দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ স্বাদে মিষ্টি না হলেও এই ধরনের খাবারে শর্করার পরিমাণ অনেকটাই থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একেবারেই নিরাপদ নয়।
দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস রয়েছে। তাই খাওয়া-দাওয়ার উপর বিশেষ নজরও দিতে হয়। তবে, কাজে বের হওয়ার পূর্বে বা কাজ হতে ফিরে সব সময় রান্না করতে ইচ্ছেও করে না বলে ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ দিয়ে কাজ চালিয়ে নেন অনেকেই। আবার পেটও ভরে, রাঁধতেও খুব বেশি সময়ও লাগে না। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, ডায়াবেটিকদের ক্ষেত্রে এই ধরনের নুডলস ক্ষতিকর। স্বাদে মিষ্টি না হলেও এই ধরনের খাবারে শর্করার পরিমাণ অনেকটা বেশি। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একেবারেই নিরাপদ নয়। তাহলে কী নুডলস খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে? কী বলেন চিকিৎসকরা? আজ সেটিই জানবো আমরা।
নুডলস কিংবা চাউমিন তৈরির মূল উপকরণই হলো ময়দা। ময়দা প্রকৃতপক্ষে কার্বোহাইড্রেট। এই কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে শর্করাও রয়েছে। আর ময়দার মধ্যে রয়েছে স্টার্চ, যা খুব সহজে হজম হয়ে যায়। তাই নুডলস খেলে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। অবশ্য, সব সংস্থার ইনস্ট্যান্ট নুডলসে যে একই রকম কার্বোহাইড্রেট কিংবা শর্করা থাকবে, তেমনটি অবশ্য নয়। তবে, এই ধরনের নুডলস সাধারণত কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেকটা বেশিই থাকে। ময়দায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও বেশি। তাই পুষ্টিবিদরা বলেছেন, ময়দার বদলে হোলগ্রেন আটা কিংবা দানাশস্যের আটা দিয়ে তৈরি নুডলস খাওয়া যেতেই পারে। এই খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ার কারণে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ভয়ও থাকে না। নেটপ্রভাবী ও পুষ্টিবিদ পূজা শাহ ভাবে বলেছেন, এক কাপ নুডলসে সাধারণ যে পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে, তা একটি রুটির দ্বিগুণ ও এক কাপ ভাতের দেড় গুণ।
তাহলে নুডলসের পরিবর্তে অন্য কী খাওয়া যেতে পারে?
কেবলমাত্র নুডলসই নয়, ময়দা দিয়ে তৈরি যে কোনও ধরনের খাবারে কার্বোহাইড্রেট ও শর্করা থাকে। তাই একান্ত যদি সেইসব খাবার খেতেই হয়, তাহলে অবশ্যই পরিমাণের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। সারাদিনে আপনি অন্য যে সব খাবার খাচ্ছেন, তার মধ্যে কতোটা কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা দরকার। তবেই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org