দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানব শরীর দিয়ে কম্পোস্ট বা জৈব সার বানানোর অনুমতি দিয়ে একটি আইনের অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্য।
জানা গেছে, এই আইন মোতাবেক, এখন থেকে যে কেও নিজের মৃত্যুর পর মরদেহ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে কম্পোস্ট সার বানানোর নির্দেশনা দিয়ে যেতে পারবেন। এটি অনেকটা মৃত্যুর পর অঙ্গদানের মতোই।
প্রচলিত রীতিতে কবর দেওয়ার বিকল্প হিসেবে এই পদ্ধতিটিকে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব শহরে কবরস্থানের বা নতুন করে কবর দেওয়ার সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি একটি বিকল্প সমাধান হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, মাটির সঙ্গে মিশে ওই মৃতদেহ সারে পরিণত হওয়ার পর সেই মাটি প্রিয়জনদের দেওয়া হবে। যেনো তারা এতে ফুলগাছ, সবজির চারা বা বৃক্ষ রোপণ করতে পারেন!
ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জে ইনস্লে সম্প্রতি স্বাক্ষর করার পর ওই বিলটি ইতিমধ্যেই আইনে পরিণত হয়েছে। বিলের পক্ষে আন্দোলনকারী ক্যাটরিনা স্পাড এএফপিকে বলেছেন যে, সাধারণ কবর দেওয়ার বদলে এরকম মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ার বিকল্প পদ্ধতি হবে প্রাকৃতিক, নিরাপদ ও স্থায়ী পদ্ধতি। এটি পৃথিবীতে মাটির ব্যবহার এবং কার্বন নি:সরণ কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
এই ধরণের কাজে সহায়তা করতে একটি কোম্পানিও গঠন করেছেন তিনি। ক্যাটরিনা স্পাড আরও বলেন, ৬টি কোণ বিশিষ্ট একটি ইস্পাতের বাক্সের ভেতর এক ধরণের উদ্ভিদ- যা মূলত প্রাণীদেহকে কেন্দ্র করেই বেড়ে ওঠে, কাঠের টুকরো ও খড়কুটো দিয়ে মৃতদেহগুলো রাখা হবে।
তারপর সেই বাক্সটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যেই প্রাকৃতিকভাবেই মৃতদেহ পচে যাবে ও মাটিতে পরিণত হবে সেটি। পরিবেশ-বান্ধব এমন সমাধি দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে প্রয়াত অভিনেতা লুক পেরিকে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি মাশরুম স্যুইটে সমাধি দেওয়া হয়।
ওই স্যুইটের নির্মাতা জে রাইম লি বলেছেন, যখন কোনো মৃতদেহ মাটিতে সমাধি দেওয়া হয় কিংবা পুড়িয়ে ফেলা হয়, তখন যে বিষাক্ত গ্যাস পরিবেশে মেশে এই প্রক্রিয়ার ফলে সেটিও অনেক কমে যাবে।
মানব মৃতদেহকে সারে পরিণত করার প্রক্রিয়াটি ইতিমধ্যেই সুইডেনেও আইনসিদ্ধ করা হয়েছে। কোনো বাক্স কিংবা কফিন ছাড়া মৃতদেহ সমাধির প্রাকৃতিক সমাধি প্রক্রিয়া যুক্তরাজ্যে আইনগতভাবেই বৈধতা পেয়েছে। তবে বেশ কিছু ধর্মে অবশ্য মৃত্যুর পর কোনরকম বাক্স কিংবা কৃত্রিম সরঞ্জাম ছাড়াই মৃতদেহ সমাধি করার নিয়ম বিদ্যমান রয়েছে।