দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পারিবারিক অশান্তির জেরে কাটারি দিয়ে স্ত্রীর ধড় থেকে মাথা আলাদা করে ফেলেন এক স্বামী। এরপর সেই কাটা মুণ্ডু হাতে নিয়ে চিৎকার করে স্থানীয়দের জড়ো করেন।
পরে আবার মুণ্ডুটি একটি বেঞ্চে রেখে তার পাশে নির্বিকার বসেছিলেন। গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এমন বিভৎস দৃশ্য দেখেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর এলাকাবাসী। ঘটনায় স্তম্ভিত হয়েছে পুরো রাজ্য।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, পটাশপুর থানার চিস্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা গৌতম গুছাইত গত বুধবার একটি ধারালো কাটারি দিয়ে কুপিয়ে তার স্ত্রীকে খুন করে। এরপরে দেহ থেকে মুণ্ডু আলাদা করে সেই কাটা মুণ্ডু নিয়ে রাস্তার পাশে একটি বেঞ্চে গিয়ে নির্ভার হয়ে বসে থাকেন ওই ব্যক্তি গ্রৌতম।
স্থানীয়রা দাবি করেছেন যে, বেশ কিছুদিন ধরে পারিবারিক অশান্তি চলছিল গৌতমের পরিবারের মধ্যে। এরই জেরে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। গ্রামের কয়েকজন জানিয়েছেন যে, স্ত্রীকে খুন করার পর তার মাথা কেটে হাতে নিয়ে এগরা-বাজকুলের রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন তারই স্বামী গৌতম। নিজেই দড়ি দিয়ে একটি জায়গা ঘিরে রেখে সেখানে একটি বেঞ্চ পেতে বসে পড়েন সেই বেঞ্চে। পাশে বেঞ্চের উপর রাখেন তার স্ত্রীর কাটা মুণ্ডুটি। এই সময় তার এক হাতে ছিলো সেই কাটারি। স্থানীয়রা চেষ্টা করেও ভয়ে ওই যুবকের কাছেও ঘেঁষতে পারেননি। ওইভাবে হাতে রক্তমাখা কাটারি আর বেঞ্চে স্ত্রীর কাটা মুণ্ড নিয়ে ঠায় বসে থাকেন তিনি। পরে খবর পাঠানো হয় স্থানীয় পটাশপুর থানায়। পুলিশ খবর পেয়ে এসে অভিযুক্ত গৌতমকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। একইসঙ্গে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। অভিযুক্তের সঙ্গে তার বাবা-মাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পটাশপুর থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা দাবি করেছেন যে, গৌতমের মানসিক সমস্যাও রয়েছে। ইতিপূর্বেও একবার তিনি আলিপুর চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচায় ঢুকে পড়েন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org