Categories: Special article

The fear of missing out on the labor market in the Middle East, including Malaysia

Dhaka Times Report. দিনে দিনে আমাদের শ্রম বাজার সংকুচিত হয়ে আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব আমাদের শ্রম বাজার ছিল ব্যাপক। কিন্তু সামপ্রতিক সময়ে এই শ্রম বাজার ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত: বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দাভাব। দ্বিতীয়ত: রাজনৈতিক কারণেও শ্রম বাজার সংকুচিত হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এর একটা প্রভাব পড়েছে। কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। কারণ যুদ্ধাপরাধী যারা তাদের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক নিবিড়। তাই তারা নিজেদের অস্থিত্বের কথা ভাবতে গিয়ে দেশের কথা ভুলে যাবেন এটাই স্বাভাবিক। আর ঘটেছেও অনেকটা তাই। ভেতরের অনেক কথা জানা না থাকলেও বাইরে থেকেও এমন আভাস পাওয়া গেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় আনার কারণে সৌদি সরকার অনেকটায় অসহযোগিতা করছেন বলে অনেকেই মনে করছেন। যদিও বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার তা মনে করেন না। কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে স্বাভাবিক আইনে। এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই তা করা হচ্ছে যে কারণে এই নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা থাকার কথা নয়। তাছাড়া একটি দেশের আইন চলবে তার নিয়ম অনুযায়ী। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও চলছে আইনের স্বাভাবিক ধারায়। বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার প্রক্রিয়া চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। কোন বিশেষ আদালতে তড়িঘড়ি করে কোন বিচার চলছে না।

তবে শ্রম বাজার নিয়ে একেক জনের একেক মতবাদ রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ইরাক ও লিবিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার হাতছাড়া হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা, ‘সরকার টু সরকার পদ্ধতিতে জনশক্তি রফতানির ভ্রান্ত নীতি, কূটনৈতিক তৎপরতার অভাব এবং দ্বিমুখী নীতির ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। পাশাপাশি ব্যক্তি বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এসব দেশে জনশক্তি রফতানির অর্ডার বা চাহিদাপত্র সংগ্রহ করা হলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জনশক্তি রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ছাড়পত্র প্রদান না করায় জনশক্তির রফতানি সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ভিসা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ নতুন করে ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিবর্তে অন্য কোন দেশকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এতে একদিকে যেমন ভিসা পাওয়া ব্যক্তি বা তাদের পরিবারে হতাশা নেমে এসেছে অন্যদিকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ইরাকে জনশক্তি রফতানি বন্ধ রয়েছে। নিরাপত্তার অজুহাতে সে দেশে জনশক্তি রফতানির অনুমতি দিচ্ছে না ইরাকে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এমন অবস্থায় ব্যক্তি পর্যায়ে অথবা রিক্রুটিং এজেন্সির উদ্যোগে মাঝে মধ্যে কিছু ভিসা সংগ্রহ করে দুবাই হয়ে ইরাকে শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু ইরাকে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটু তৎপর হলেই সে দেশের শ্রমবাজার খুলে যেতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যের আরেক তেল সমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবে সরকারিভাবে ২০০৮ সালের ৮ মার্চ থেকে জনশক্তি রফতানি বন্ধ রয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরের মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করায় সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। ফলে শত চেষ্টা করেও সে দেশে জনশক্তি রফতানি শুরু করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ আরেক দেশ কুয়েত। এখানে বাংলাদেশের জন্য শ্রম বাজারের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ২০০৬ সালের অক্টোবর মাস থেকে সে দেশে জনশক্তি রফতানি বন্ধ রয়েছে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুয়েত সফরে গিয়ে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানির আহ্বান জানালে কুয়েত সরকার তাতে সম্মতি প্রদান করেন। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন তৎপরতা না থাকায় আজ অবধি সে দেশে জনশক্তি রফতানি সম্ভব হয়নি। কুয়েতে জনশক্তি রফতানির দ্বার উন্মোচিত হলে সেখানে দুই থেকে আড়াই লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতো বলে সূত্র জানায়। মুসলিম বিশ্বের আরেক সম্ভাবনাময় দেশ কাতার। কাতারের রাজধানী দোহায় আগামি বছরের নভেম্বরের শেষ নাগাদ বিশ্বজলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের ১৯৪ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা অংশ নেবেন। সুশীল সমাজ, পরিবেশবিদ, এনজিও কর্মীসহ প্রায় লক্ষাধিক লোক অংশ নেবেন এ সম্মেলনে। এ জন্য সেখানে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে। এসব কাজে বাংলাদেশের দুই থেকে তিন লাখ শ্রমিকের চাহিদা থাকলেও সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার অভাবে এই সম্ভাবনাকেও কাজে লাগানো যাচ্ছেনা।

একইভাবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে যাওয়া শ্রমিকদের একাংশ তাদের বেতন-ভাতা, থাকা-খাওয়া প্রভৃতি বিষয় নিয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ, অনশন ও আন্দোলন নিয়ে মিডিয়ায় নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় স্বপ্রণোদিত হয়ে ২০০৯ সালের মার্চ মাসে মালয়েশিয়ান সরকার বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়া বন্ধ করে দেয়। ওই সময় বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রফতানির জন্য আগের ইস্যু করা ৫৫ হাজার ভিসাও বাতিল করে দেয় মালয়েশিয়া সরকার। এমনি অবস্থায় সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি বিপুল অংকের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় গমনেচ্ছু ৫৫ হাজার বাংলাদেশী যেমন একদিকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় অন্যদিকে চরম হতাশায় নিমজ্জিত হয় তাদের পরিবার-পরিজন। সদ্য যুদ্ধ বন্ধ হওয়া দেশ লিবিয়ায় আগেও বাংলাদেশের শ্রমবাজারের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল। সেখানে প্রায় দু’লাখ জনশক্তি কর্মরত ছিল। কিন্তু যুদ্ধের কারণে বিগত বছরের মাঝামাঝি সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সে দেশে জনশক্তি রফতানি বন্ধ করে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু যুদ্ধ-পরবর্তী লিবিয়ার পুনর্গঠন, অবকাঠামো, ভবন ও রাস্তাঘাট নির্মাণ এবং উন্নয়নে নতুন করে প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ জনশক্তির চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাতে সরকার সে দেশে জনশক্তি রফতানিতে অনুমতি দিচ্ছে না। এ পর্যায়ে লিবিয়ায় ব্যক্তি এবং কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার কয়েক হাজার লোক নেয়ার জন্য ভিসা ইস্যু করলেও বাংলাদেশ সরকার তথা জনশক্তি রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং শ্রম ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এসব ভিসার অনুকূলে ছাড়পত্র দিচ্ছে না। এমনি অবস্থায় কয়েক হাজার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে।

এদিকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বার বার সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিকে চাপ দিচ্ছে এসব ভিসার অনুকূলে লোক পাঠাতে। একইভাবে ভিসাপ্রাপ্ত এসব শ্রমিক যথাসময়ে সে দেশে যেতে না পারায় একদিকে হতাশা অন্যদিকে আর্থিক ক্ষতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে । জনশক্তি রফতানির সঙ্গে জড়িত একাধিক সূত্র জানায়, সৌদি আরব, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে সরকারি মহল চাচ্ছে সে দেশের সঙ্গে ‘সরকার টু সরকার’ পদ্ধতিতে জনশক্তি রফতানি করতে। কিন্তু সরকার টু সরকার পদ্ধতিতে ওইসব দেশ জনশক্তি রফতানিতে আগ্রহী নয়। এ কারণেই বাংলাদেশীদের জন্য সম্ভাবনাময় এসব দেশের শ্রম বাজার হাতছাড়া হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এসব ব্যাপারে আলাপকালে বায়রার সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাসার জানান, সৌদি আরবে জনশক্তি রফতানির পথ সুগম করতে শ্রমমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সে দেশ সফর করছেন। আশা করা যাচ্ছে খুব শিগগির একটি ভালো ফল আসবে। তিনি বলেন, সরকার মুসলিম বিশ্বসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বেসরকারি খাতকে উৎসাহ প্রদান এবং সর্বোতভাবে সহযোগিতা দিলে এই সুযোগ কাজে লাগানো অসম্ভব কিছু নয়। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারের নিয়মিত মনিটরিংয়ের পাশাপাশি নজরদারি অব্যাহত রাখা দরকার বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

Related Posts

আলাপকালে শ্রম ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার মুসলিম বিশ্বই নয় সমগ্র বিশ্বের যেখানে যেখানে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে তা খতিয়ে দেখে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি বন্ধ হওয়া শ্রমবাজার পুনরায় খুলতে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করে বিদেশে লোক পাঠাতে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। তথ্য সূত্র: দৈনিক যুগান্তর।

This post was last modified on ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১২ 8:02 am

Staff reporter

Recent Posts

The old woman was beaten to death for not lending a packet of bidi!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক ব্যক্তি ধারে চেয়েছিলেন বিড়ি, তবে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান…

% days ago

A heart-wrenching landscape

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…

% days ago

Who is at higher risk of developing breast cancer? Can a change in habits prevent this disease?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হিসাববিহীন জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, প্রাত্যহিক বিভিন্ন বদভ্যাসই স্তন ক্যান্সার ডেকে…

% days ago

How to know your IP address

The Dhaka Times Desk Many internet users are completely unaware of their IP address.

% days ago

I want to sing a duet with Shreya Ghosal - Rizvi Wahid

The Dhaka Times Desk Rizvi Wahid - who is called the artist of love songs in Bengali modern songs...

% days ago

The number of donkeys in the country is the highest!

The Dhaka Times Desk World Donkey Day was celebrated recently. The word 'donkey' is often used by us…

% days ago