দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে হঠাৎ করেই জোয়ারের খালের পানিতে ভেসে আসে একটি টর্পেডো । খালের জোয়ারের পানির সঙ্গে এমন জিনিস ভেসে আসার খবর পেয়ে শত শত স্থানীয় মানুষ এটি দেখতে ভিড় জমান ওই খালের পাশে। স্থানীয়রা আগে কখনও এমন জিনিস দেখেননি।
যেহেতু আগে কখনও দেখেননি তাই কারও কারও মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করতেও দেখা যায়। ওই এলাকার কেও কেও হয়তো জানতেও পারেন এটি সম্পর্কে। এছাড়াও যারা টর্পেডো সম্পর্কে জানেন না, চলুন ওই টর্পেডো কী? টর্পেডো কীভাবে কাজ করে? সেটি আজ জেনে নেওয়া যাক।
টর্পেডো কী?
মূলত এটি একটি যুদ্ধ জাহাজ ধ্বংসকারী বিষ্ফোরক কিংবা বোমা। ভেঙে বলতে গেলে টর্পেডো হবে পানির তলদেশে চলমান এক ধরণের অস্ত্র যা পানির তলদেশে কিংবা পানির উপর হতে অর্থাৎ উভয় পক্ষ দিয়ে লক্ষবস্তুতে নিক্ষেপ করা সম্ভব। যার ভিতরে সমুদ্রযান ধ্বংস করার জন্য বিস্ফোরকও মজুদ থাকে।
এই টর্পেডো কাজ করে কীভাবে?
টর্পেডো এমন একটি গাইডেড বিস্ফোরক যা পানির নিচ দিয়ে অতিক্রম করে লক্ষ ভেদে আঘাত হানতে পারে। টর্পেডো ছোড়ার জন্য সাধারণত রকেট ইন্জ্ঞিন বা জেট ইন্জ্ঞিন ব্যবহার হয়ে থাকে। একটি টর্পেডো সাধারণত ১০-২০ মিনিট চলতে পারে।কিছু মাইলের মধ্যে এটি লক্ষ্যভেদে আঘাত হানতে সক্ষম। কোন টর্পেডোই এটার ফুল রেঞ্জ ব্যবহার করা যায়না।
তাহলে টর্পেডোর কাজ কী?
# টর্পেডো হচ্ছে মূলত এক ধরনের সেলফ প্রোপেলড মিসাইল, যেটি পানির নিচ দিয়ে গিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
# আর এর ভেতরে সমুদ্রযান ধ্বংসের জন্য বিস্ফোরক ওয়ারহেডও যুক্ত থাকে। লক্ষ্যবস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষ হলে বা কাছাকাছি আসলেই এটি বিস্ফোরিত হয়।
# যে কোনো বড় জাহাজ ধ্বংস করে দেওয়ার কাজে টর্পেডো ব্যবহার হয়ে থাকে। সাধারণত বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনী এটি ব্যবহার করে।
# পূর্বে এটিকে অটোমোটিভ, অটোমোবাইল কিংবা ফিশ টর্পেডো বলা হতো। এটি “ফিশ” কিংবা মাছ নামেও পরিচিত ছিলো।
# “টর্পেডো” নামটি মূলত বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রের জন্যই প্রযোজ্য ছিলো। যার অধিকাংশই বর্তমানে “মাইন” নামেই পরিচিত।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org