দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আবারও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একটি স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল বাহিনী। বর্বর এই হামলায় কমপক্ষে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
এছাড়াও বেইত হানুনে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩ জন নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলেছে যে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জাবালিয়া প্রিপারেটরি স্কুলকে লক্ষ্য করে ‘আর্টিলারি গোলাবর্ষণ’ করে এবং এতে কমপক্ষে ১০ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে ওয়াফা নিউজ এজেন্সিও রিপোর্ট করেছে।
জানা যায়, উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে অবস্থিত এই স্কুলটি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছিল।
ওয়াফা বলেছে, উত্তর গাজার আরেক শহর বেইত হানুনের কেন্দ্রস্থলে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বোমা হামলা করা হয়েছে। এতে তিনজন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে যে, ১৭ দিন আগে ইসরায়েল উত্তর গাজায় হামলা শুরু করার পর হতে সেখানে কমপক্ষে ৬৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এদিকে পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, সোমবার উত্তর গাজা উপত্যকায় তীব্র ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হন বলে মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে।
জাবালিয়ায় বিরকেট আবু রশিদের কাছে বাস্তুচ্যুত বেসামরিকদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলকে লক্ষ্য করে কামানের গোলাবর্ষণ করা হয়, এতে ৭ জন নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে একটি মেডিকেল সূত্র জানায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জাতিসংঘ পরিচালিত ক্রিজম স্কুলে ইসরায়েলি সামরিক নির্দেশেই বেসামরিক লোকরা জড়ো হয়েছিল। সেইসময় একটি ইসরায়েলি ট্যাংক তাদের দিকে শেল নিক্ষেপ করে।
এছাড়াও উত্তর গাজার জাবালিয়া আল-বালাদে পানি সংগ্রহের সময় বেসামরিক নাগরিকদের একটি দলকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৬ জন নিহত হন বলে প্যারামেডিকরা জানিয়েছেন।
অপরদিকে জাবালিয়া ক্যাম্পের আল-ইয়েমেন আল-সাঈদ হাসপাতালের কাছে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় আরও ৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলেও আরেকটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org