দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এইচআইভি এইডস রোগীদের চিকিৎসায় অভিনব এক পন্থা উদ্ভাবন করেছেন একদল গবেষক। এটিকে বলা হচ্ছে জেনেটিক্যালি মডিফাইড বা জিএমও ধান।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও স্পেনের গবেষকরা নতুন জিএমও ধান উদ্ভাবন করেছেন এইচআইভি এইডসের উপসর্গ মোকাবেলা করার জন্য। বিশেষ করে যেসকল দেশে এইচআইভির ঔষধ সহজলভ্য নয়, সেসব দেশে এই ধান বিশেষ উপকারে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয় প্রসিডিংস অব দ্যা ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে।
খবরে জানা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন ফসলের জিএমও প্রকরণ রয়েছে। ইতিপূর্বে পুষ্টিহীনতা ও পরিবেশ বিপর্যয় মোকাবেলা করতে সক্ষম জিএমও ধান উদ্ভাবন হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বিশ্বে মোট ৩ কোটি ৬৯ লাখ এইচআইভি এইডস রোগী ছিল। এর মধ্যে ২ কোটি ৫৭ লাখই আফ্রিকার বাসিন্দা। ১৯৮০ এর দশকে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ে এই রোগটি। তখনকার তুলনায় এর সংক্রমণ কিছুটা কমে গেলেও দিনকে দিন আশঙ্কাজনক হারে নতুন করে বাড়ছে এইচআইভি সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা।
এই রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বর্তমানে বিভিন্ন ওষুধ এবং টিকা পরীক্ষাধীন রয়েছে। তবে বর্তমানে যৌনশিক্ষার প্রসার ও মুখে খাওয়ার ওষুধ ছাড়া এই রোগ প্রতিরোধ এবং প্রতিকারের কোনো উপায়ও নেই।
এই পর্যন্ত এইডসের ইতিহাসে মাত্র একজন রোগী পুরোপুরিভাবে সুস্থ হতে পেরেছেন। অন্য রোগীরা একধরণের অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ খান, যা শরীরের ভেতরে এইডস ছড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। সঠিক চিকিৎসা করা হলে রোগী লম্বা ও সুস্থ জীবনযাপনও করতে পারেন।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এসব ওষুধ সবার জন্য সহজলভ্য নয়। এ কারণেই গবেষকরা এইচআইভি রোগীদের জন্য বিশেষ ধান উদ্ভাবন করেন। তাদের মতে, যেসব রোগী ওষুধ কেনার সুযোগ পাচ্ছে না, তাদের জন্য সহজলভ্য এবং সস্তা সমাধান হলো এই জিএমও ধান।
এই ধান কী করে এইচআইভি নিয়ন্ত্রণে রাখবে? এসব ধানের বীজে রয়েছে ৩টি প্রোটিন- মোনোলোকাল অ্যান্টিবডি ২জি১২, লেকটিনস গ্রিফিথসিন ও সায়ানোবাইরিন-এন। এগুলো এইচআইভি শরীরের ভেতরে ছড়ানো রোধ করে থাকে। এই ধান বেটে ত্বকে প্রয়োগ করা যায় ক্রিমের মতো, এতে অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধের মতোই কাজ করে। এসব ধানের উৎপাদন খরচও খুবই কম।
যদিও এই ধান জনসাধারণের জন্য সহজলভ্য করে তুলতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। বিশেষ করে অনেকের মাঝেই জিএমও ফসল নিয়ে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি কাজ করে। এই ভীতি কাটিয়ে উঠতে হবে যতো শীঘ্র সম্ভব। এই ফসলের যে কোনো খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, সেটিও প্রমাণ করতে হবে আগে।