও এসেছিলো।”
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের বিয়ে এবং ঐতিহ্যে অনেকটা মিল রয়েছে জানিয়ে আল সেনাইদি বলেন, ‘উদাহরণস্বরূপ, বরকে বিয়ের অনুষ্ঠানে গাড়িতে করে নিয়ে যান তার বাবা, চাচা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনরা। বিয়ের অনুষ্ঠান হয় কনের বাড়িতেই।’
সৌদি আরবে কর্মরত প্রবাসীদের প্রতি নিয়োগকর্তাদের বিনয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়া আল সেনাইদি। তিনি বলেছেন, ‘তারা আপনাদেরই ভাই। তাই তাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য কিংবা নিচু দৃষ্টিতে দেখবেন না। আপনাদের মতোই তারাও মানুষ। কঠিন পরিস্থিতি তাদের জীবিকার সন্ধানে তাদের পরিবার ও দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করে।’
তবে বাংলাদেশের কোন জেলায় তিনি এসেছিলেন বা ওই বাংলাদেশীর নাম কি সেই বিষয়ে কিছুই জানাননি আল সেনাইদি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org