The Dhaka Times Desk ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এখন অগ্নিদগ্ধদের হাহাকার। আবার পরিবারের সদস্যরাও নানা হতাশায় নিমজ্জিত।
ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত এসব অগ্নিদগ্ধদের পরিবার। অবরোধের আগুনে মাটি হয়ে গেছে এসব পরিবারের আনন্দ। এলোমেলো হয়ে গেছে জীবনের সব পরিকল্পনা। পরিবারের সব সদস্যের মধ্যে এখন দুশ্চিন্তা আতঙ্ক আর হতাশা ভর করেছে। বাসের পেছনের সিটে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আগুনে পুড়ে দগ্ধ হওয়া আলমগীর এখন বার্ন ইউনিটে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। বার্ন ইউনিটে এখন শুধুই হাহাকার আর কেবল পচা গন্ধ। মানুষকে কেও এভাবে পুড়িয়ে মারতে পারে তা বিশ্বাস করা কঠিন। পরিবারের সদস্যরা সারাদিন বার্ন ইউনিটে ছোটাছুটি করছেন। জীবনের সব কিছুই যেনো তাদের কাছে এক অসহনীয় হয়ে পড়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে এখন বহু মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের ভবিষ্যত নিয়েও রয়েছে নানা আশংকা।
কুমিল্লায় অবরোধের আগুনে দগ্ধ অটোরিকশা চালক মো. রুবেল মিয়ার দুই পায়ের ব্যান্ডেজ খুলে নতুন করে দেওয়া হয়েছে। এক অটোরিকশা চালক সবেদ আলীর বাম হাতের পোড়া ক্ষত শুকাতে বেগ পেতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে সবেদ আলী আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তার বাম হাতটির চেতনা ফিরিয়ে আনতে। নিয়ম করে হাতের ব্যয়াম করছেন তিনি। এমন কতনা যুদ্ধ করতে হচ্ছে এসব অগ্নিদগ্ধ মানুষকে। আবার অনেকেই আছেন যাদের অবস্থা এখনও ভালো নয়। যাদের গলার নলিতে আগুনের তাপ লেগেছে তাদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। তাদের জীবনের নিশ্চয়তাও দিতে পারেননি ডাক্তাররা।
বার্ন ইউনিটে যারা ভর্তি আছেন তাদের অনেকেই খুবই গরীব। অনেকেই টাকার অভাবে ভালো-মন্দ খেতেও পান না। সরকারি খরচে চিকিৎসা হলেও বাসা থেকে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করতে যে খরচ লাগে তাদের সে সামর্থটুকও নেই। এভাবে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দোলাচালে শুরু হয়েছে তাদের এক যাত্রা। কেও জানেনা তাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে। কিন্তু তারপরও বেঁচে থাকতে হবে তাদের- বাঁচার তাগিদেই। পৃথিবীর এই অমোঘ নিয়ম কত দিন, কত মাস, কত বছর চলবে তা কেওই জানেনা।
উল্লেখ্য, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গতকাল পর্যন্ত নাশকতার আগুনে পোড়া ১২৩ জন বার্ন ইউনিটে এসেছেন। তাদের মধ্যে ৮১ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ভর্তি আছেন ৩০ জন। এদের মধ্যে আইসিইউতে আছেন ৫ জন। এই ৫ জনের মধ্যে ৪ জন শাহবাগে বাসে পেট্রল বোমা হামলায় দগ্ধ হয়েছিলেন। আগুনে পোড়া অন্তত ১২ জন এ পর্যন্ত মারা গেছেন।