দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শিশু কেনাবেচার খবর আমরা মাঝে-মধ্যেই দেখে থাকি। কিন্তু এই নির্মম ও অমানবিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত থাকলেও শিশু পাচার হচ্ছে প্রায় অবাধে। এমনই এক দুর্ভেদ্য কাহিনী আজকের প্রতিবেদনে।
শিশু পাচারের এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতে। সেখানে গোপনে শিশু বিক্রির কার্যক্রম চললেও দেশটির নবগঠিত তেলেঙ্গানা রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে শিশু পাচারের ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রকাশ্যেই। সম্প্রতি এনডিটিভির এক প্রতিবেদক ও শিশু অধিকার কমিশনের কয়েক সদস্য শিশু কেনাবেচার বিষয়টি অনুসন্ধান করেন। তারা নলগোঁদা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে ক্রয়ের জন্য শিশুর খোঁজ করে তারা। মাত্র আধাবেলা ঘুরেই তারা ক্রয়ের জন্য শিশু পেয়ে যান। সরকারচালিত একটি হোমে বিক্রিতব্য এসব মেয়ে শিশুর কথা জানানো হয় তাদের। তারা দু’দিন পর ২ মাস বয়সী ভবানী নামে এক শিশুর খোঁজ পান। তাদের জানান যে, ৩০ হাজার রুপির বিনিময়ে ভবানীকে কিনতে পারবেন তারা। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়।
তারা জানান, দেবরাকোন্দা নামক স্থানে পৌঁছানোর পর স্থানীয় অটোরিকশা চালক তাদের ওই শিশুগৃহে নিয়ে যান। সেখানকার এক মধ্যস্থতাকারী বলেন, আপনারা এখান হতে পছন্দমতো শিশু কিনতে পারবেন। সেখানে আরও ৮/১০ জন মেয়েশিশু ছিল। আবার এখানে থাকা শিশুদের পছন্দ না হলে হোয়াটসঅ্যাপ বা ই-মেইলের মাধ্যমেও তাদের নিকট অন্য শিশুদের ছবি পাঠানো হবে বলে জানানো হয়। আবার এসব শিশু কেনাবেচার জন্য রয়েছে দালালও।
এসব দালালদের একজন কামলি বাই জানান, ৩০ হাজার রুপির শিশু কেনার জন্য সব মিলিয়ে ৫০ হাজার রুপি লাগবে। পরে ওই পরিমাণ অর্থ দিয়ে শিশু ভবানীকে কেনে ওই প্রতিনিধি দলটি। শিশু কেনাবেচার খবর জানতে গিয়ে প্রতিনিধি দলটি আরও জানতে পারে, ছেলে শিশুর আশায় যেসব দম্পতির অনেক মেয়েশিশু হয়েছে, তারা নাকি তাদের মেয়ে শিশু এখানে বিক্রি করে দেন। আবার এখানে অনাকাঙ্খিতভাবে জন্ম নেওয়া অনেক শিশুও নাকি রয়েছে। তবে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ মাহমুদ আলী বলেছেন, শিশু পাচারের বিষয়টিতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিষয়টি তদন্তে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। আধুনিক সমাজে প্রায় প্রকাশ্যে শিশু পাচারের এমন লোমহর্ষক ঘটনা প্রকাশ পাওয়ায় ব্যাপক সমালোচনায় পড়েছেন রাজ্যের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান।