The Dhaka Times Desk দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৫ জানুয়ারি। বিরোধী দল ছাড়াই সরকার নির্বাচন করতে যাচ্ছে। এমন এক পরিস্থিতিতে নির্বাচন বানচাল করতে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা বিভাগ। খবর চ্যানেল২৪।
দশম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আর মাত্র ১৩ দিন বাকি। সরকারের নির্বাচন করা এবং বিরোধীদের নির্বাচন বর্জনের কারণে দেশে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিরোধী দলের চলছে শুক্রবার বাদে প্রায় টানা হরতাল বা অবরোধ। সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল। অপরদিকে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২৬ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনত্তর ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনা মোতায়েন থাকবে। মূলত নির্বাচনের সময় যাতে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে সে জন্যেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে।
সরকারি দলের নির্বাচন করা এবং বিরোধী দলের নির্বাচন বর্জন এমন এক পরিস্থিতিতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এমনিতেই অচলাবস্থা। তারপরও রয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। এই বিচার শুরুর পর থেকে একের পর এক ঘটে যাচ্ছে নানা নাশকতার ঘটনা।
চ্যানেলের একটি খবরে বলা হয়েছে, নির্বাচন বানচাল করতে বৃহৎ একটি গোষ্ঠি তৎপর। নির্বাচন বানচাল করতে যে কোন ধরনের বড় কোন নাশকতা করা হতে পারে। চ্যানেলটির খবরে আরও বলা হয়, গোয়েন্দাদের কাছে এমন খবর আসার পর তারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন। ইতিমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থা বিশেষ বৈঠকও বসেছে। তারা করণীয় নির্ধারণ করতে আলোচনা করেছেন। তবে এ মুহূর্তে সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, নির্বাচন বানচালের করিকল্পনার মধ্যে ব্যালটবাক্সসহ নির্বাচনী সামগ্রী যারা পরিবহন করবেন তাদের ওপর হামলা হতে পারে এবং নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করছেন তাদেরও ওপরও হামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অপর একটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ‘জ্বালাও-পোড়াও থেকে সরে এসে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো খুন-খারাবিতে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। আর দেশের শীর্ষ নেতাদের নাম রয়েছে তাদের হত্যার হিটলিস্টে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতেই বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা আঁটছে বিভিন্ন অপরাধী গ্রুপ। তাদের রোধ করতে না পারলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা চেয়ে সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শতাধিক প্রার্থী ইসির কাছে আবেদন করেছেন। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, সম্প্রতি একই ধরনের নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে শুক্রবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে উপস্থাপিত গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরেক সংস্থার এক প্রতিবেদনের উল্লেখ্য করে ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, ‘সারা দেশে অপরাধী, অবৈধ অস্ত্রধারীদের দৌরাৎদ্য বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কা রয়েছে; যার প্রভাব পড়বে জাতীয় নির্বাচনে। এ অবস্থায় সারা দেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু হচ্ছে আজ।নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার আড়াই শতাধিক পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয় আরেকটি গোয়েন্দা সংস্থা। তাতে দুই পৃষ্ঠায় ৬টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। নির্বাচনী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত কুচক্রী মহলের নেতাদের নজরদারিতে রাখার সুপারিশ করা হয় এতে। সেই সঙ্গে সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্রের নামসহ তালিকাও তুলে ধরা হয়। গোয়েন্দা ও পুলিশের এমন আশঙ্কাজনক খবরে ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্ট মহলকে।’
এমন এক পরিস্থিতিতে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত নানা আশংকায় রয়েছেন দেশের সাধারণ মানুষ। তবে নির্বাচন হলেও কি পরিস্থিতি দাঁড়াবে তা নিয়েও রয়েছে নানা আশঙ্কা। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচন না করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে সকলের ধারণা।