Categories: general

Novel: “Introduction”

The Dhaka Times always publishes articles keeping in mind the pros and cons of the readers. Our readers have been requesting for publication of stories and novels for a long time. A novel has been started today. If you like it, please write. So let's go read the novel. Today's novel is "Introduction".

one

In the beginning of the story, it is not said that the name must be a pseudonym, so after thinking about it, I finally chose a pseudonym. That would be good. It will maintain the interest of the name.

Related Posts

A boy named Pseudo, dreams of growing up to be super man as a child and sometimes thinking of spider man sometimes shakti man sometimes robin hood sometimes or hercules. He thought he would acquire some divine power and save everyone from danger like a comic book hero.

সবাই তাকে দেখে ছুটে আসবে, মেয়েরা ঘিরে ধরবে। ছেলেটা কি পাঁজি রে ভাই … ছোট বেলাতেই মেয়ে নিয়ে চিন্তা করছে। তবে তার পিছনে ওই টিভির সিরিয়ালগুলো সবথেকে দায়ি ছিল। যত দিন পার হতে থাকে ততই ছেলেটার মন থেকে সুপার হিরো হবার ইচ্ছে ঝাপসা হয়ে যেতে থাকে। তার বাবা মা তাকে বোঝাচ্ছে তাকে বড় হয়ে হয় কসাই সুলভ ডাক্তার অথবা তা না হলে পাখি হয়ে আকাশে উড়তে হবে মানে পাইলট হতে হবে, আর যদি কিছুই না পারে তা হলে শেষমেশ অন্যের মাথায় হাড়ী ভাঙ্গা ব্যবসায়ী। যত দিন যায় ছেলেটা ভাবে এত বড় মাপের মানুষ সে কিভাবে হবে। এত পড়াশুনা তাকে দিয়ে হয়তো বা হবে না। এমনিতেই যেদিন ছদ্মের পরীক্ষার রেজাল্ট দেয় সেদিন সে কম হলেও হাজার বার আল্লাহ্‌কে ডাকে আর ভাবে এইবার আল্লাহ্‌ যেন তাকে কমপক্ষে সব বিষয়ে পাশ করিয়ে দেয়। আর ইংরেজী ও গনিতেতো ৩৩ থেকে ৪০ পেলেই মহা খুশি। কিন্তু প্রকৃতি বড়ই নিষ্ঠুর। সব সময় তার এ চাওয়া পূরণ হয় না। আর পূরণ না হলেই বাসায় গিয়ে মায়ের হাতে অমানুষিক বেঁধর মার। আর রাতে বাবা আসলে চোরের মত গিয়ে রেজাল্ট কার্ডে স্বাক্ষর নেয়া। শুধু এখানেই শেষ নয়, সাথে হাজার ধরনের প্রশ্নের মুখমুখি। বাবা বলে এর থেকে কেউ বেশী নম্বর পায়নি? ছদ্ম উত্তর দেয়, যারা পেয়েছে তারা সবাই স্যার এর কাছে প্রাইভেট পরে। তাছাড়াও এবার নাকি স্যাররা পরীক্ষার খাতা দেখতে ভুল করেছে। যা সে প্রতিবার বলে থাকে। অনেকেই নাকি অভিযোগ দিয়েছে এই ব্যাপারে।আর তার বাবাও প্রতিবার উত্তর দেয়, তোর পরীক্ষার খাতা তো প্রতি বার শিক্ষকরা দেখতে ভুল করে কালে গিয়ে হেডমাস্টারকে বলব তোর খাতা যেন এখন থেকে হয় সে নিজে দেখবে আর না হলে তকে দিয়ে দেখাবে। বাবা আরও বলে ওরা ভাত খায় তুই খাস না, ওরা যা টাকা বেতন দেয় তোঁর জন্য সমপরিমাণ টাকা দেয়া হয়। তোঁর পিছনে কি টাকা কম খরচ হয়, তোকে কি জামা কাপর ছাড়া রাখি। আর এরকম কতকি শক্ত কথা ছদ্মকে হজম করতে হয়। ছদ্ম এ সব কথার মানেই খুজে পায়না। রেজাল্টের সাথে ভাতের বা খরচের কি সম্পর্ক। শেষমেশ ছেলেটা শেষমেশ দিশা হারিয়ে দোষ চাপায় গৃহশিক্ষকের উপর। সে নাকি ঠিক মত পড়াতে পারে না। অতঃপর বেচারা শিক্ষকের ওপর অবশিষ্ট ধকল টুকু যায়। শুধু তাই না সাথে টিউশনিটাও। বাপরে বাপ ছেলেটা পুচকে অথচ কী সব বানিয়ে আবল তাবল বলে। নিজের তো কপাল পুরে সাথে আর এক জনকেও সাথে নেয়। তাদের ক্লাসে যখন নতুন কোন মেয়ে আসে তখন ক্লাসের কিছু দাদা টাইপের ছেলেদের সাথে ভাব হয়ে যায়। আর তা দেখে ছদ্ম মনে মনে ভাবে ইশ যদি মেয়ে গুলো এসে তার সাথে বন্ধুত্ব করতো। তাকে নিয়ে যদি তারা সারাদিন মেতে থাকতো। আবার তাদের দিকে কেউ তাকালে বা বিরক্ত করলে সে হিন্দি ছবির হিরোদের মত মারামারি করবে ও অবশেষে মেয়ে গুলএশে তাকে জড়িয়ে ধরবে। তার মানে এইবার তার ছবির নায়ক হবার কথা চিন্তা করছে। ভালই কমিক্স থেকে এইবার ছবিতে। কিন্তু তা তো আর হয় না বরং তার সাথের বন্ধু পলাশ কে নিয়ে সে বিভিন্ন অশ্লিশ স্বপ্ন দেখতে থাকে আর তাকিয়ে থাকে মেয়েদের শরীরের এদিক ওদিকে। দেখে আর হাসে দুজনে মিলে। আবার দেখবেও না বা কেন, মেয়ে গুলোর হয় বুকের ব্রা বের হয়ে আছে অথবা জামাটা এত ফিটিংস বানিয়েছে যে পুরো শরীরের আকৃতি দেখা যাচ্ছে। তাছাড়াও ওই পুচকে ছেলে আরও ভাবে ওই মেয়েগুলোর মধ্যে কেউ যদি তার গার্ল ফ্রেন্ড হত, যদি তার একটা মোটরসাইকেল থাকতো। দুজন একসাথে মোটরসাইকেলে করে বৃষ্টিতে ভিজত আর মেয়েটি পিছন থেকে তাকে জড়িয়ে বসে থাকতো। শুধু তাই নয় সে এটাও অনুভব করে, প্রতি ব্রেকে ব্রেকে মেয়েটির নরম শরীরের পরশ তার শরীরকে শিহরিত করবে। বাপরে বাপ ছেলেটাই পুরোপুরি ইঁচড়েপাকা। ছেলেটির স্কুল জীবন শেষ হবার আগে অবশ্য সে গোটাকয়েক বান্ধবী জুটিয়ে ফেলেছে। আর না জুটেও কিভাবে হবে এত পুরাই মিশন ইম্পসিবল প্রোজেক্ট। তবে বন্ধু হবার পর সে আর তাদের দিকে খারাপ ভাবে তাকাত না বরং বিভিন্ন বখাটে ছেলেদের হাত থেকে বুদ্ধি দিয়ে তাদের বাঁচিয়ে দিত। কারন শারীরিক ভাবে সে তখন অনেকটা দুর্বল অন্যদের থেকে। তাই হিন্দি ছবির হিরো হবার ইচ্ছেটা আর পূরণ হত না। শুধু এখানেই নয় তাদের স্কুলের বাড়ির কাজও করে দিত সে। কাউকে কাউকে নিয়ে একসাথে শিক্ষকের বাসায় পড়তে যেত। এমনকি ওই মেয়েদের মায়ের কাছে সে এতটা বিশ্বাসের পাত্র হয়ে যায় যে ছদ্মের সাথে তাদের মেয়েকে তারা সবজায়গায় যেতে দিতো। এ দেখে আবার অন্য ছেলেরা খুব হিংসা করতো। মেয়ে গুলো আবার স্কুলের বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ গান বা অভিনয় করতো। তখন আবার সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বদলতে ওই মেয়েদের নতুন করে কিছু ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যেত। তা দেখে ছদ্ম আবার চিন্তায় পরে যেত, যে তার দিন বোধহয় শেষ হয়ে এলো। না না এত দিনের পরিশ্রম কি আর বৃথা হতে দেয়া যায় এত সহজে। প্রথমে সে চিন্তা করল গান গাবে। অডিশনও দিতে গেল। কিন্তু তার গান শুনে স্কুলের শিক্ষক সর্ব প্রথম তাকে দলীয় সংগীতের দল থেকে বাদ দিল। সে যে কি অপমান। লজ্জায় তার থ্যাবড়া খাওয়া নাখটা পুরোপুরি কাটা গেল। শেষমেশ তার আগ্রহ দেখে তার শিক্ষক তাকে প্রক্সি হিসেবে রাখল। যদি কেউ না আসে শুধু সেই জায়গা পূরণের জন্য সে ব্যবহৃত হত। যা তার কাছে ছিল আগের থেকেও লজ্জার। ভাগ্যের কি নিষ্ঠুর পরিহাস। আকাশের দিকে তাকিয়ে সে ভাবে সৃষ্টিকর্তা তাকে বোধ হয় কোন গুণীই দেয় নি। হলনা তার শিল্পী হওয়া। কাছের বন্ধু পলাশ তার দুঃখ দেখে তাকে বলল চল আমরা একসাথে অভিনয় করি। এইবার তার মাথায় আবার ভূত চাপল অভিনেতা হবার। ছদ্ম চিন্তা করল না এবার তাকে অভিনেতা হতেই হবে। না হলে আর শেষ রক্ষা নেই। অর্থাৎ এইবার হিরো থেকে অভিনেতা হবার শখ হল তার। সেই অসীম প্রচেষ্টা তার সফল হল। সৃষ্টিকর্তা বোধহয় তারদিকে এইবার মুখতুলে তাকালো। স্কুলে অভিনয় করে সে ভালই নাম যশ আর খ্যতি কামালো।
তখন সে ভাবল হয়তো বা অভিনয়টা তাকে দিয়ে হবে। এমনি ভাবে চলতে থাকে ছেলেটার শৈশব কাল আর মাঝে মাঝে ছোট খাটো ঝড় ঝাপটাতো আছেই ……

