দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনিদ্রার সমস্যা মানুষের কর্মব্যস্ত জীবনে একটি বিরাট ঝুকি ও সমস্যায় পরিণত হয়েছে।ঘুমের উপরই মানুষের শারীরিক সুস্থতা অনেকাংশে নির্ভর করে থাকে। যে বয়সে যতটুকু ঘুমানো দরকার তা আজ জেনে নিন।
ঘুম শরীরকে সতেজ ও প্রাণবন্ত করে তোলে। সম্প্রতি বিশ্বের অধিকাংশ দেশে অন্তত ১০শতাংশ মানুষ ঘুমের সমস্যায় ভোগে। বিভিন্ন জরিপে জানা গেছে যে, বেশির ভাগ মানুষ সময় মতো ও পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারেনা।ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের উপর একটি বিরূপ প্রভাব ফেলে। স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ঘুম একটি অপরিহার্য বিষয়।কম ঘুমের কারণে শরীরের ক্লান্তি বেড়ে যায় যার ফলে শরীর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের অভাবে আমাদের শরীরে ক্লান্তি ভাব চলে আসে এবং আমাদের বাহ্যিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে অনেক ধরনের রোগ বালাই আমাদের শরীরে এসে বাসা বাঁধতে পারে।
আমাদের প্রত্যেকেরই সময় মতো ও পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে।তাই কোন বয়সে কত ঘন্টা ঘুমানো দরকার তা জানা আমাদের প্রত্যেকের অত্যন্ত জরুরি। তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক কোন বয়সে কত ঘণ্টা ঘুমানো দরকার-
০ থেকে ৩ মাস
একটি নবজাতকের ঘুমের পরিমাণ সবথেকে বেশি হওয়া দরকার। নবজাতকের দৈনিক ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার।একজন নবজাতকের ঘুমের সময় তার শারীরিক ও মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে থাকে তাই নবজাতকের পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরি।
৪ থেকে ১১ মাস
চার মাস বয়সের বাচ্চাদের খাওয়ার সাথে সাথে তারা জেগে খেলা করার সময় বাড়িয়ে দেয়।এই বয়সে বাচ্চাদের ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা ঘুম হয়ে থাকে।
১ থেকে ২ বছর
এই বয়সে বাচ্চাদের ঘুমানোর প্রবণতা কমে আসে এরা রাতে ঘুমাতে বেশি পছন্দ করে থাকে।সাধারণত এরা দৈনিক ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘুমায়।
৩ থেকে ৫ বছর
এই বয়সে বাচ্চারা খেলাধুলার পাশাপাশি পড়াশোনায় যুক্ত হয়ে পড়ে এর ফলে তাদের ঘুম ধীরে ধীরে কমতে থাকে।তবে এসবের পরেও এই বয়সে দৈনিক বাচ্চাদের ১০ থেকে ১৩ ঘন্টার ঘুম খুব জরুরি।
৬ থেকে ১৩ বছর
এই বয়সে বাচ্চাদের পড়াশোনার চাপ অধিকাংশ বেড়ে যায়।যার ফলে তাদের ঘুম অনেকাংশে কমে গিয়ে তাদের শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এই বয়সে অবশ্যই বাচ্চাদের ঘুমের ব্যাপারে সকলের নজর রাখতে হবে। এই বয়সের বাচ্চাদের প্রতিদিন সময় মত ঘুমাতে যাওয়া এবং ৯ থেকে ১১ ঘন্টার ঘুম জরুরি।
১৪ থেকে ১৭ বছর
এই বয়সে কিশোর-কিশোরীদের অনেক রাত জেগে বইপড়া মোবাইল ফোন ব্যবহার করার পাশাপাশি নানা রকম কাজে রাত জেগে থাকতে দেখা যায়। এই সময় তাদের পড়াশোনার চাপ বেশি হয়ে থাকে।এর ফলে নানা রকমের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে অতএব চাপ জতই থাকুক দৈনিক ৮ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই দিতে হবে।
১৮ থেকে ২৫
এই সময় মানুষের জীবনে আসে নানান পরিবর্তন। স্কুল কলেজ শেষ করে তখন কর্মজীবনে পা দিতে হয়।এই পরিবর্তনের মাঝে বিশ্রামটা খুবই জরুরি হয়ে থাকে এ সময় দৈনিক অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
২৬ থেকে ৬৪
এই বয়সে ঘুমের পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে। এই বয়সে নিউরনের একটি অংশ নষ্ট হতে থাকে ফলে ঘুম কমে যায়।এই সময় দৈনিক৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম শ্রেয়।
৬৫–এর বেশি
বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঘুমের পরিমাণ কমে যায়। ৬০বছরের বেশি বয়সীদের দিনে অন্তত৭ ঘন্টা ঘুমাতে হয়।এই বয়সে ঘুমের পরিমাণ কম হলে শরীর ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
ঘুম আমাদের শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে তাই আমাদের সকলের উচিতপর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর।ঘুম আমাদের শরীর ও মনকে চাঙ্গা করে তোলবার ফলে আমাদের কর্মব্যস্ত জীবন হয়ে ওঠে সুখকর।