Ishwardi representative প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈশ্বরদীতে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন।
আজ সকাল ১১টা ২১ মিনিটে পদ্মার তীর ঘেষা রূপপুরে এই প্রকল্পের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় রাশিয়ান ফেডারেশনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও রাশিয়ার আনবিক শক্তি কর্পোরেশন রোসাটমের মহা পরিচালক সের্গেই ভি কিরিয়েনকোও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ডিলু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের জন্য ‘দীর্ঘদিন ধরে জমি দিয়ে বসে থাকা’ রূপপুরবাসীরও অপেক্ষার অবসান হলো বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রূপপুর প্রকল্পের ক্ষেত্রে সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে নিরাপত্তা নিয়ে।
“এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা- আইএইএর সব নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করেছি। স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই কর্তৃপক্ষ আইএইএর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। নাকশাও সেভাবে করা হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমর দৃঢ় বিশ্বাস, রাশিয়া আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সাশ্রয়ী মূল্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রেও রাশিয়া সব ধরনের সহযোগিতা করবে। তারা নিজেরাই বর্জ্য ফেরত নিয়ে যাবে, এতে আমাদের দেশের কোনো ক্ষতি করবে না – এটা রাশিয়া নিশ্চিত করেছে। ” কাজেই এ নিয়ে কোনো ‘দুশ্চিন্তা নেই’ বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে করে রূপপুরে নামার পর সরাসরি প্রকল্প মাঠে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। ভিত্তি ফলক উন্মোচনের পর তিনি মুনাজাতে অংশ নেন।
রাশিয়া থেকে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত সর্বাধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি দিয়ে রূপপুরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। নিরাপত্তা ও প্রযুক্তির মানের ওপর নির্ভর করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের প্রতিটি স্থাপনে ১৫০ থেকে ২০০ কোটি ডলার ব্যয় হতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই নির্মাণ ব্যয়ের ১০ শতাংশের অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার, বাকি ৯০ শতাংশ রাশিয়া ঋণ হিসাবে দেবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে পরামাণু কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার পর ১৯৬৩ সালে প্রস্তাবিত ১২টি এলাকার মধ্য থেকে বেছে নেয়া হয় রূপপুরকে। বার বার সরকার পরিবর্তনের ফলে এই প্রকল্পটি হিমাগারে আটকে যায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেই এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যায়। যে কারণে দীর্ঘদিনের এই প্রকল্পটি অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে।
পরে প্রধানমন্ত্রী একটি বিশাল জনসভায় বক্তৃতা দেবেন।
এগিয়ে চলেছে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন পদ্মার তীর ঘেষা রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ- ছবি দি ঢাকা টাইমস্
প্রধানমন্ত্রীর আগমণ উপলক্ষে পুরো রূপপুর জুড়ে বিশাল বিশাল তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে- ছবি দি ঢাকা টাইমস্