two

ছদ্ম এইবার কোনরকম এস এস সি পাশ করে ভর্তি হল কলেজে। স্কুল জীবনে সে পড়াশুনায় ভাল না হলেও কলেজে উঠে সে এই বিষয়ে পুরোপুরি সচেতন। কারন এখন সে কিছুটা বুঝতে শিখেছে। সে উপলদ্ধি করতে পেরেছে তার পক্ষে ওই ডাক্তার বা পাইলট হওয়া হবে না। তবে ব্যবসায়ী হওয়া যাবে কিন্তু রক্তচোষা বা ভেজাল মেশানোকারি ব্যবসায়ী নয়, সৎ ব্যবসায়ী। আর তা না হলে প্রাইভেট কোন মাল্টিন্যাশনাল প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যাংক এর একটা ভাল পোস্টে চাকুরী। এই লক্ষে আগাতে থাকে সে। ছেলেটার কলেজে পা দেবার পর থেকেই মহান সৃষ্টিকর্তা তার পক্ষে থেকে যায়। তাই তার নাম যশ খ্যতি কোনটাই কমতি থাকে না। যদিও কলেজের সব থেকে ভাল ছাত্র সে নয় কিন্তু শিক্ষক, শিক্ষিকা, বন্ধু, বান্ধবী সবার কাছে সে বেশ পরিচিত। বেটা ছেলেটা কলেজের প্রধান শিক্ষকে পর্যন্ত পটিয়ে ফেলেছে। ভালই দিন কাটছিল তার। তবে এঁর মাঝে সে কিছুটা সময় এঁর জন্য একটা হোঁচট খেলো। আর তা হল কৈশোর কালের প্রেম। ছদ্মের চোখে তখন অফুরন্ত নিষ্পাপ এক ভালবাসার ঝড় প্রতিনিয়ত বৈতে লাগল। মেয়েটাকে সে শুধু দূর থেকে দেখেই যেত। কখন কাছে গিয়ে কথা বলত না। কারন ছদ্মের স্কুল জীবনের দর্শনের থেকে এখন তার দর্শন একটু অন্য রকম। সেই লুকিয়ে দেখা বা স্বপ্নে তাকে নিয়ে ঘুরেবেড়ানো কোনটাই এখন তার আর হয় না। কেউ যদি তার সাথে আগ্রহ নিয়ে কথা না বলত সেও তার কাছে যেতনা কথা বলার জন্য। তাই দূর থেকেই তার প্রেমের ভোমর পোকাটা ঘোরাঘুরি করতো। কখন মধু খেতে যেত না। কিন্তু প্রকৃতির লীলা খেলার বাহিরে কার যাওয়া সাধ্য নেই। ছদ্ম কলেজের হিসাববিজ্ঞান শিক্ষকের কাছে ব্যচে প্রাইভেট পড়ত। ওই মেয়টি পড়ত একই শিক্ষকের কাছে তবে ব্যাচটি ছিল আলাদা। ছদ্মের সাথে কপাল গুনে তার দুই একদিন দেখা হত যেদিন কিনা তাদের শিক্ষক দুইটি ব্যচকে এক সাথে পড়াত। আর সেই দিন সে একদিনের জন্য ব্যচের সেরা ছাত্র হয়ে যেত। আর চুপিচুপি সে মেয়েটির দিকে নির্বাক ভাবে তাকিয়ে থাকতো। ইতি মধ্যে তার কয়েক জন কাছের বন্ধু বান্ধব টের পেলো তার এই চুপটি করে থাকা ভোমর পোকাটির খবর। কিন্তু ওই বলেছিলাম সৃষ্টিকর্তা এবার তার সাথে। মেয়েটি কি যেন একটা ঝামেলা হল আর তার ফলে সে তার ব্যচ থেকে ছদ্মের ব্যচে চলে আসল। ছদ্ম ব্যাপারটা জানত না। আবার মেয়েটির বাসার পথ আর ছদ্মের বাসার পথ এক পথেই ছিল। দুজনেই বাসে আসা যাওয়া করতো। তাই ছদ্ম সেখানে দেখত, কোনোদিন তার আর মেয়েটির যাবার বাস এক হয় কিনা। কিন্তু না এই অনুপাতটি ছিল একেবারেই নগণ্য। প্রতিদিনের মত একদিন সে হিসাববিজ্ঞান পড়ার জন্য শিক্ষকের বাসাই যাচ্ছিল। আর মাঝপথে চিন্তা করছে ইস মেয়েটির সাথে যদি তার কমপক্ষেও বন্ধুত্বটা হত। তাহলে কমপক্ষে তার এই ছটফটানিটা কমে যেত। ভাবতে ভাবতে সে শিক্ষকের বাসায় চলে আসে। পড়ার কক্ষে গিয়ে সে থমকে যায়। হয়ে যায় নির্বাক নিষ্প্রাণ। তার শরীরের হৃদযন্ত্রটি মনে হয় কিছু সময়ের জন্য বিরতি নিল। ছদ্ম ভাবে একি সত্যি না স্বপ্ন, নাকি চোখের ভ্রম। হঠাৎ করে পিছন থেকে তার শিক্ষক এসে বলে কিরে বেটা দারিয়ে আছিস কেন। ছদ্ম থতমত খেয়ে বলে জী স্যার এইতো বসছি। ছেলেটির থমকে যাবার কারন ছিল সে ঢুকেই দেখতে পায় তার স্বপ্নের মধু যুক্ত ফুলটি মানে ওই মেয়েটি বসে আছে। তাও আবার একা কারন তখন কেউ আসেনি। ছদ্ম চুপটি করে মেয়েটির পাশে গিয়ে বসে। মাথার ওপরে পাখা ঘুরছে তবুও সে বাষ্পীয় তরল পদার্থের মত ঘেমে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকার পর সে সিদ্ধান্ত নিল না এভাবে বসে থাকলে হবে না। এবার তাকে কথা বলতে হবে। আর এটাই উৎকৃষ্ট সময়। ছদ্ম মেঘের মত ঘুড় ঘুড় আওয়াজ করে বলে তুমি না অন্য ব্যচে পড়তে। আজ হঠাৎ এই ব্যচে। মেয়েটি উত্তর দিল ওই সময় সে অন্য আরেক জন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়বে। ছদ্মের মনে প্রেমের ঘণ্টা একবারে ছুটির ঘণ্টার থেকেও জোরে জোরে বাজতে থাকে। মনে মনে ভাবে যাক ভালই হল। এভাবে প্রথম দিনের প্রথম কথা থেকে চলতে থাকে তাদের মধ্যে দিনের পর দিন অবিরাম কথা। সেই আবার সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টি … একদিন শিক্ষক ছদ্মকে বলল তুমি মেয়েটিকে একটু হিসাববিজ্ঞান পড়িও তো। ও