দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উপকার করার ইচ্ছে থাকলে কেবল অর্থ দিয়েই নই বিভিন্ন কৌশল এবং বুদ্ধি প্রয়োগ করেও মানুষের উপকার করা যায়। এমনি এক অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন কিশোরগঞ্জ জেলার এক প্রাইমারি স্কুল শিক্ষিকা।
নাজনীন মিষ্টি নামের এই শিক্ষিকা অনেকদিন ধরে চিন্তা করেন কিভাবে মানুষের সেবা করা যায়। তিনি মানুষের অভাব অনটন খুব কাছ থেকে দেখেছেন এবং জেনেছেন তাদের দারিদ্রতার করুণ অবস্থা। তিনি উপলব্ধি করেছেন, সামান্য অর্থের অভাবে তারা কিভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর্থিকভাবে মানুষকে সাহায্য করার মত তার সামর্থ না থাকায় তিনি অন্য উপায় নিয়ে ভাবতে থাকেন। আর এই ভাবনার সূত্র ধরেই তিনি নিজের কর্মরত স্কুলেই গড়ে তুলেছেন মানব সেবার এক অনন্য উপায়।
নাজনীন মিষ্টি কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার দক্ষিণ মুকসুদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা। তার স্কুলের একটি দেওয়ালের নাম দিয়েছেন ‘মহানুভবতার দেওয়াল’। দেওয়ালের বামপাশে লেখা আছে “তোমার যা প্রয়োজন নেই তা এখানে রেখে যাও।” এবং ডানপাশে লেখা আছে , “তোমার দরকারি জিনিস পেলে নিয়ে যাও।”
এখানে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাদের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখে যায়। আবার এই দেওয়ালে রাখা বিভিন্ন জিনিসপত্রের মধ্যে যার যা প্রয়োজন সেই জিনিসটি নিজের মনে করে তারা নিয়ে যেতে পারে। এখানে কারোর কোন বাধা-নিষেধ নেই। কারণ একজনের কাছে যা অপ্রয়োজনীয় হতে পারে সেই জিনিসটি অন্যজনের কাছে প্রয়োজনীয় হতে পারে। এর ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিভিন্ন অভাব পূরনের এক অসাধারণ উপায় সৃষ্টি হয়েছে। দেওয়ালে বিভিন্ন পোশাক থেকে শুরু করে নানা ধরণের জিনিসে ভরে গিয়েছে।
নাজনীনের এই উদ্যোগে এলাকাবাসীও অনেক খুশি হয়েছে। সোস্যাল মিডিয়াতেও তার এই উদ্যোগের ব্যাপক সাড়া পড়েছে এবং তিনি হয়েছেন প্রশংসনীয়। কেবল আর্থিক ভাবেই নই অনার্থিকভাবেও কিভাবে মানুষকে সাহায্য করা যায় তিনি আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছেন। মানবসেবায় অংশগ্রহণ করার মানসিকতা থাকলে আমরা এমন নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে আমাদের আশেপাশের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সেবা করতে পারি এবং সেই সাথে অন্যদেরকেও অনুপ্রাণিত করতে পারি। সর্বদা মনে রাখবেন কাওকে সাহায্য করে তার মুখে হাসি ফুটানোর মাধ্যমে আপনি যে আনন্দ অনুভব করবেন, পৃথিবীর আর কোন কাজেই আপনি এমন আনন্দ খুজে পাবেন না।