দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাত কী কখনও এতো বড় হতে পারে? তাও আবার মরুভূমির প্রান্তরে! মরুভূমির মধ্যে এমন এক দানবীয় হাত দেখা গেছে! এর রহস্য কী? জেনে নিন।
আচমকা এই হাতটি দেখলে মনে হতে পারে, কোনও ফিউচারিস্টিক সিনেমার সেট-এ আপনি প্রবেশ করেছেন। তবে আসলে এটি তা নয়, এই হাতটি একান্তভাবেই সত্য।!
চিলের আটাকামা মরুভূমি পৃথিবীর অন্যতম শুষ্ক অঞ্চল হিসেবেই যার খ্যাতি। এই মরুভূমির এক খাঁ খাঁ প্রান্তরে হঠাৎই চোখে পড়বে এক দানবীয় হাত। মরুর বালি ফুঁড়ে উঠে আসা হাতটি যেনো আপনাকে থামতে বলছে। আচমকা দেখলে মনে হতেই পারে, কোনও ফিউচারিস্টিক সিনেমার সেট-এ প্রবেশ করেছেন।
‘মানো দেল দেসিয়ার্তো’ কিংবা ‘হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট’ আসলে ৩৬ ফুট উঁচু একটি ভাস্কর্য। চিলের প্রখ্যাত ভাস্কর মারিও ইররাজাবাল ১৯৯২ সালে এটি তৈরি করেন। দেখতে যত বিদঘুটেই হোক না কেনো, কাওকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্য বা চমক তৈরির অভিপ্রায় আসলে ইররাজাবালের কখনও ছিল না। তিনি এই ভাস্কর্যটি তৈরি করেন একেবারেই এক দার্শনিক ভাবনা হতে।
মহাবিশ্বের কাছে মানুষের ক্ষুদ্রতাকে বোঝানোর জন্যই হয়তো ইররাজাবাল এই হাতটি তৈরি করেছেন। দিকচিহ্নহীন মরুর প্রান্তরে এই হাতটি মানুষকে যেনো জানান দিচ্ছে তার ক্ষণস্থায়িত্ব, জানিয়ে দিচ্ছে মহাপ্রকৃতির সামনে তার অসহায় অবস্থান আসলে কি। সেইসঙ্গে এটি যেনো থামতে বলে অন্যায়কে এবং একাকীত্বকে এমন কি নির্যাতনকেও! এই সুবিশাল ভাস্কর্যটিকে দেখলে মনে হতে পারে, এটি মরুর বালু দ্বারাই নির্মিত হয়েছে।
তবে এটি এক সুবিশাল লৌহকাঠামোর উপরেই স্থিত হয়েছে। মরুভূমির আবহাওয়া যাতে এই ভাস্কর্যটির কোনও ক্ষতি করতে না-পারে, তার ব্যবস্থাও নিয়েছিলেন এই শিল্পী ইররাজাবাল।
বর্তমানে এই ভাস্কর্য ‘হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট’ বিশ্বের অন্যতম বিস্ময় হিসেবেই পরিগণিত হচ্ছে। বছরের যে কোনও সময় বিপুল পরিমাণ পর্যটক ভিড় জমান এই ভাস্কর্য দেখতে। নিকটবর্তী শহর আন্তোফোগোস্তা থেকে প্যান-আমেরিকান হাইওয়ের পথে এই ভাস্কর্যটির অবস্থান।
উল্লেখ্য, শিল্পী ইররাজাবাল ‘লা মানো’ নামে আরও একটি হাত নির্মাণ করেছিলেন। সেটি মরুভূমির হাতের চাইতে বয়সে ১০ বছরের বড়, অর্থাৎ এর ঠিক ১০ বছর পূর্বে তৈরি করেছিলেন সেই হাতটি। এটি ইনস্টলড রয়েছে চিলেরই পুন্তা দেল এস্তে’র সমুদ্রতটে। এটিও এক বিখ্যাত শিল্পকর্ম।