একটু দুর্বল কিছু বিষয়ে। মেয়েটি কে বলে দিল তুমি আবশর সময়ে ছদ্মের সাথে হিসাববিজ্ঞান নিয়ে বসবে। এ কথা শুনে ছদ্মের খুশি ঈদের খুশির থেকে বেশী ছিল। তারপর থেকে সে আর ওই মেয়েটি মাঝে মাঝে কলেজ ছুটির পর হিসাববিজ্ঞানের বদলতে এক সাথে বসে থাকতো। পড়াশুনার পাশাপাশি দুই একটা ব্যক্তিগত কথা চলতো। সে সময় ছদ্ম তাকে বলে যে দিন তাকে সে প্রথম দেখে তখন তার গায়ের পোশাক কি ছিল কোন রঙের ছিল মেয়েটিকে সে কোথায় দেখেছিল। ছদ্মের এ কথা শুনে মেয়েটি একটু অবাক হয়েছিল। মেয়েটি ভাবছে অন্যরা সাধারণত শুধু মেয়দের মুখটি মনে রাখে আর ও পোশাক থেকে শুরু করে সবকিছু মনে রেখেছে। দুজনের মধ্যে মোবাইল নম্বর দেয়া নেয়া হয়। মোবাইল নম্বর দেয়ানেয়ার কারন ছিল পড়াশুনার সহযোগিতার জন্য কিন্তু সেটা রাজনীতিবিদদের মত জনগনের টাকা মেরে খাবার জন্য একটা রাস্তার উন্নয়নের নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার মত ব্যপার। অর্থাৎ তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল রাতে কথা বলা ও সুযোগ হলে একজনের মন অন্য জন হাতিয়ে নেয়া। এ ভাবে চলতো তাদের মধ্যে অপ্রকাশিত প্রেম কাহিনী, যদি কিনা তাদের মধ্যে প্রবেশ না করতো স্কুল জীবনের মত ক্লাসে থাকা কিছু দাদা। এলাকার এক গুন্ডা মাস্তান টাইপের ছেলে নাম তার রাজু পড়ত তাদের সাথে। সেই রাজুর পছন্দ হয়ে গেল মেয়েটিকে। এবং রাজু জানতে পারল ছদ্মের সাথে তার কিছু একটা চলছে। আর কি … হঠাৎ ছদ্মের মোবাইলে একটা ফোন কল আসল। ওই পার থেকে কে যেন বলছে তুই কে তোর কত বড় সাহস তুই আমার প্রেমিকার সাথে প্রেম করিস। তুই কলেজে আসলে তোর হাত পা ভেঙ্গে দেবো। আরও বলল কাল কলেজে এসে ওদের সাথে দেখা করতে। ছদ্ম রীতিমত থমকে গেল। সে এমনিতেই এ সব ঝুটঝামেলা থেকে দূরে থাকতে চায়। কি আর করার পরদিন গিয়ে দেখা করল রাজুর সাথে। রাজুকে গিয়ে সে বোঝাল মেয়েটির সাথে আসলে তার কিছু না শুধু মাত্র স্যার বলেছে বলে সে তাকে পড়ায়। রাজু মেনেও নিল তার কথাটি। কিন্তু তাতে তার ছুটি নেই। সে জোর করে মেয়েটির মোবাইল নাম্বার নিয়ে গেল ছদ্মের কাছ থেকে। আর বলে দিল যদি আর কোনোদিন ও মেয়েটির সাথে কথা বলার চেষ্টা করে তাহলে ছদ্মের কলেজে আসা বন্ধ। কি আর করার এই সময়ের জন্য সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টি থেকে কিছুটা বঞ্চিত হল। ভরাক্লান্ত মন নিয়ে সে ফেরত আসল। নিজের মনের মধ্যে থাকা বাগানের লাল ফুলটিকে ছিরে আর একজনকে দিয়ে আসল। তার বন্ধুরা তাকে বোঝাতে চেষ্টা করলো এটা কোন ব্যপার না। এরকম হতেই পারে। সে যেন মন খারাপ না করে। তার কিছু দিন পর সে দেখতে পেলো ওই মেয়েটি রাজুর মোটরসাইকেলে পিছে করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ দৃশ দেখার সাথে সাথে সাধারণত যে কোন প্রেমিকের মন ভেঙে খান খান হয়ে যাবার কথা। কিন্তু ছদ্মের তা হল না। সে ভেবে দেখল যাক ভালই হয়েছে। তার পিছন থেকে ঝামেলাটা দূর হয়েছে। মানে তাকে আর কলেজ ছুটির পর অপেক্ষা করতে হবে না। দেরি করে বাড়িতে ফিরতে হবে না। আর ভবিষ্যতে সে আরও ভাল মেয়ে পাবে। তার মানে হল পুরো ব্যপারটা আঙ্গুর ফল টকের মত একটা ব্যপার। এই হল আসলেই কৈশোর কালের প্রেম। এই জন্য গুরুজনেরা বলে প্রেমের একটা বয়স আছে। হিন্দু ধর্মের বিয়েরীতির মত সাতপাক ঘুরে অবশেষে পড়াশুনায় আবার মনোযোগ দিল। দেখতে দেখতে কলেজের শেষ দিন চলে আসল। সেই শেষ দিনে সে আরেকটি বাজিমাত দিল। আর তা হল সেই অভিনয়। চারজন ছেলে চারজন মেয়ে মিলে তারা একটি ছোট নাটিকা করলো। আর তাতে ছদ্মের অভিনয় দেখে তার বন্ধুরা সহ কলেজের শিক্ষকরা অনেক প্রশংসা করলো। আবার সেই মুহূর্তে ছদ্ম ভাবছে এই কাজটা মনে হয় তাকে দিয়ে হবে। সে যদি চেষ্টা করে তা হলে ভবিষ্যতে বড় মাপের একজন অভিনেতা হতে পারবে। কিছুদিন পর এইচ.এস.সি পরীক্ষা হল। তার কিছুদিন পর ফলাফল ও ঘোষণা হল। কিন্তু ছদ্মের মনটা খারাপ হয়ে গেল। সে অল্পের জন্য এ+ পায়নি। এভাবে প্রেম ভালবাসা আর পড়াশুনায় শেষ হল ছদ্মের কলেজ জীবন। শেষমেশ এই জীবনে সে ভালই হিরো হয়ে ছিল তার কলেজে। শুধু মাত্র রাজুর ব্যপারটা ছাড়া। এখন তার আসল ভাবনার সময় চলে এসেছে। সে আসলে জীবনে কি হতে চায়। কিভাবে তাকে দেখতে চায় সে নিজেকে আগামী দশ বছর পর।

