The Dhaka Times Desk সন্তানের মৃত্যুকে মেনে নিতে না পেরে এক মা তার নিজের জীবন দিতে গিয়েছিলেন।
মা এবং সন্তানের সম্পর্ক পৃথিবীতে এক নিবীড় সম্পর্ক। এই সম্পর্কের সঙ্গে অন্য কোন কারো সম্পর্কের তুলনা কখনও চলে না। তেমনই একজন মা সাংবাদিক নাজনীন আখতার তন্বীও তা সইতে পারেননি। তাই একমাত্র মেয়ে চন্দ্রমুখীর মৃত্যুর সংবাদ সইতে না পেরে ৫ তলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর কল্যাণপুরে। তবে ৫ তলা ভবনের নিচে বৈদ্যুতিক খাম্বায় বিভিন্ন অপারেটরের ক্যাবলে জড়িয়ে নিচে পড়ার কারণে নাজনীন আখতারের মাথায় আঘাত লাগেনি বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, দৈনিক জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নাজনীন আখতার তন্বী ও গাজী টেলিভিশনের চিফ রিপোর্টার রকিবুল ইসলাম মুকুল দম্পতির একমাত্র কন্যা চন্দ্রমুখী (৫) জণ্ডিসে আক্রান্ত হয়ে গত শুক্রবার থেকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি ছিল। চন্দ্রমুখীর যকৃৎ কাজ না করায় দুদিন আগে তাকে একই হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সার্পোটে রাখা হয়। গতকাল বিকাল ৩টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল সন্ধ্যার পর মীরপুর কবরস্থানে চন্দ্রমুখীর লাশ দাফন করা হয়েছে।
ওই সাংবাদিকের ঘনিষ্ঠজনরা জানান, মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে বিকাল ৫টায় নাজনীন কল্যাণপুরের বাসায় ফিরে যান। আর মুকুল তখন হাসপাতালেই ছিলেন। বাসায় গিয়ে মেয়ের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে নাজনীন বাসার ৫ তলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তার সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নাজনীন আখতারের মাথায় আঘাত না লাগলেও বুকের হাড়, ডান হাতের কনুই ও কোমরে ফাটল ধরেছে। এরপরও তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, নাজনীন আখতারের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বাবা মৃত আজমল হক খান। থাকেন কল্যাণপুর ১১ নম্বর সড়কের ২০/১ নম্বর ৫ তলা ভবনের ৪র্থ তলায়।
কন্যার মৃত্যুশোকে এমন কাণ্ড ঘটাবেন বাসার অন্য কেও বুঝতেও পারেননি। পৃথিবীতে মা এবং সন্তানের সম্পর্ক এমন গভীর যা কেও কখনও বাইরে থেকে হয়তো অতটা বুঝতে পারেন না। তাই তো কবি গানের কথায় লিখেছেন, ‘তোর মায়ের চেয়ে আপন কেহ নাই যে দুনিয়া, মায়ের নাম মুখে নিলে শান্তি পাওয়া যায়…’।
মায়েরা এভাবেই সন্তানকে আগলে রাখেন