The Dhaka Times Desk সিলেট শহরের আতিয়া মহলের ঘটনা পুরো দেশবাসীকে আতঙ্কিত ও উৎকণ্ঠায় রেখেছিলো। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরও শেষ হয়েছে সেই আশংকার। অভিযান শেষ হওয়ার পর উঠে আসছে নানা তথ্য। ‘ফ্রিজ এমনকি মোটরবাইক দিয়েও বোমা বানিয়েছিলো জঙ্গিরা’! উঠে এসেছে এমন তথ্য।
স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চলা এই জঙ্গিবিরোধী অভিযান ছিল সবচেয়ে রক্তক্ষয়ীও। সেইসঙ্গে তা ছিল অত্যন্ত কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ একটি অভিযান, যা এদিক-ওদিক হলে অনেক প্রাণহানি হতো। আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এই অভিযান চালিয়ে শেষ পর্যন্ত জঙ্গিমুক্ত করেছে ওই ভবনটি। ওই ভবনে ছিলো নানা আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক। সেগুলোও সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞরা নিবৃত করতে পেরেছেন।
অভিযান শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযান পরিচালনাকারী সেনাদলের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান অপারেশনের নানা দিকের যে বিস্তারিত বর্ণনা দেন, তাতে সবকিছু স্পষ্টভাবেই বেরিয়ে এসেছে বলে মনে হয়েছে।
৪ দিন ধরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে এক নারীসহ ৪ জন জঙ্গি নিহত হবার পর সেনাবহিনী ভবনটিকে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেছে। নিহতদের পরিচয় সম্পর্কে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান সাংবাদিকদের বলেন, অভিযানের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভবনের বাসিন্দাদের নিরাপত্তাকে সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিয়েই। এই সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, অভিযানটি ছিল অত্যন্ত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ।
কারণ এই ভবনে অনেকগুলো ফ্ল্যাটে ২৮টি পরিবার বাস করতো – তারা সবাই এই অভিযানের সময় মুহুর্মূহু গুলি এবং বোমা বিস্ফোরণের মধ্যেও দরজা-জানালা বন্ধ করে বসেছিলেন।
উল্লেখ্য, ‘আতিয়া মহল’ নামের এই ভবনটিতে সেনাবাহিনী, সোয়াট, র্যাব এবং পুলিশের সমন্বয়ে যে অভিযান চলে – তাকে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চলা এবং সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী জঙ্গিবিরোধী অপারেশন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অভিযান চলতে থাকার মধ্যেই ভবনটির খুব নিকটে শহরের দুটি এলাকায় জঙ্গিদের হামলায় দুজন পুলিশসহ ৬ জন নিহত হয়। আহত হয় ৩০ জনের মতো।
জানা যায়, আতিয়া মহলের ভেতরে জঙ্গিরা নিচের তলায় ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ফেলে ও ভবনের মূল দরজার সামনে বড় আকারের একটি বোমা বসায়। একটি ফ্রিজ এবং মোটর সাইকেলেও বিস্ফোরক লাগিয়ে তা প্রতিবন্ধক হিসেবে ব্যবহার করা হয় । এভাবে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির পরিসমাপ্তি ঘটেছে। দেশবাসীর মধ্যে ফিরে এসেছে শান্তির সুবাতাস। তবে সকলকেই সজাগ থাকতে হবে। যাতে আর কোনো জঙ্গি এভাবে মানুষকে জিম্মি করতে না পারে।