দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘জাতীয় নিরাপত্তা এবং গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ১০ জন অবসরপ্রাপ্ত শীর্ষ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা।
সোমবার প্রকাশিত এক চিঠিতে এই কর্মকর্তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে ওই ঝুঁকির প্রেক্ষাপটে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেন।
ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবারের নির্বাচনি দৌড়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের অবস্থান করছেন। জনমত জরিপগুলোতে তেমনই দেখা যাচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমান্ডার ইন চীফ হিসাবে দায়িত্ব পালনের জন্য একমাত্র যোগ্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে হ্যারিসের নামই উল্লেখ করেন তারা।
চিঠিটিতে সই করা এইসব সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ল্যারি এলিস এবং অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মাইকেল স্মিথসহ অন্যরা।
তারা সামরিক সদস্যদের নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপমানকর মন্তব্য ও আফগানিস্তান হতে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পূর্বে তার ‘বিশৃঙ্খল দৃষ্টিভঙ্গির” কথা তুলে ধরেছেন।
তালেবানের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা একটি চুক্তির কথাও তারা উল্লেখ করেন, যে চুক্তির কারণে এই গোষ্ঠীর ৫ হাজার যোদ্ধা পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরেছে।
সাবেক এই সামরিক কর্মকর্তারা হ্যারিস সম্পর্কে লিখেছেন, তিনি (কমলা হ্যারিস) হোয়াইট হাউজের সিচুয়েশন রুম বা আন্তর্জাতিক অঙ্গন- যে কোনওখানেই রাশিয়ার ইউক্রেইন আগ্রাসন থেকে শুরু করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের সঙ্গে উত্তেজনার মতো জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সবচেয়ে কঠিন বিষয়গুলো সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রেও নিজের দক্ষতা দেখান।
সেনা কর্মকর্তারা বলেছেন যে, হ্যারিস এই নির্বাচনি দৌড়ে সর্বত্তোম ও একমাত্র প্রেসিডেন্ট প্রার্থী যিনি আমাদের কমান্ডার ইন চীফ হিসাবে কাজ করারও যোগ্য। চিঠিটি এক্সে পোস্ট করেছে কমলা হ্যারিসের প্রচারশিবির।
কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দিয়ে সামরিক কর্মকর্তাদের সই করা চিঠিটি প্রকাশের একই সময় হ্যারিসের প্রচার শিবির ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার মঙ্গলবার রাতের বিতর্কের আগে দিয়ে একটি নতুন বিজ্ঞাপনও প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি তার প্রশাসনে সেরা মানুষদেরও নিয়ে আসবেন। এখন সেই সাবেক কর্মকর্তারাই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন!
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org