দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিটের রস দিয়েও তৈরি করতে পারেন মুখের মাস্ক। সপ্তাহে এক থেকে দু’দিন বিটের মাস্ক ব্যবহারে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান যেমনিভাবে হবে, তেমনিভাবে ঝকঝকে হবে মুখ।
ঝকঝকে ত্বক, বলিরেখাহীন ত্বক কে চায় না বলুন? সুন্দর, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত চর্চা। সেইসঙ্গে ত্বকের ধরন এবং সমস্যা অনুযায়ী সপ্তাহে এক থেকে দু’দিন ফেস মাস্ক ব্যবহার করলে বেশ কাজ হবে।
তবে বাজারের সাধারণ প্রসাধনীর বদলে বাজারের সব্জিতেও ভরসা রাখতে পারেন। শীতের সব্জি বিট এখন বছরভর পাওয়া যায়। বিটের রস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর বিট বলিরেখা দূর করতে, দাগছোপ কমাতে সাহায্য করে। এটি চোখের তলায় কালচে দাগও দূর করে। ঠোঁটের কালচে দাগ দূর হতে পারে বিটের গুণেও। ত্বক আর্দ্র রাখতে, প্রদাহ কমাতে এবং ত্বকের ছোটখাটো সংক্রমণ রুখতেও এটি বেশ কার্যকর। বিট দিয়ে তৈরি ৫টি মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন ত্বকে ঔজ্জ্বলতা আনতে। তবে মাস্ক ব্যবহারের পূর্বে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত।
বিটের রস, দুধ এবং অলিভ অয়েল
১ টেবিল চামচ বিটের রস, ২ টেবিল চামচ দুধ, ২-৩ ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন। বিটের মাস্কটি ১০ মিনিট রেখে ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ত্বককে উজ্জ্বল করার পাশাপাশি আর্দ্রতা জোগাবে।
বিটের রস এবং মুলতানি মাটি
গরম কিংবা বর্ষার সময় উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় কারও কারও ত্বক তেলতেলে হয়ে যায়। কারও আবার ত্বক তৈলাক্তও হয়। ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে ৩ টেবিল চামচ বিটের রস ভালো করে মিশিয়ে মুখে মাখতে হবে। মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে হালকা হাতে মাসাজ করে ওই মাস্কটি তুলে ফেলতে হবে। ত্বক শুষ্ক লাগলে অবশ্য ময়েশ্চারাইজ়ার মেখে নিতে পারেন।
বিটের রস এবং টক দই
৩ টেবিল চামচ টক দইয়ের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ বিটের রস মিশিয়ে মুখে মাখতে পারেন। ১০-১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালোকরে ধুয়ে নিতে হবে। শুষ্ক ত্বক কিংবা সাধারণ ত্বকে এই মাস্ক ভালো কাজ করবে। রুক্ষতা দূর করতে এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাবে মুখ কালো হয়ে গেলে এই ফেস মাস্কটি বিশেষ কার্যকর।
বিটের রস এবং চালের গুঁড়ো
২ টেবিল চামচ চালের গুঁড়োর সঙ্গে ৩ চামচ বিটের রস ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। ত্বকের জন্য বিটের রস যেমন উপকারী, ঠিক তেমনি চালের গুঁড়োরও অনেক গুণ। দুই উপাদানের মিশ্রণ ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফেরাতেও সাহায্য করবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২ মিনিট হালকা হাতে মাসাজ করে রেখে দিন। মিনিট দশেক পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো
২ চা চামচ কমলালেবুর খোসার গুঁড়োর সঙ্গে ২ টেবিল চামচ বিটের রস মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে নিতে হবে। মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
তবে ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে শুধু রূপচর্চায় নয়, পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণও অত্যন্ত জরুরি। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে, বলিরেখা কমাতে এবং ত্বক টান টান করে তুলতে সাহায্য করে। বিটের রস মাখার পাশাপাশি, সেই রসে চুমুক দিলে তা শরীরের জন্যও ভালো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org