three

ছদ্মের জীবনে নতুন মোড় আসা শুরু করলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর। সে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনটাতে সবার মত সে ও খুব উচ্ছ্বাসিত ছিল। কলেজের এত গুলো পরিচিত মুখ রেখে হটাৎ করে অপরিচিত মানুষের দেশে এসে সে কিন্তু মোটেও ইতস্তবোধ করেনি। বরং তার নতুন রাজ্যকে সে ভালই উপভোগ করছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস, তাও আবার নিচ্ছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বেচারা পুরো ঘেমে অস্থির। সেই অস্থিরতার মাঝে তাকে একটু সান্ত্বনা পরশ দিল একটি রূপবতী কন্যা। যাকে দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম তার ভাল লাগে। পাঠকদের বোঝার জন্য বলতে হচ্ছে এরকম হোঁচট মানুষ হাঁটতে গিয়ে প্রতিনিয়ত খায় কিন্তু সবজায়গায় আমরা থামি না দেখাযাক সে আসলে কোথায় থামে। সবার মত তারও কিছুদিন পর অনেক বন্ধু বান্ধব হয়ে যায়। সবকিছু নতুন নতুন তাই উত্তেজনাটাও বেশী। সারাদিন ধরে চলে আড্ডা হৈ চৈ আর উল্লাস। এভাবে কেটে যায় তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম কিছু দিন। এখানে প্রথম ধাক্কাটা খায় যেদিন তার প্রথম সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশ হয়। সারাদিন মজামাস্তি করতে গিয়ে ফলাফলের বারোটা বাজিয়ে দেয়। সাথে সাথে তার মনে পরে যায় ওই স্কুলের ফলাফল প্রকাশের দিন গুলোর কথা। আর সাথে বেধড়ক মার আর বাবার প্রশ্ন। সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় না এ ফলাফল বাসায় জানানো যাবে না। সে ধীরস্তির হয়ে সিদ্ধান্ত নিল না তাকে কমপক্ষে পড়াশুনাটা ভাল ভাবে করতে হবে। এরই মধ্যে তার পরিচয় হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাইয়ের সাথে যে কিনা একটি নাট্য দলের সাথে সংযুক্ত ছিল। তারি সাথে কথায় কথায় ছদ্ম তার অভিনয় এর আগ্রহের কথাটি জানায়। একদিন বড় ভাইটি তাকে নিয়ে যায় তাদের সেই দলে। নাট্য দলটির কর্মকাণ্ড ছদ্মের খুব ভাল লেগে যায়। সে সিদ্ধান্ত ন্যয় তাদের সাথে যোগদান করবে। বাসায় গিয়ে তার ইচ্ছার কথাটি জানায়। সাথে সাথে তার বাবা ছদ্মের গালে একটি চড় বসিয়ে দেয়। তাকে বলে অভিনয় করবে আর কোন কাজ পায় না। আমি সারাদিন খেটে মরি আর উনি এসেছে আমোদ ফুর্তি করতে। পড়াশুনা করে চাকরী বাকরি কিছু একটা করবে, আর তা না উনি নাটক করবে। ঠিক মত খাওদাও তো, তাই টের পাওনা। যদি একবেলা খাওয়া দি তা হলে টের পাবা। কত ধানে কত চাল। যা গিয়ে পড়তে বস। ছদ্ম সেই স্কুল জীবনের মত এবার ও তার ইচ্ছার সাথে ভাতের সম্পর্ক কি তা বুজতে পারে না। খুব অভিমান করে তার বাবার সাথে। তার বদলতে তিন দিন পর্যন্ত খাবারে কোন হাত দেয়নি সে। ছদ্মের মা ছদ্মের বাবাকে ব্যপারটা জানায়। চতুর্থ দিন নাস্তার টেবিলে বসে ছদ্মের বাবা ছদ্মকে ডাক দেয়। ছদ্মেকে পাশের চেয়ারে বসিয়ে তার মাথা হাত বুলিয়ে বলে বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমি পড়াশুনা করতে গিয়েছ। তুমি দেখ আমি কত কষ্ট করে সংসার চালাই। এই সকালে বের হব আবার সেই রাতে আসব। আমি চাই তুমি ঠিক মত পড়াশুনা করে অনেক বড় হও। এই সংসারে আরেকটু ভাতের পরিমান বাড়ুক। সে দিন ছদ্মের আর বুজতে বাকি নেই কেন সবকিছুর সাথে ভাত জড়িত। সে আরও বুজতে পারে তার অভিমান করাটা ঠিক হয় নি। সাথে সাথে সে তার বাবার হাত ধরে কেঁদে দেয়। পাশে তার মা ও দাঁড়ানো। সবকিছু মিলে এক আবেগময় পরিস্থিতি। ছদ্ম তার বাবার সাথে বসেই সকালে নাস্তাটা খেয়ে নিল। দুপুরে ছদ্মের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস। সে প্রতিদিনের মত তৈরি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দ্যেশে রওনা দিল। বাস টার্মিনালে গিয়ে বাসে ওঠার পর ভাড়া দিতে গিয়ে দেখে তার মানিব্যাগে অতিরিক্ত একহাজার টাকার একটি নোট। ছদ্মের বুজতে বাকি নেই অতিরিক্ত টাকাটা কথা থেকে আসল। বাসে বসে তার চোখ ছল ছল হয়ে গেল। আর মনে মনে ভাবতে লাগল সবাই জন্ম দাতাকে বাবা বলে ডাকে। আসলেই সব জন্মদাতা বাবা হতে পারে না। বাবা হতে হলে শুধু তাকে বাবাই হতে হয়। যেটা তার বাবা আজ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ওই দিন তার মুখে সারাদিন শুধু বাবা কথাটি ছিল। তার বন্ধুরা বুজতে পেরেছিল কিছু একটা আজ হয়েছে। তবে ছদ্ম তার এই অভিমানের গল্পটি কাউকে বলেনি। ছদ্ম ফোন করে তার বড় ভাইয়ের সাথে কথা বলে ও আজ বিকেলে ক্লাস শেষে দেখা করে। পরে সন্ধ্যায় তার ভাইের সাথে যায় ওই নাট্য দলে। নিজের নামটি লেখায় দলের খাতায়। দলটিতে নাম লেখাতে হলে নিবন্ধন চাঁদা ছিল একহাজার টাকা আর মাসিক চাঁদা ছিল দুইশত টাকা। ছদ্ম একহাজার টাকা আপাতত জমা দেয়। দলটির প্রধান একে