দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কাঁকড়া অতি পরিচিত জলজ প্রাণী। বিভিন্ন দেশে এটি অনেকের কাছেই সুস্বাদু এবং প্রিয় খাবার। তবে সম্প্রতি এই কাঁকড়া নিয়ে অত্যন্ত ভয়াবহ অভিজ্ঞতায় পড়েন এক জাপানি নারী পর্যটকের।
জানা যায়, সম্প্রতি বন্ধুদের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে ঘুরতে গিয়েছিলেন জুনকো শিনবা নামে ওই জাপানি পর্যটক। সেখানকার এক রেস্তোরাঁয় খাবারের বিল দেখে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে যান।
কাঁকড়ার মতো সুস্বাদু ওই ডিশ খাওয়ার জন্য তাকে ৯৩৮ সিঙ্গাপুর ডলার তথা ৬৮৬ মার্কিন ডলারেরও বেশি বিল ধরিয়ে দেয় ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৫ হাজার ৩০০ টাকারও বেশি হবে! বিল দেখে চোখ ছানাবড়া হয় ওই পর্যটকের। পরে তিনি কোনো উপায় না দেখে স্থানীয় পুলিশকে ফোন করেন।
সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এশিয়া ওয়ান বলেছে যে, গত ১৯ আগস্ট সিফুড প্যারাডাইস রেস্তোরাঁয় খাবার খেয়েছেন তিনি। তিনি যে ‘চিলি ক্র্যাব ডিশ’ অর্ডার করেছেন, তার দাম ৯৩৮ সিঙ্গাপুর ডলার (৬৮৬ মার্কিন ডলার) বলে খাওয়া শেষে জানতে পেরেছেন।
জুনকো শিনবা জানিয়েছেন, একজন ওয়েটারের পরামর্শেই তিনি রেস্তোরাঁটির জনপ্রিয় ‘আলাস্কান কিং চিলিস ক্র্যাব ডিশ’ অর্ডার করেছিলেন। শুরুতে ওয়েটার এই খাবারের ডিশের মূল্য ২০ ডলার বলে তাকে জানিয়েছিলেন। তবে প্রতি ১০০ গ্রামের জন্য যে আলাদা দাম চার্জ করা হয় তা তাকে মোটেও জানাননি ওই ওয়েটার।
জাপানি এই পর্যটকের দাবি, কাঁকড়াটি রান্না করার আগে মোট ওজন সম্পর্কেও তাকে জানানো হয়নি। পরে তার চারজনের দলটি শেষ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কেজির চিলি ক্র্যাব ডিশ খেয়ে ফেলেন। এর ফলে তাদের বিল আসে ৯৩৮ সিঙ্গাপুর ডলার বা ৬৮৬ মার্কিন ডলার।
৫০ বছর বয়সী ওই নারী বলেন, চারজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের এক রাতের খাবারের এতো দাম জেনে আমরা সবাই নির্বাক হয়ে গেছি।
পুলিশের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর রেস্তোরাঁটি জুনকো শিনবাকে মাত্র ১০৭ সিঙ্গাপুর ডলার কিংবা ৭৮.৩২ মার্কিন ডলার বিল করেন। বাকিটা দেশের সুনামের জন্য ছাড় দিতে রাজি হয়েছিলো হোটেল কর্তৃপক্ষ। এভাবেই পুলিশ হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই বিষয়টির সমাধান করেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org