দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইতিমধ্যেই হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও তার সহযাত্রীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু এই মৃত্যু নিয়ে পুরো বিশ্বজুড়ে নানা রকম সমালোচনা শুরু হয়েছে।
এদিকে মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পরে ব্যাপক তল্লাশি এবং উদ্ধার অভিযান সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। রেড ক্রিসেন্ট প্রধান রাষ্ট্রীয় টিভিকে জানান, আমরা নিহতদের মরদেহ তাবরিজে স্থানান্তরের কাজ শুরু করেছি। উদ্ধার কার্যক্রমও শেষ হয়েছে।
হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্ট রাইসি ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রাহমাতি ও এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেমসহ মোট ৯ জন ছিলেন। আজারবাইজানে একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজেই ফিরছিলেন তারা।
এদিকে বিশ্বজুড়ে এই মৃত্যু নিয়ে নানা সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই এটিকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না। যদিও ইরান এখন পর্যন্ত কিভাবে মৃত্যু হয়েছে সেটি নিশ্চিত করেনি। এখনও কেবলমাত্র দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছে না। অনেকেই মনে করছেন যেহেতু ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরান ব্যাপকভাবে সোচ্চার হয়ে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ইতিমধ্যেই পাল্টা হামলাও চালিয়েছে। তাই এই মৃত্যু স্বাভাবিক কোনো দুর্ঘটনা হিসেবে তারা দেখতে নারাজ। তারা মনে করছেন এটি হত্যাও হতে পারে। তবে সময়ই বলে দেবে আসলে কি ঘটেছিলো। কারণ এতো বড় একটি শক্তিধর রাষ্ট্রের প্রধান কিভাবে এমন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় হেলিকপ্টারে উঠলেন সেটি ভাববার বিষয়। তবে ঘটনা যায়ই ঘটে থাকুক না কেনো তদন্তের মাধ্যমে সত্য বেরিয়ে আসুক সেটিই সবার প্রত্যাশা।
উল্লেখ্য,আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দেশ দুটির যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে ৩টি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারাও। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ের মধ্যে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অপর দু’টি হেলিকপ্টার নিরাপদেই গন্তব্যে পৌঁছায়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org