একে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় ছদ্ম কে। তারপর ছদ্মকে অনুরধ করা হয় তার বিষয়ে কিছু বলার জন্য। ছদ্ম কি বলবে নিজের বিষয়ে ভেবে কূল কিনারা পায় না। অবশেষে তার অভিমানের পুরো গল্পটি বেঁছে নেয় বলার জন্য। তার গল্প শুনে দলটির প্রধান তার মঞ্চ নাটকের প্রতি আগ্রহ দেখে খুব খুশি হয়। শধু তাই নয় তার নিবন্ধন চাঁদার পাঁচশত টাকা মওকুফ করে দেয় ও দুইশত করে তিন মাসের চাঁদা ছয়শত টাকা আসে যা কিনা বাকি পাঁচশত টাকা দিয়ে অগ্রিম হিসেবে রাখা হয়, ছয়শত টাকার বিনিময়ে। যাতে আরও একশত টাকা তার কম খরচ হল। এই কথা শুনে ছদ্মের বুজতে বাকি নেই যে দলটির সবাই খুবিই আন্তরিক। শুরু হয়ে গেল ছদ্মের সেই সুপার হিরো থেকে বাস্তবে হিরো হবার যাত্রা। এভাবেই সবকিছু মিলিয়ে কেটে যায় অনেক দিন। একসময় তার মনে লুকিয়ে থাকা হিরো হবার স্বপ্নটি প্রবল হয়ে ওঠে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাট্য পরিচালক ও ছবির পরিচালকদের কাছে তার আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু সে নতুন বলে তাকে কেউ সহজে সুযোগ দিতে চায় না। তবে দু একটি ছোট নাটকে ছোট ছোট কাজ করা তার শুরু হয়। তার পড়াশুনাটাও প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। যাবার আগে আবার সেই হোঁচট … দেখা হয়ে গেল এমন একটি মেয়ের সাথে যাকে সে অনন্ত কাল থেকে খুজে এসেছে, যার জন্য বোধ হয় এত দিন তার মনের বাড়ির আঙ্গিনা মরুভুমির মত শুষ্ক ছিল, সে এবার এলো একরাশ বৃষ্টি দিয়ে দিয়ে তার মনের আঙ্গিনা ভিজিয়ে কর্দযুক্ত করে দিতে। সেই অপরূপা, পলকহীন চোখে তাকিয়ে থাকা মেয়েটি হল নাবিলা। তাদের এলাকায় নতুন এসেছে। এক দেখাতেই সে মেয়েটিকে অফুরন্ত ভালবেসে ফেলে। মেয়েটির বারান্দা থেকে ছদ্মের বারান্দা সরাসরি দেখা যায়। প্রতি বিকেলে মেয়েটি বারান্দায় এসে বসে থাকে। ছদ্ম তার সমস্ত কাজ ফেলে বসে থাকে তার বারান্দায় শুধু মেয়েটিকে দেখার জন্য। প্রথম কয়েক দিন এভাবে চলে যায়। ছদ্ম তারপর চেষ্টা করে তার সাথে ইশারায় কথা বলার জন্য। সেই ছোট কালের অবুজ প্রেমের দুষ্টমি তাকে আবার টানে। সে মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে হাসে হাত নারে। নিজের ফোন নাম্বারটা দেয়ার চেষ্টা করে। ছদ্ম দেখতে পায় তার ছটফট দেখে মেয়েটি হেসে কুটিকুটি। ছদ্ম ভাবে মেয়েটির বোধ হয় তাকে ভালই লেগেছে। শুরু হয়ে গেল প্রতিদিন এই ছটফটানি দেখানোর পর্ব। কই তার হিরো হবার শখ। কোন কিছুই এখন আর তার মাথায় নেই। তার দিন রাত বলতে এখন ওই মেয়ে। মেয়েটি রোজ তার মাকে নিয়ে একসাথে বারান্দায় আসে। এই মার আসার প্রথম কয়েকদিন ছদ্ম মনে করেছিল তার পাগলামি দেখানোর জন্য বোধ হয় মা কে সাথে করে এনেছে। কিন্তু না মা কিছুক্ষণ পর চলে যায় আর ছদ্মের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। এভাবে কেটে যায় আরও কয়েক দিন। কিন্তু মেয়েটা শুধু হাসেই। আর কিছু করে না। বাসা থেকেও খুব বোধ হয় একটা বের হয় না। কারন ছদ্ম তাকে কখনো বারেন্দা ছাড়া রাস্তায় দেখেনি। এই সময় গুলোর মধ্যে মেয়েটি ছদ্মের পুরো শরীর জুড়ে ছড়িয়ে গিয়েছে। ছদ্ম এমন একটা মানসিক ভাবে এমন একটা যায়গায় চলে এসেছে যদি মেয়েটি তাকে ভাল না বাসে তাহলে তার বেচে থাকা বৃথা হয়ে যাবে। সেই অন্তিম প্রহর একদিন চলে এলো। মেয়েটিকে দেখতে পেলো একা একা তার বাসার নীচে দারিয়ে আছে। ছদ্ম হুমড়ি খেয়ে বাসায় পরে থাকা ছিদ্র বিশিষ্ট গেঞ্জি ও কোঁচকানো পায়জামা পরে দিল দৌড়। এমনকি পায়ে জুতটি পড়তে সে ভুলে গিয়েছে। তখনও মেয়েটি দারিয়ে আছে। ছদ্ম মেয়েটির পাশে গিয়ে দাড়ায়। কিন্তু ততোক্ষণে মেয়েটির মা চলে আসে। মেয়েটির মা আসার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত ছদ্মের স্বপ্ন গুলো অনেক রঙিন ছিল। সেই রঙিন স্বপ্ন এক মুহূর্তেই ঝাপসা সাদাকালো ছবিতে পরিণত হল। মেয়েটির মা মেয়টিকে তার সামনে দিয়ে হাত ধরে চলে নিয়ে গেল আর মেয়েটির অন্য হাতে ছিল একটি এল্মুনিয়ামের লাঠি। মানে এই অপরূপা মেয়েটির ধরণীর সমস্ত আলো থেকে বঞ্চিত। সকালের কোমল রোদের আলো, রাতের পূর্ণিমার আলো, দুটি শরীরের মিলনের ফলে যে লাভা নির্গত হয় তা কোনটিই ওই মেয়েট দেখতে পারে না। সাথে সাথে ছদ্ম খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে সিংহের মত গর্জন দিয়ে বলে খোদা তোমার একি পরিহাস। কি খেলা তুমি আমার সাথে খেলতে চাও। যাকে নিয়ে কল্পনায় এতটা পথ আমি হেটে এলাম। তার সাথে কিনা তুমি এমন করলে। কেন তোমার এই ধরণীর কিছুটা আলো তুমি তার চোখে দিতে। ছেলেটি এক রাশ কষ্ট নিয়ে পরাজিত সৈনিকের মত ঘরে ফিরে যায়। ঘরে প্রবেশ করার সময় ছদ্মের মা দেখতে পায় তার ছেলেকে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে অনেক পথ পারি দিয়ে সে এখন ক্লান্ত দেহে বাড়ি ফিরেছে। তাই ছদ্মের মা ছদ্মকে জিজ্ঞাশ করে কি হয়েছে বাবা তোর? তোকে এমন লাগছে কেন দেখতে? ছদ্ম কোন কিছু না বলে ওর রুমে সরাসরি চলে যায় ও দরজা আটকিয়ে দেয়। সাথে সাথে বিছানায় গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পরে বালিশের ওপর। বালিশ কে শক্ত করে ধরে আছে সে। চোখ দুটো আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে আসে তার। হটাৎ করে কালমেঘের মত গুড় গুড় আওায়জ আসতে থাকে তার মুখ থেকে। চোখের কনে ইতিমধ্যে সকাল বেলায় জমে থাকা ঘাসের ওপর শিশির বিন্দুর মত পানি জমা হয়ে যায়। তার মনে হচ্ছিল তার প্রিয়তমাকে এ অবস্থায় দেখার আগে তার চোখের আলো যদি হারিয়ে যেত তাহলে তার এত কষ্ট হত না। এভাবেই সারাদিন পার হয়ে গেল। রাতে বাবা আসার পর ছদ্মের মা ছদ্মের বাবাকে সব কিছু খুলে বলেন। সব সোনার পর ছদ্মের বাবা ছদ্মকে ডাক দেয়। বাবার ডাক শুনে ছদ্ম দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসে। ছদ্মের কাছে কি হয়েছে জানতে চাইলে ছদ্ম এই বুড়ো বয়সে তার বাবাকে জড়িয়ে হাউ মাউ করে কেঁদে দেয়। তখনি ছদ্মের বাবা বুঝতে পেরেছিল নিশ্চয়ই ছদ্ম মানুষিক ভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছে। কিছুক্ষণ পর ছদ্ম সবকিছু খুলে বলল। সব সোনার পর ছদ্মের বাবা ছদ্মকে বললেন বাবা এই পৃথিবীতে শুধু ভালোবাসা আছে বলেই প্রতিদিনের সকালের সূর্য আজও মানুষকে টানে, শুধু ভালোবাসা আছে বলেই রোজ রাতের একি চাঁদ দেখতে এখনও আমাদের ভাল লাগে। শুধু ভালোবাসা আছে বলেই এখনও বাবুই পাখি হাড়ভাঙ্গা কষ্ট করে বাসাবাধে, শুধু ভালোবাসা আছে বলেই আজও নারীরা দশ মাস দশদিন পর প্রসবের ব্যথাকে সুখের মনে করে। শুধু এই শুধু ভালোবাসা আছে বলেই। ছদ্ম তার বাবার মুখে এমন কথা কোন সময় শোনেনি। সে একটু অবাক হয়ে ছিল তাই ছদ্ম সারারাত তার বাবার কথা বোঝার চেষ্টা করলো। রাতে একফোঁটা ঘুমায়নি ছদ্ম। সকাল বেলা বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিল সে। গোসল করে ফুলের দোকান থেকে একগুচ্ছ গোলাপ ফুল নিয়ে চলে যায় ওই মেয়েটির বাসায়। অর্থাৎ নাবিলার বাসায়। কলিংবেল বাজাতেই নাবিলার মা দরজাটি খুললেন। ছদ্ম তার পরিচয় দিল। নাবিলার মা ছদ্মকে ভেতরে বসতে বললেন। ছদ্ম ভিতরে গিয়ে দেখে তার প্রানের প্রিয়তমা নাবিলা শোফার ওপর বসে আছে। নাবিলার কাছে গিয়ে ছদ্ম কথা বলে। পরিচয় দেয় তার। আর প্রথমদিন হতে আজ পরজন্ত সব দিনের কথা খুলে বলে মেয়েটিকে। তার হাতের লাল গোলাপের তোড়াটি তুলে দেয় নাবিলার হাতে। ইতিমধ্যে নাবিলার মা ছদ্মের জন্য নাস্তা তৈরি করে নিয়ে আসে। এসে দেখতে পায় তার মেয়ের হাতে একগুচ্ছ লাল গোলাপ। নাবিলার মা এর বুঝতে বাকি নেই ছেলেটি কেন এখানে এসেছে। নাবিলার মা নাবিলাকে তার ঘরে রেখে আসে। আসার পর ছদ্ম তার ভালবাসার কথা খুলে বলে আরও বলে নাবিলা যে দেখতে পায় না তাও সে যানে। আর সব যেনে সে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সে নাবিলার পাশে সারা জীবনের জন্য থাকতে চায়। এমনকি এতে তার বাবা বা মায়ের কোন আপত্তি নেই। ছদ্মের সব কথা শুনে নাবিলার মায়ের চোখ থেকে পানি চলে আসে। ছদ্ম তাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করে। মেয়েটির মা ছদ্মকে বলল শুধু চোখে নয় ওর এই পৃথিবীতে বেচে থাকার আলো ধীরে ধীরে ফুরিয়ে আসছে। ওর ছোটকাল থেকেই ব্লাড ক্যন্সার। আর মাত্র কিছু দিন তার পর ওকে এই পৃথিবীর সব মায়া ত্যাগ করে চলে যেতে হবে। ছদ্ম পুরোপুরি থমকে যায়। আর ভাবে সৃষ্টিকর্তা বোধহয় পুরোপুরি তার ওপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু না এই মুহূর্তে সে কার কাছে হার মানবে না। সে যেহেতু নাবিলাকে ভালবেসেছে তার যাই হক না কেন সে একদিনের জন্য হক অথবা এক মিনিটের জন্য হক তার সাথেই থাকবে। সব সোনার পর ছদ্ম নাবিলার মাকে বলে সে নাবিলাকে বিয়ে করতে চায়। যতদিন ও আছে তার পাশে ছদ্ম ছায়া হয়ে থাকতে চায়। নাবিলা দরজার অপার থেকে সব শুনছে। ছদ্ম নাবিলার রুমে যেতে দেখে নাবিলা দরজার সাথে হেলান দিয়ে কাঁদছে। ছদ্মের মনে হচ্ছে এ জন্য চোখের পানি নয়, আকাশ ফেটে কোন জলধারা প্রপাত এই ধরণীর মাটিতে আছরে পরছে। সাথে সাথে জড়িয়ে ধরে নাবিলাকে। চুমু খায় তার কপালে। ছদ্ম প্রথম আকাশে উড়তে পারা একটি পাখির যে আনন্দ তা অনুভব করতে পারে। ছদ্মের এই সম্পর্কে তার বাবা মা একটুও বাধা দেয়নি। আসলে ছদ্ম জীবনের এই লিলাখেলায় এমন এক জায়গাই এসে দারিয়েছে, যে ছবির হিরো বা কমিক্স ছবির হিরো কোনটায় শেষমেশ তার হওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে এই বিধাতার নিষ্ঠুর খেলায় সে নাবিলার ভালবাসার হিরো ঠিকিই হতে পেরেছে।

