Categories: Special article

Bangla can be said loudly my pride?

আমরা সবাই জানি বাংলা ভাষা আমাদের অহংকার। বাংলা ভাষার জন্য এদেশের অকুতভয় ছাত্র-জনতা ১৯৫২ তে প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। যে ভাষা আজ শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের সকলের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে- কারণ ২১শে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু তারপরও এই ভাষাকে আমরা কতখানি মর্যাদা দিতে পেরেছি? বিশিষ্ট লেখিকা সেলিনা হোসেনের সঙ্গে আমরাও একমত। নৈতিকতা , দেশাত্ববোধের কারণে দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের লেখাটি আমরা পাঠকদের সামনে তুলে ধরলাম।
সেলিনা হোসেন ॥ এ বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালির শহীদ দিবসের ষাট বছর পূর্ণ দিবস। পৃথিবীতে প্রথম ভাষার জন্য জীবনদানকারী ঘটনা। ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বলা যাবে বিশ্বজোড়া অর্জনের এটিএকটি মাত্রা। কথা ছিল এই ভাষা নিজ দেশে পরবাসী হবে না। কথা ছিল দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাহিত ভাষার পূর্ণতা অর্জন হবে। হয়েছে কি? জোর গলায় বলা যাবে কি বাংলা আমার অহংকার?
উত্তরটা গলা উঁচিয়ে বলা যাবে, না।
বলা হয়ে থাকে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১- স্বাধীনতা অর্জন। একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করেছে বাঙালি। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
এ বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পূর্ণ হবে। বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র রাষ্ট্র যে সাংবিধানিকভাবে বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বলা হয়েছে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। কিন্তু জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার সম্মানজনক ব্যবহার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। মানুষের আচরণেও নিজ মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই। ষাট বছর পর মাতৃভাষার প্রতি জীবনদানকারী একটি জাতির মাতৃভাষার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব অত্যন্ত দুঃখজনক।
ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে পরিচালিত স্কুলগুলো মাতৃভাষার জন্য শিক্ষার্থীদের কতটা অনুপ্রাণিত করে তা প্রশ্নবিদ্ধ। তারপরও বলা যায় গত কয়েক বছরে স্কুলগুলো নিজেদের আগের অবস্থান থেকে খানিকটা সরে এসেছে। এটা সত্যি যে, শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষা থেকে বঞ্চিত করলে প্রজন্মের আত্মমর্যাদাবোধ তৈরি হয় না। তাদের শিকড়ের মাটি থাকে না। বিদেশে পড়াশোনা বা চাকরি করতে গেলে উদ্বাস্তু মানুষে পরিণত হয়।
দুঃখজনকভাবে ডিজুস নামে এক বিকৃত ভাষা বিনা বাধায় বাণিজ্যিক মুনাফার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই।
রাস্তার বিজ্ঞাপন বোর্ড, বিলবোর্ড বাংলা ভাষাকে ঝেড়ে ফেলেছে। যে অল্প কিছু সংখ্যক বিজ্ঞাপনে বাংলা ব্যবহার করা হয় তা দিয়ে এই বিপুল জনগোষ্ঠীর খুশি হওয়ার কারণ নেই। জনগোষ্ঠী ক্রমাগত নিজ মাতৃভাষা নিয়ে শঙ্কিত। যারা তৃণমূলের মানুষ, এখনও প্রাণখুলে নিজেদের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন, তারা সুখে আছেন। মনের ভাব প্রকাশ করে আত্মগ্লানিতে ভোগেন না। ভাষার আর্থিক মূল্য নিয়ে মাথা ঘামান না। তাদের আত্মা বিক্রি হয় না। শহরের সাধারণ মানুষ সুখে নেই। তারা এসএমএস পাঠায় বিভিন্ন জনের কাছে। প্রতিবাদ জানাতে বলে। লিখেন, মাতৃভাষার অমর্যাদা সয় না। মাতৃভাষাকে রক্ষা করবে দেশের মানুষের মর্যাদাবোধ, সচেতনতা, মাতৃভাষার জন্য ভালোবাসা। আইন করে নয়। আইনের মাধ্যমে দণ্ডনীয় ব্যবস্থা করে মাতৃভাষা রক্ষার চিন্তা করা সাংস্কৃতিক পরিশীলতা নয়। ভাষার জন্য জীবনদানকারী বাঙালি এখন এখানে এসে দাঁড়িয়েছে!
দেশের সব ক্ষেত্রে ভাষার অবমাননা চলছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যোগাযোগের জন্য ইংরেজি ভাষার বিকল্প নেই। এটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করে না। সবাই বুঝে গেছে, ইংরেজি ভাষা লাগবে। কিন্তু কোথাও কোথাও বেশি হয়ে যায়। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ইংরেজি নাম রেখে অনুষ্ঠান করার প্রয়োজন আছে কি? কার স্বার্থে? যদি বিদেশীদের জন্য অনুষ্ঠান করতে চান কিংবা শিক্ষার্থীদের জন্য কোন অনুষ্ঠানের দরকার হয় তাহলে সুন্দরভাবে ইংরেজি ভাষায় অনুষ্ঠান করুন। শিক্ষার্থীরা যেন বুঝতে ও লিখতে পারে সেটি দেখুন। কিন্তু বাংলার সঙ্গে ইংরেজি শিখিয়ে জগাখিচুড়ি বানানোর অর্থ কি? ছেলেমেয়েরা উচ্চারণ করে হ্যালো ভিউয়ার কিংবা হ্যালো লিশেনার্স- এর ফলে কি খুব স্মার্ট হয়ে যায় ওরা! উল্টো না শেখে ইংরেজি, না শেখে মাতৃভাষা। সুপ্রিয় দর্শক, সুপ্রিয় শ্রোতা কি খুব খারাপ সম্বোধন? অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে বাংলা ভাষা লিখতে ও পড়তে পারে না। আইনজীবীদের মুখেই শোনা যায় বাদী বা বিবাদীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য দাখিল করার জন্য বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। এ অবস্থা দেশের অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে চলছে। ভাষা আন্দোলনের ষাট বছর! হায় মাতৃভাষা, হায় স্বাধীন স্বদেশ!

This post was last modified on ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১২ 8:00 am

Staff reporter

Recent Posts

Only one percent of people can solve this puzzle! So what is the puzzle?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে লাইব্রেরিতে টেবিলের সামনে বই নিয়ে বসে…

% days ago

Sometimes nature enchants us

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ১৩ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১…

% days ago

It is difficult to get benefits if you do not follow the rules

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শরীরচর্চার সব উপায়ের মধ্যে হাঁটাকেই বেশি গুরুত্ব দেন অনেকেই। তবে…

% days ago

ISD fairs are held to build community bonds

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্কুল, শিক্ষার্থী ও কমিউনিটির মধ্যে ঐক্য এবং একাত্মতা উদযাপনে আইএসডি…

% days ago

iFarmer and Winrock will work together to make farmers climate-resilient

The Dhaka Times Desk At the head office of Eyefarmer Limited on May 8, Eyefarmer Limited and...

% days ago

Bangladeshi version of Family Feud hosted by Tahsan Bangate!

The Dhaka Times Desk One of the top OTT platforms in the country is coming soon to Banga, the popular US…

% days ago