দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কেও যদি ইচ্ছা করেন বা কোনো লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যান তাহলে তিনি সফল হবেনই। অর্থাৎ ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। ঠিক এই কথা সত্যি প্রমাণ করেছেন পা ছাড়াই এভারেস্টের চূড়ায় উঠে শিয়া বোউ নামে এক চীনা নাগরিক!
চীনা নাগরিক শিয়া বোউ চল্লিশ বছর আগে এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে গিয়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হয়ে দুটো পা-ই হারাতে হয়েছিলো তাকে। তবে তার পরও স্বপ্ন পূরণে থেমে থাকেননি তিনি।
১৪ মে সকালে ৬৯ বছর বয়সী এই চীনা নাগরিক ২৯,০২৯ ফুট উচ্চতা অতিক্রম করে এভারেস্টর চূড়ায় পৌঁছাতে সক্ষম হন।
রেকর্ড গড়লেন তিনি। কারণ এর আগে দুই পা নেই এমন কেও নেপালের দিক থেকে এভারেস্টর চূড়ায় উঠতে পারেননি।
২০০৬ সালে দুই পা হারানো অপর এক পর্বতারোহী নিউজিল্যান্ডের মার্ক ইঙ্গলিস- এভারেস্টে উঠেছিলেন তিব্বতের দিক থেকে- কিন্তু সেটিকে অপেক্ষাকৃত সহজ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
আজ নয় সেই ১৯৭৫ সাল থেকে শিয়া বোউ এভারেস্টে ওঠার চেষ্টা করে আসছিলেন। গত বছর নেপাল সরকার যখন দুই-পা কাটা ও অন্ধদের জন্য এভারেস্টে ওঠা নিষিদ্ধ করে দেয়, চরম হতাশায় পড়ে যান তিনি।
তবে এই বছর মার্চ মাসে নেপালের সুপ্রিম কোর্ট সরকারের ওই নিষেধাজ্ঞা বেআইনি ঘোষণা করলে, এপ্রিল মাসে শিয়া বোউ ৫ম বারের মতো এভারেস্ট অভিযান শুরু করেন।
অভিযান শুরুর আগে শিয়া বোউ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছিলেন, এভারেস্টের চূড়ায় ওঠা আমার চিরদিনের স্বপ্ন। আমাকে এই স্বপ্ন পূরণ করতে হবেই। ব্যক্তিগতভাবে এটা আমার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, আমার দুর্ভাগ্যের বিরুদ্ধেও চ্যালেঞ্জ বলতে পারেন। প্রবল ইচ্ছা শক্তির বলে শেষ পর্যন্ত তিনি তার স্বপ্ন পূরণে সক্ষম হলেন।
জানা গেছে, শিয়া বোউ ১৯৭৫ সালে তার প্রথম অভিযানে এভারেস্টর চূড়ার খুব কাছাকাছি গিয়ে ফ্রস্ট-বাইটে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই অসুস্থতার জেরে পায়ে ক্যান্সার হয়ে ১৯৯৬ সালে হাঁটুর নীচ থেকে তার দুই পা কেটে ফেলতে হয়।
এরপর ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তিনি আবার অভিযানের জন্য নেপাল আসেন, তবে দুর্যোগপূর্ণ অবহাওয়া ও দুর্ঘটনার জন্য নেপাল সরকার দুবারই পর্বতারোহণ বন্ধ রাখে।
২০১৬ সালে মাত্র ২০০ মিটার ওঠার পর খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাকে ফিরে আসতে হয়। এক বছর পর আবারও শিয়া বোউ আসেন এবং এভারেস্ট জয় করেন। স্বপ্ন পূরণ হলো শিয়া বোউ এর। তিনি এখন ভীষণ খুশি। জীবনের এক বড় ইচ্ছা দীর্ঘদিন পর পূরণ হয়েছে।