# Author: Sharif Sajid Hussain. ( নিজের কথা ) —- আমি একজন সখের বসে লেখক। এই প্রথম একটি উপন্যাস লিখেছি। এতে হয়ত অনেক জায়গায় অনেক ভুলত্রুটি আছে। বাঙালি হলেও বাংলা ভাষায় হয়তো অনেক ভুল করছি। সবাইকে অনুরোধ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

This post was last modified on অক্টোবর ২১, ২০১৪ 12:18 pm

Staff reporter

Recent Posts

What the research says: Is taking an ice bath really good?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বরফপানিতে গোসল করা কী আদৌ ভালো? কেও কেও বলেন, শরীরে…

% days ago

Lemon water for weight loss needs to be mixed with a few other ingredients to get quick benefits

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ লেবুতে থাকা ফাইবারের কারণেই পেটভার হয়ে থাকে। অন্য কিছু…

% days ago

The smartphone will change the settings in the hands of the child

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজকাল ৮ থেকে ৮০ সবার হাতেই স্মার্টফোন। এর সুবিধা যেমন…

% days ago

Jovan-Tisha's new drama 'Couple of the Campus'

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান প্রজন্মের তারকা ফারহান আহমেদ জোভান এবং তানজিন তিশা জুটি…

% days ago

Over 1,000 Hamas fighters receiving treatment in Turkey: Erdogan

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন যে, ‘ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী…

% days ago

Rabbit is hidden in this picture: can you find it?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে ছবিটি আপনারা দেখছেন সেটি একটি জঙ্গলের রাস্তার। সেই রাস্তায়…

% days ago