দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সুপ্রিয় এবং মিষ্টি পানির অন্যতম উৎস হল নারিকেল। ছোট-বড় সবায় নারিকেলের পানি পান করতে পছন্দ করেন। তবে আমাদের দেশে যেসকল নারিকেল পাওয়া যায় তার উৎপাদন খুবই কম। এই সমস্যা নিরসনের জন্য ম্যাজিক নারিকেলের চারা আমদানি করা হয়েছে। আজ আমরা জানবো ম্যাজিক নারিকেল কেন চাষ করবো এবং এর সুবিধাগুলো কি কি।
খাটো জাতের হাইব্রিড নারিকেল গাছের চাষে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়। এ নারিকেল গাছ আমাদের দেশীয় গাছের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি ফল দেবে। চারা বপণের মাত্র দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যেই এই গাছ থেকে নারিকেল পাওয়া যাবে। যেখানে আমাদের দেশীয় গাছ থেকে নারিকেল পেতে প্রায় ৬-৮ বছর সময় লাগে। সাধারনত বাংলাদেশে দুটি খাটো জাতের নারিকেল গাছের চাষ হয়। একটি হলো ডিজে সম্পূর্ণ হাইব্রিড ডোয়াফ নারিকেল এবং অন্যটি হলো ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা ‘উন্নত ও খাটো ‘ওপেন পলিনেটেড (ওপি)’ জাত। এর মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে সংগ্রহ করা এ জাতটি আবার দু-ধরনের, একটি হল সিয়াম গ্রীণ কোকোনাট এবং অন্যটি সিয়াম বস্নু কোকোনাট।
দুটি জাতই বছরে প্রায় ১৫০টি নারিকেল দেয়। তবে এটি হাইব্রিড নয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নারিকেলের দু’টি জাত সনাক্ত করেছেন। ওই জাতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো পরিপক্ক নারিকেল থেকেই এর চারা উৎপাদন সম্ভব হবে এবং চারা রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরে গাছে মুচি আসবে। সিয়াম বস্নু কোকোনাট জাতটির পানি খুবই মিষ্টি এবং সুগন্ধিযুক্ত। প্রতিটি ডাব থেকে ৩০০ এমএল পানি পাওয়া যাবে।
বেঁটে প্রজাতির জাত হওয়ায় গাছের উচ্চতা ২ থেকে ৪ ফুট হলেই ফল ধরা শুরু করে। তাই এই গাছের নারিকেল পাড়া সহজ। দেশীয় বড় গাছগুলোতে পোকা- মাকড়ের আক্রমণ প্রতিহত করা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে এই গাছগুলো খাটো হওয়ায় এই গাছের পোকা-মাকড় খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। তাই প্রতিবছর এই প্রজাতির গাছ থেকে প্রচুর পরিমানে সুস্থ এবং পরিপুষ্ট নারিকেল পাওয়া যাবে।
‘এশিয়ান প্যাসিফিক কোকোনাট কমিউনিটি’ এশিয়া মহাদেশের নারিকেল উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে আসছে। যার প্রধান কার্যালয় ইন্দোনেশিয়ায়। বর্তমানে বাংলাদেশসহ ১৮টি দেশের নারিকেলের জাত উন্নয়ন নিয়ে সংস্থাটি কাজ করছে। সারা বছর ফল উৎপাদনের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’ নামের নতুন একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনেই ইতিমধ্যে দেশের আনাচে-কানাচে এই ম্যাজিক নারিকেল গাছের চারা রোপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ম্যাজিক নারিকেলের ২০ হাজার চারা সম্প্রতি ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করেছে। পরবর্তীতে আরো ৭৫ হাজার চারা আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে।