দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের মধ্যে পশুপ্রীতি রয়েছে যুগ যুগ ধরে। তবে মাঝে-মধ্যেই সেই পশুপ্রীতি অনেক বড় হয়ে দেখা দেয়।যেমন বিড়ালের জন্য শেষ পর্যন্ত চাকরিতে ইস্তফা দিলেন রিচার্ড ইস্ট নামে এক যুবক!
চাকরির জন্য শখ বর্জন করেন অনেকেই কিন্তু শখের জন্য চাকরি ছাড়তে বা বর্জন করতে সচরাচর দেখা যায় না। তবে এবার তাই ঘটলো পোষা বিড়ালটির জন্য চাকরি ছাড়লেন রিচার্ড ইস্ট নামে এক যুবক!
রিচার্ড ইস্ট সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে তিনি গোটা অস্ট্রেলিয়া ঘুরবেন স্লিপার ভ্যানে করে। তবে সেই ভ্রমণ সঙ্গী হিসেবে কোনও মানুষকে রাখছেন না তিনি। তার সঙ্গে থাকবে তার পোষা বিড়ালটি৷ উইলো। কারণ উইলো তার খুব পছন্দের বিড়াল। দু’জনের পারস্পরিক বোঝাপড়াও রয়েছে।
রিচার্ড ও উইলোর বন্ডিং দেখে অনেকেই ভাবছেন এমন সিদ্ধান্তটা কী সত্যিই নিয়েই ফেলবেন?
তবে ইস্ট এটিকে বলছেন, ‘দ্য মোস্ট ওয়েল-প্রিপেয়ার্ড মিড-ওয়াইফ ক্রাইসিস ইন হিস্টোরি’। রিচার্ড চান তিনি এবং তার ৬ বছরের বিড়াল উইলো পুরো অস্ট্রেলিয়ার যতো রাস্তা রয়েছে একটাও বাদ না দিয়ে শুধুই ঘুরে বেড়াবেন। তারপরই সত্যিই বেরিয়ে পড়েন দুজন। তিন বছর পরেও তাদের ভ্রমণ যেনো শেষ হয়নি। তারা দুজনে মিলে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে গেছেন। একসঙ্গে মনে গেঁথে রাখার মতো সুন্দর সুন্দর জায়গায় মনের আনন্দে বেড়ান তারা।
এই গল্পের শুরু হয়েছিলো সেই ২০১৪ সালে। সে বছরই বেড়ানোর জন্য আইটির চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছিলেন ইস্ট। ‘আমি ১০ বছর ওই সংস্থার সঙ্গে চাকরি করেছি। তারপরেও আমার প্রতিশ্রুতিময় মনে হচ্ছিল না আমার পেশাটি। আমি লোকসান করেছি বলে মনে হতে থাকে।’ এমনিভাবে জানিয়েছেন ইস্ট। ‘তখন আমি ভাবি মাস ছয়েকের ছুটি নিয়ে কোথাও ঘুরে আসবো। তবে সেই একই সমস্যার মধ্যে ফিরতে হবে আমায়। এই ভাবনাটা মাথায় আসতে থাকে বার বার। এরপরই ভাবি না, ছ’মাসের বেশি সময় দরকার আমার। ছ’মাসে আমার হবে না।’
ইস্ট তার সব মায়ার জিনিস বিক্রি করে দিলেন।৷ তবে বিক্রি করতে পারেননি একটি জিনিস। আর তা হলো তার পোষ্য বিড়াল উইলোকে। উইলোর থেকে আলাদা করে নিজেকে কখনও ভাবতে পারেননি ইস্ট। ‘সত্যি কথা বলতে কি উইলো আমার জীবনের প্লানের মধ্যে মোটেও ছিল না। তবে এটা ঘটে যায় সত্যিই। আমি বুঝতে পারি যে উইলোকে পেছনে ফেলে রেখে আমি যেতে পারবো না। তাই সে সব সময় আমার পাশে ছিল। তাই আমি প্রমিস করি আমি কোনও দিনও তাকে কোনো অবস্থাতেই ছেড়ে দেবো না। এটাই আমার জীবনের সবথেকে বড় একটি সিদ্ধান্ত৷’ জানিয়েছেন ইস্ট।
এখন আর কিছু ভাবতে চান না ইস্ট। এভাবেই কাটিয়ে দিতে চান বাকি সময়। তিনি ও তার উইলো মিলে যা ইচ্ছে হয় তাই করতে চান। তাই সেটাই করে চলেছেন। সেটাই করে যাবেন সব সময়। দুজনের এই সম্পর্ক কখনও ছিন্ন হওয়ার নয়। পোষ্য বিড়ালের প্রতি এমন ভালোবাসা সচরাচর দেখা যায় না যা ঘটেছে রিচার্ড ইস্ট এর ক্ষেত্রে।