দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি মৃত্যুর ওপর কারও হাত নেই। আবার ভাবাও কঠিন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অবশ্য অন্য কথা বলছে। গবেষকদের দাবি হলো, তাদের তৈরি ‘ডেথ ক্যালকুলেটর’-এর মাধ্যমে জীবদ্দশাতেই মানুষ জানতে পারবেন, কবে কখন তার মৃত্যু ঘটবে!
ডেনমার্কের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এআই নিয়ে গবেষণা করছেন দীর্ঘদিন যাবত। আর গবেষণা করতে গিয়ে চমকপ্রদ এই আবিষ্কারের সঙ্গে তাদের পরিচয় ঘটেছে। গবেষকদের দাবি করে বলেছেন, তাদের তৈরি ‘ডেথ ক্যালকুলেটর’-এর মাধ্যমে জীবদ্দশাতেই মানুষ যেনে যাবেন, কবে কখন তার মৃত্যু ঘটবে।
চ্যাটজিপিটি-তে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, সেটিই ‘ডেথ ক্যালকুলেটর’-ও ব্যবহার করেছেন তারা। মূলত লাইফ২ভেক নামে একটি অ্যালগরিদমে কাজ করে এটি। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির উপার্জন, কাজের ধরণ, বাসস্থান, শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একাধিক প্রশ্নও করা হয়। এই ধরনের তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে মৃত্যুর সম্ভাব্য দিন নির্ধারণ করে দেয় প্রযুক্তি।
গবেষকরা বলেছেন, মৃত্যুর দিন নির্ধারণের জন্য জীবনের ঘটনাবলি, ওই ব্যক্তি কোন ভাষায় কথা বলেন ইত্যাদি যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করে এআই যন্ত্রটি। সব উত্তর ঠিকঠাক দিলে উত্তর সঠিক আসার সম্ভাবনাও থাকে।
বিজ্ঞানীরা দাবি করে বলেছেন, এক্ষেত্রে ‘মরণ ক্যালকুলেটর’ গণনা করে যে উত্তর বের করে, তা ৭৮ শতাংশই সঠিক। পূর্বাভাস না মেলার সম্ভাবনা থাকে মাত্র ২২ শতাংশের ক্ষেত্রে।
‘গবেষকরা দাবি করেছেন, ২০০৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চলেছে এই যন্ত্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ওই ১২ বছরে অন্তত ৬০ লাখ ডেনমার্কবাসীর ওপর যন্ত্রটি পরীক্ষা করে দেখা হয়। তবে ফলও হয়েছে আশানুরূপ। যা দেখে যন্ত্র নিয়ে উৎসাহও বেড়েছে বিজ্ঞানী মহলে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, এই যন্ত্র সফলভাবে মানুষ ব্যবহার করতে পারলে তা অনেক কাজেও লাগতে পারে। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠতে পারে ‘ডেথ ক্যালকুলেটর’টি। এ সম্পর্কে উদাহরণ হিসেবে জীবন বীমার কথাও বলেছেন বিজ্ঞানীরা। ওই প্রকল্পের ক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাব্য সময় আগে থেকে জানা থাকলে উভয়পক্ষের সুবিধা হবে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org