দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুরুষদের তুলনায় বাংলাদেশী নারীরা বেশি ‘অলস’ বা শরীর চর্চায় বিমুখ বলে দাবি করা হয়েছে এক জরিপে। এই অলসদের তালিকায় বাংলাদেশের ১৬ দশমিক ১ ভাগ পুরুষও রয়েছে যেখানে মূলত নারীর হার ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ।
এই জরিপটি শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের ১৬৮টি দেশের মানুষের ওপর করা হয়। যেখানে দেখা গেছে, সারা বিশ্বের ২৭ দশমিক ৫ ভাগ মানুষ কম কাজ করতে চায় বা তারা শরীর চর্চায় বিমুখ। তারমধ্যে পুরুষ ২৩ দশমিক ৪ ভাগ এবং নারীরা ৩১ দশমিক ৭ ভাগ।
দেখা যাচ্ছে, শরীর চর্চায় বিমুখতা বা অলসতার দিক দিয়ে ১৬৮ দেশের গড় হিসেবের তুলনায় বাংলাদেশের নারীরা প্রায় ৮ শতাংশ মতো এগিয়ে রয়েছে এবং পুরুষরা প্রায় ৭ ভাগ পিছিয়ে রয়েছে। অবশ্য গবেষণায় এমন দেশও পাওয়া গেছে যে যেখানকার নারী-পুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই অলসতার হার ৫০ শতাংশেরও উপরে! দেখা গেছে, কুয়েতের ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষই অলস, সেখানে নারীর অলসতার হার হলো ৭৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু’র (ডব্লিউএইচও) জরিপে এমন তথ্যই প্রকাশ করা হয়েছে। ২০০১ সাল হতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৬৮ দেশের ১৯ লাখ মানুষের ওপর এই জরিপটি চালিয়ে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ডব্লিউএইচও’র ওই প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ জার্নালে।
এতে বলা হয়, যারা সপ্তাহে দুইবার অন্তত ৭৫ মিনিটের জন্য ভারী ব্যায়াম ও ১৫০ মিনিটের মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম বা দুটোর মিশ্রণে ব্যায়াম করেন তারা শরীর চর্চায় সক্রিয় বলে ধরা হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৩ সালে ৫ হাজার ৪০২ জন ও ২০০৯ সালে ৯ হাজার ২৭৫ জন বাংলাদেশী ওই জরিপে অংশগ্রহণ করে। জরিপে অংশগ্রহণকারী এসব মানুষ ১৮ থেকে ৯৯ বছর বয়সী বাংলাদেশী নারী-পুরুষ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জরিপের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশী ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ ‘অলস’ বা শরীর চর্চায় করেন না। এরমধ্যে আবার ১৬ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ ও ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ নারী ‘অলস’ কিংবা শরীর চর্চায় বিমুখ।
এই বিবেচনায় বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ‘অলস’ দেশের তালিকায় রয়েছে কুয়েত ও সবচেয়ে সক্রিয় দেশের তালিকায় রয়েছে উগান্ডা। কুয়েতের শতকরা ৬৭ ভাগ মানুষই শরীর চর্চায় অনাগ্রহী এবং উগান্ডার মাত্র ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ।
যদিও শীর্ষ ১০ অলস দেশের তালিকায় নাম নেই বাংলাদেশের। ওই তালিকায় প্রথম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে কুয়েত। তালিকাটি আজ দেখে নিন:
১। কুয়েত (৬৭ শতাংশ)
২। আমেরিকান সামোয়া (৫৩.৪ শতাংশ)
৩। সৌদি আরব (৫৩ শতাংশ)
৪। ইরাক (৫২ শতাংশ)
৫। ব্রাজিল (৪৭ শতাংশ)
৬। কোস্টারিকা (৪৬.১ শতাংশ)
৭। সাইপ্রাস (৪৪.৪ শতাংশ)
৮। সুরিনাম (৪৪.৪ শতাংশ)
৯। কলম্বিয়া (৪৪ শতাংশ)
১০। মার্শাল আইল্যান্ডস (৪৩.৫ শতাংশ)
অপরদিকে সবচেয়ে সক্রিয় ১০ দেশের তালিকাতেও বাংলাদেশের নাম নেই। সেখানে দিন-রাত পরিশ্রম করে প্রথম স্থান অধিকার করা দেশটি হলো উগান্ডা। তালিকটি নিচে দেখে নিন:
১। উগান্ডা (৫.৫ শতাংশ)
২। মোজাম্বিক (৫.৬ শতাংশ)
৩। লেসোথো (৬.৩ শতাংশ)
৪। তানজানিয়া (৬.৫ শতাংশ)
৫। নিউয়ে (৬.৯ শতাংশ)
৬। ভানুয়াতু (৮ শতাংশ)
৭। টোগো (৯.৮ শতাংশ)
৮। ক্যাম্বোডিয়া (১০.৫ শতাংশ)
৯। মিয়ানমার (১০.৭ শতাংশ)
১০। তোকেলাউ (১১.১ শতাংশ)