দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণভাবে, দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে গেলে দাঁতের ভিতরে থাকা স্নায়ুগুলো উন্মুক্ত হয়ে যেতে পারে। আর তখন এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গরম মানেই শুধু ঘাম নয়। রোদে তেতে পুড়ে বাড়ি এসেই ঠাণ্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাস। কালবৈশাখী ঝড়ে আম কুড়ানো আর আইসক্রিমের গাড়ির পিছনে দৌড় দেওয়া নতুন কিছু নয়। ৮ থেকে ৮০ গরমকালে আইসক্রিম খাওয়ার ঝোঁক বাড়ে সকলের। তবে ইচ্ছে থাকলেই কি আর উপায় থাকে? এক টুকরো আইসক্রিম খেতে না খেতেই দাঁতের গোড়া একেবারেই ঝনঝন (শিরশির) করে ওঠে। আর সেই ভয়ে পছন্দের এই খাবারটি খেতে চান না অনেকেই। সাধারণভাবে, দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে গেলে দাঁতের ভিতরে থাকা স্নায়ুগুলো উন্মুক্ত হয়ে যেতে পারে। আর তখন এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘টুথ সেনসিটিভিটি’ বলা হয়ে থাকে। এর থেকে মুক্তি পেতে কিছু টোটকার উপর ভরসা রাখা যেতে পারে।
বিশেষ ধরনের মাজন
তবে দাঁতের এই সমস্যা নিরসনে এক ধরনের বিশেষ দাঁতের মাজন পাওয়া যায়, এটিকে ডিসেনসিটাইজ়িং টুথপেস্ট বলে। এই ধরনের মাজনে কিছু বিশেষ উপাদানও থাকে, যা উন্মুক্ত স্নায়ুমুখগুলো ঢাকতে সহায়তা করে। পটাশিয়াম নাইট্রেট নামক একটি যৌগ এই কাজটিতে অত্যন্ত উপযোগী। সেইসঙ্গে, দাঁত মাজার ব্রাশটি নরম হলেও এই সমস্যায় কিছুটা আরামও পেতে পারেন।
লবণ পানি
লবণ প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে। আর জমতে দেয় না ব্যাক্টেরিয়া। প্রতিদিন অন্তত দু’বার ঈষদুষ্ণ লবণ পানিতে গার্গল বা কুলকুচি করলে দাঁত শিরশির করা থেকে আরাম পেতে পারেন। এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ পানিতে আধা চামচ লবণ মিশিয়ে অন্তত ৩০ সেকেন্ড সেই পানি মুখে রাখতে হবে।
হলুদ
এটি যেভাবে ব্যবহার করবেন: এক টেবিল চামচ হলুদ, আধা চামচ সর্ষের তেল এবং আধা চামচ লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে সেই মিশ্রণ দাঁতে লাগালে কমতে পারে দাঁত শিরশির করার মতো সমস্যা। হলুদে থাকে কারকিউমিন নামক এক উপাদান। এই উপাদানটি জীবাণুনাশক এবং প্রদাহনাশক হিসেবে বেশ কার্যকরও। প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও এটির ব্যবহার ছিলো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org