দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার এক প্রাচীন মমি নিয়ে নানা রহস্য সৃষ্টি হয়েছে! ফারাওদের পূর্বেও মমি প্রথা চালু ছিল প্রাচীন মিশরে। চাঞ্চল্যকর এই খবরে স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজিত কৌতূহলী সকলেই।
তুতেনখামেনের অভিশপ্ত মমি হোক বা অন্য ফারাওদের মমি সাধারণ মানুষদের পাশাপাশি গবেষকদেরও কৌতূহলের যেনো শেষ নেই। বিষয়টি নিয়ে নতুন নতুন আবিষ্কারও চলে আসছে দীর্ঘদিন যাবত।
সম্প্রতি এক বহু পুরনো মমিকে ঘিরে নতুন আবিষ্কারের কথা সামনে চলে এসেছে। জানা গেছে, ফারাওদের আগেও প্রাচীন মিশরে মমি প্রথা চালু ছিল। চাঞ্চল্যকর এই খবরে স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজিত কৌতূহলী হয়েছে সবাই।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘লাইভসায়েন্স.কম’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন হতে জানা যায়, ওই মমিটি পাওয়া গিয়েছিল গত শতাব্দীর একেবারে গোড়ার দিকে। ১৯০১ সাল হতে ইতালির তুরিন মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে এই মমিটি। মোটামুটিভাবে ৩৭০০ হতে ৩৫০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের সময়কালের ওই মমিটি সম্পর্কে এতোদিন সকলের ধারণা ছিল যে, ওই মমিটি নাকি কৃত্রিমভাবে সংরক্ষিত হয়নি।
কোনো এক দুর্যোগের পরে মরুভূমিতে প্রাকৃতিকভাবেই ওই দেহটি সংরক্ষিত হয়ে যায়। তবে গবেষকরা এখন জানতে পেরেছেন, ২০ হতে ৩০ বছর বয়সী ওই যুবকের দেহটিকে কৃত্রিমভাবেই সংরক্ষণ করা হয়। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই এহেন আবিষ্কারে মমির ইতিহাস নিয়েই নতুন করে ভাবতে হচ্ছে গবেষকদের। কেনোনা, গবেষকদের এই দাবির অর্থ, এতোদিনের জানা সময়েরও এক হাজার বছর পূর্বেই এই বিদ্যা আয়ত্ত করেছিল মিশরের মানুষরা।
১৫ অগস্টে ‘জার্নাল অফ আর্কিওলজিক্যাল সায়েন্স’-এ প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্রটি। ওই গবেষক দলের অন্যতম গবেষক অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বাসিন্দা জানা জোন্স জানিয়েছেন যে, মমিটির ডান কবজি, ধড় খুঁটিয়ে পরীক্ষা করার পরে বোঝা গেছে সেটিকে আসলে সংরক্ষণ করা হয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষা করা হয়েছে মমিটির দেহের সঙ্গে থাকা ব্যাগটিও। তাতে দেখা গিয়েছে, জৈব তেল, প্রাণীজ চর্বি ও আরও বহু পদার্থের প্রলেপ দিয়ে কাপড়ে মোড়ানো হয় দেহটি। এর উদ্দেশ্য অবশ্যই সংরক্ষণ।
ওই মমিটি এতোই প্রাচীন যে, তখন লেখার ভাষাও আবিষ্কৃত হয়নি। সম্ভবত মুখে মুখেই ওই সংরক্ষণের প্রক্রিয়া প্রজন্ম হতে প্রজন্মে বাহিত হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ওই সময়ের মানুষের মধ্যে মরণোত্তর জীবন সম্পর্কে অটুট একটা বিশ্বাস ছিল। তারা চাইতো দেহটি সংরক্ষণ করতে। সংরক্ষণের পদ্ধতিও তারা আবিষ্কার করে ফেলেছিল সে সময়।
প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, কবেকার এক যুবকের শরীর এইভাবেই প্রাচীন পৃথিবীর দরজা আচমকাই যেনো খুলে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের চোখের সামনে। তাঁরা বিস্মিত হয়ে লক্ষ করেছেন, সেই সুদূর অতীতেও মানুষ চারপাশের প্রাকৃতিক উপাদানকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে দেহ সংরক্ষণের আশ্চর্য পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল।