দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভালোবাসা দিবসের প্রেমপত্র লিখতে এআই ব্যবহার করতে চান বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ প্রেমিক। অ্যান্টিভাইরাস প্রস্তুতকারক কোম্পানি ম্যাকাফির এক জরিপে এই চমকপ্রদ তথ্যটি উঠে এসেছে।
ম্যাকাফির জরিপ থেকে জানা যায় যে, ৪ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন (উত্তরদাতাদের মধ্যে ২৬ শতাংশ) প্রেমের প্রস্তাব দিতে কিংবা সঙ্গীর জন্য প্রেমপত্র লেখার জন্য জেনারেটিভ এআই টুল ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছেন। আর দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি (৬৭ শতাংশ) এআই দিয়ে তৈরি এবং একজন মানুষের লেখার প্রেমপত্রের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে না। ম্যাকাফি গত বছরের জরিপটির শিরোনাম হলো- ‘মডার্ণ লাভ’ বা যাকে বলে আধুনিক ভালোবাসা। আধুনিক যুগে এআই এবং ইন্টারনেট কীভাবে ভালোবাসা এবং সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে, সেটি জানার লক্ষ্যে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। গবেষণায় ৯টি দেশের ৫ হাজার মানুষের তথ্য নেওয়া হয়েছে। এই গবেষণাটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় তথ্য হলো- উত্তরদাতাদের এক চতুর্থাংশই ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি, গুগলের জেমিনি এবং মাইক্রোসফটের কোপাইলটের মতো এআইভিত্তিক টুল ব্যবহার করে তাদের সঙ্গীদের ভালোবাসা প্রকাশ করবেন!
এআইভিত্তিক চিঠি লেখার সাধারণ কারণই ছিল এটি সঙ্গীদের কাছে প্রেরককে আরও আত্মবিশ্বাসীই (২৭ শতাংশ উত্তরদাতার মতে) দেখাবে।
ব্যক্তিগতভাবে চিঠি লেখার সময় এবং অনুপ্রেরণার অভাবকে দ্বিতীয় কারণ হলো (২১ শতাংশ) হিসাবে গবেষণায় পাওয়া যায়। ১০ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন এর মাধ্যমে কাজটি দ্রুত করা যাবে।
এই পদ্ধতিতে চিঠি লিখলে তারা ধরা পড়বে না বলেও বেশিরভাগ উত্তরদাতাই মনে করেন। অপরদিকে ৪৯ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্করা বলেন, এআইভিত্তিক টুল দিয়ে তৈরি করা চিঠি পেলে, তারা অপমানিত বোধ করবেন। তবে উত্তরদাতাদের ৬৭ শতাংশই এআই টুল দিয়ে তৈরি এবং মানুষের তৈরি প্রেমপত্রের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করতে পারেননি।
লার্জ ল্যাংগুয়েজ মডেলভিত্তিক (এলএলএম) জেনারেটিভ এআই টুলগুলো মানুষের মতোই টেক্সট তৈরি করে দিতে পারে। এই ধরনের বেশিরভাগ টুলগুলো লেখার স্টাইল, কাঠামো ও ছন্দ ইত্যাদি ব্যবহারকারীর নির্দেশনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণও করতে পারে।
তাছাড়াও চ্যাটজিপিটি প্লাস, কোপাইলট প্রো-এর মতো সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক এআই অ্যাসিস্টেন্টগুলো দিয়ে ব্যবহারকারীরা নিজস্ব চ্যাটবটও তৈরি করতে পারেন। এইসব চ্যাটবটগুলোকে ব্যবহারকারীরা নিজস্ব লেখা দিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে পারবে। যে কারণে এগুলো ব্যবহারকারীর লেখার স্টাইলে টেক্সটও তৈরি করে দিতে পারবে।
ম্যাকাফির গবেষণা নির্দেশ করে যে, এই ধরনের চিঠি তৈরি করে সাইবার অপরাধী অনেক মানুষকে প্রতারিত করতে পারে। প্রতারকরা দুর্বল ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে পরিকল্পনাও তৈরি করে। ভালোবাসা এবং সম্পর্ক নিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয় এই ধরনের অপরাধীরা অনেক সময়।
এই গবেষণায় দেখা যায় যে, উত্তরদাতাদের ৫১ শতাংশ ক্যাটফিশে (অনলাইনে অপরিচিতদের সঙ্গে কথা বলা কিংবা দেখা করা, যারা অন্য কেও হওয়ার ভান করেন) অভিজ্ঞতাও হয়েছে।
এই সময় অপরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছে ম্যাকাফি কোম্পানি। সেইসঙ্গে কোনো অপরিচিত মানুষকে টাকা কিংবা গোপনীয় তথ্য না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org