দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক খবরে বলা হয়েছে, নীল সাগর অনেক বেশি সবুজাভ হয়ে উঠবে। বদলটা স্পষ্ট হতে শুরু করবে চলতি শতকের শেষ দিকে। বিষয়টি জানিয়েছেন, ব্রিটেনের সাউথাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
সম্প্রতি ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এই গবেষণাপত্রটি। তাহলে কী আমাদের নীল গ্রহ ক্রমেই সবুজ গ্রহে পরিণত হতে চলেছে! তবে কেনো?
ওই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য আনা হিকম্যান জানিয়েছেন, সুমুদ্রের পানিতে থাকা শৈবালকণাও ‘ফাইটোপ্লাংটন’ সবুজ। এরা ডাঙার সবুজ গাছদের মতোই সুর্যের আলোকে ব্যবহার করে খাবার তৈরি করে থাকে। যেখানে এদের সংখ্যা নেহায়েত কম, সেখানেই সাগরের পানি নীল। যেখানে সংখ্যা বেশি, সেখানে সবজেটে ভাব দেখা যায়।
বিশ্বব্যাপি জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান এই ধারায় বদল আনতে না পারলে ২১০০ সাল নাগাদ এই গ্রহের তাপমাত্রা প্রায় ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে। উষ্ণতর পানি পেয়ে সংখ্যায় তথা পরিমাণে (বায়োমাস) বিপুল বাড়বে ফাইটোপ্লাংটন। তাতে করে ঢের বেশি সবুজেটে হয়ে উঠবে সাগরের নীল পানি।
এদের জন্ম-মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে এক এক মৌসুমে এক এক রকম রং ধারণ করবে সমুদ্র। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, বিষয়টি শুধু দেখারই নয়। সূর্যের আলো সাগর কতোটা শুষে নেবে, কতোটা সেটি ফিরিয়ে দেবে- তার ছবিও বদলে যাবে।
অবশ্য শুধু তাপমাত্রাই নয় সাগরপানির সবুজ ও অন্য রংয়ের জৈব বস্তুর কমা কিংবা বাড়াটা নির্ভর করে পানির স্রোত বা অম্লতার মতো অন্য বেশ কিছু বিষয়ের উপর।
ব্রিটিশ-মার্কিন বিজ্ঞানীদের যৌথ দলটি জানিয়েছে, কম্পিউটার মডেলের মাধ্যমে বদলের চিত্রটা জানার সময় এই বিষয়গুলিও মাথায় রাখা রয়েছে। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলা কৃত্রিম উপগ্রহ হতে কিংবা মহাকাশ কেন্দ্র হতে ক্যামেরা এবং অন্য যান্ত্রিক চোখে গত দু’দশকে যে তথ্য জোগাড় হয়েছে, তার ভিত্তিতেই রং বদলের বিষয়টি উঠে আসে।
হিকম্যানরা জানিয়েছেন, কারণটা অত্যন্ত গুরুতর। পৃথিবীতে যতো সালোকসংশ্লেষ হয়, তার অর্ধেকটাই করে থাকে এই শৈবালকণাদের ক্লোরোফিল। এরাই মূলত সমুদ্রের প্রাণী কুলের খাবারের প্রাথমিক জোগানদার। এদের পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমে কিংবা বেড়ে গেলে সমুদ্রের খাদ্যচক্রে এবং কার্বন-চক্রে বড়সড় পরিবর্তন ঘটবে। এতে করে অজানা পরিস্থিতি তৈরি হবে।
সেই বদল আসলে মানুষের তথা পৃথিবীর জীবকুলের পক্ষে ভালো না মন্দ- তা নিয়ে রায় দেওয়ার সময় এখনও আসেনি। তবে পরিবর্তনটা রাতারাতি নয়, হচ্ছে খুব ধীরে ধীরে। বিষয়টি খালি চোখে ধরা পড়ার মতো নয়।
যে কারণে এখনই শিল্পীদের রংয়ের প্যালেট পাল্টে ফেলার সময়ই আসেনি। তবে বদলটার দিকে বিজ্ঞানীদের নজরদারি জরুরি বলে মনে করছেন হিকম্যান এবং তার সতীর্থ যারা আছেন তারা।