দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোষ্ঠকাঠিন্য আমাদের প্রায় সবারি কখনো না কখনো হয়েছে। এটি এমন একটি সমস্যা যার দ্বারা আমরা অনেকেই ভুগি দিনের পর দিন। আজ জেনে নিন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ও সমাধান।
আপাতদৃষ্টিতে কোষ্ঠকাঠিন্য তেমন ভয়ানক কোন সমস্যা না যা নিয়ে আমাদের আতঙ্কিত হতে হবে। তবে অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন ও কায়িক শ্রমের অভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় প্রায় সকলের। আমাদের খাবারের অনিয়মের ফলে অথবা পরিকল্পনাহিন ডায়েটের কারনে আমরা মূলত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগি। তবে যদি সময়মত কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি তাহলে আমাদের হতে পারে কলন ক্যন্সারের মতো বড় অসুখ। আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে মলাশয়ের মাংস নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে যার ফলে আমাদের মলত্যাগে সমস্যা হয়। এছাড়া পরিপাকতন্ত্রে খাবার দীর্ঘ সময় নিয়ে হজম হলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যার ঝুকি বাড়ে।
আসুন যেনে নেই কোষ্ঠকাঠিন্যের কিছু কারণ:
# আমরা যদি নিয়মিত পানি পান না করি তাহলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুকি অনেক অংশে বেড়ে যায়। পানির পরিমান শরীরে কমে গেলে আমাদের এই সমস্যা দেখা দেয়। আমদের সকলকেই প্রচুর পরিমাণে পানি গ্রহণ করতে হবে এর হাত থেকে রক্ষার্থে।
# আঁশ জাতীয় খাবার কম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। আমরা যদি ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাবার, ফলমূল, শাকসবজি কম গ্রহণ করি তাহলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হতে পারে।
# শারীরিক সমস্যা যেমন ডায়াবেটিস, মস্তিষ্কে টিউমার, অন্ত্রনালিতে ক্যন্সার ইত্যাদি কারনে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
# যদি নিয়মিত হাঁটাচলা কম করা অথবা শরীরচর্চা না করা হয় তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। আমরা যদি কোন কারনে অথবা কোন অসুখে দীর্ঘদিন বিসানায় শুয়ে থাকি তাহলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুকি বাড়ে।
# এছাড়া নানান ওষুধের অতীব মাত্রায় গ্রহণ অথবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য তেমন বড় ধরনের সমস্যা না হলেও এর থেকে হতে পারে নানান সব জটিল রোগ। তাই আমাদের এই রোগ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা নানান ওষুধপত্র পেয়ে থাকি তবে আমাদের কিছু ঘরোয়া প্রক্রিয়া দ্বারা আমরা খুব সহজেই এই কোষ্ঠকাঠিন্যের মত রোগের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারি। আসুন যেনে নেই কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে বাঁচার কিছু
উপায়
# নিয়মিত আঁশ জাতীয় খাবার বেশি খেলে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা পাই। কোষ্ঠকাঠিন্য অবস্থায় আমারা অনেকেই পাকা কলা খেয়ে থাকি কারণ কলাতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে যা আমাদের মলকে নরম করে। পাকা কলা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে যার ফলে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হই।
# দুধের সাথে এলাচ মিশিয়ে খেলে, আমরা একটি বড় এলাচ এ কাপ দুধে রাতভর ভিজিয়ে রাখার পরদিন যদি ওই এলাচ সহ দুধ আমরা গ্রহণ করি তাহলে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে অনেকটা আরোগ্য লাভ করতে পারবো। যদি আমাদের কার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা খুব বেশি হয়ে থাকে তাহলে আমাদের দিনে রাতে ২ বার এইভাবে এলাচ দুধ গ্রহণ করতে হবে।
# লেবুর রসের সাথে মধু মিশিয়ে নিয়মিত পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যায়। প্রতিদিন এক গ্লাস গরম পানিতে লেবুর রস আর সাথে দিন এক চামচ মধু তারপর ভালো করে মিশিয়ে পান করুন। নিয়মিত পান করলে এর ফলাফল চোখে পরবে খুবি দ্রুত। এর দ্রুত কার্যকারিতার জন্যে দিনে ২বার করে এই মিশ্রণ পান করুন।
# কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় শাকসবজি রাখতে হবে প্রতিনিয়ত। সবুজ শাক আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আমাদের মুক্তি দেয়। তবে জটিল কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় পালং শাকের রস বানিয়ে তা দিনে দুইবার করে অর্ধেক পানির সাথে মিশিয়ে খেলে আমরা খুব কম সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাচতে পারবো।
এছাড়া আঁশ জাতীয় ফল যেমন কমলা, নাশপাতি খেয়েও আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারি। নাশপাতিতে প্রচুর ফ্রুকটোজ ও সোরবিটোল থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য খুবি দ্রুত দূর করে থাকে। এর পাশাপাশি ডুমুর ফল, আলুবোখারা, কিউই ফল, বেরি ফলের মতো কিছু বিদেশি ফল ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে থাকে।