দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের এই ব্যস্তময় জীবনের মাঝে নিজেদের শারীরিক চাহিদার পাশাপাশি সঠিকভাবে খাবার খাওয়ার সময় করাও যেন মুশকিল হয়ে পড়ে। নানাবিধ রোগ বালাইয়ের জন্য আমাদের বিশৃঙ্খল জীবনযাপন দায়ী।
আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন সকল কর্মকাণ্ডকে একটি রুটিনে নিয়ে আসতে না পারি তাহলে আমাদের দৈনন্দিন জীবন ব্যাবস্থা হয়ে পড়ে ঝুঁকিময়। আমরা অনেকেই নিজেদের তৈরি করা রুটিন অনুসরণ করে থাকি। তবে কি আমরা একবার ভেবে দেখেছি আমাদের তৈরি করা রুটিন স্বাস্থ্যকর কিনা? আমাদের দৈনন্দিন রুটিন হতে হবে স্বাস্থ্যকর যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিস্রাম, খাবার, ঘুম, সময় ইত্যাদি থাকবে সঠিক পরিমাপে। সুসাস্থ্যময় একটি রুটিন আমাদের শারীরিক সচ্ছলতার পাশাপাশি আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
সকালঃ যদি আমাদের রুটিনের শুরুটা হয় সঠিক ভাবে তাহলে সম্পূর্ণ দিন কাটবে শান্তিময় ভাবেই। সকালের শুরুতেই আমাদের সকলের উচিত নিয়মিত ব্যায়াম করা। সকাল সকাল নিয়মকরে ব্যায়াম করতে হবে। সকালে হাঁটা অথবা দৌড়ানো একটি খুবি কার্যকরী ব্যায়াম। আমাদের সকলের উচিত ঘুম থেকে তারাতারি ওঠা যার ফলে আমরা খুব সহজেই সকালের ব্যায়াম করতে পারবো। সকালে পরিবেশ খুব সতেজ থাকে যার ফলে আমাদের শরীর ও মন উভয় তাজা থাকে। নিয়মিত হাঁটাচলার ফলে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমে। সকালে হাঁটার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে। হাঁটা আমাদের হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। শারীরিক সতেজতা, ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে নিয়মিত সকালের হাঁটা অথবা ব্যায়াম একটি কার্যকারী ভুমিকা পালন করে থাকে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কোন বিকল্প নেই। সুস্থতার জন্য আমাদের সকলকে নিয়মিত গোসল করতে হবে। নিয়মিত হালকা গরম পানি দ্বারা গোসল করলে শারীরিক প্রদাহ কমে যায়। বাতের ব্যাথা দূরীকরণে হালকা গরম পানির গোসল খুবি কার্যকরী। গরম পানির গোসলে সাইনোসাইটিসের পাশাপাশি শ্বাসকষ্টে বা হাঁপানিতেও উপশম মিলে।
সময়মত খাবারঃ অনিয়মিত খাবার আমাদের জীবন ব্যাবস্থায় সৃষ্টি করতে পারে হাজারো সমস্যা। খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের সকালের খাবারের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে। সকালের খাবারে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি গ্রহণ করা হয় তা সারাদিন আমাদের শরীরে প্রভাব ফেলে। সকালে নিয়মিত খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের শর্করা, আমিষ, ভিটামিন সকল খাদ্য গুন গ্রহণের ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। সকালের খাবার খাওয়ার সময় যাতে বেশি দেরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে কারন সকালের খাবারে দেরি হলে আমাদের শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আমাদের দুপুরের খাবার সময়মত খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। দুপুরে একটু বেশি খাওয়া ভালো তাতে করে রাতে কম খাওয়া যায়। রাতে বেশি পরিমাণে খাবার গ্রহণ করা শারীরিক দুরবলতা বৃদ্ধি করতে পারে। রাতে খাবারের পর একটু হাঁটাহাঁটি করা শরীরের জন্যে বেশ উপকারী। দিনে দুই এক কাপ রঙ চা খাওয়া যেতে পারে। আমাদের নিয়মিত খাবারের তালিকায় ফলমূল রাখা বাঞ্ছনীয়।
ঘুমঃ ঘুম আমাদের শরীরের প্রশান্তি জগাতে ও আমাদের শরীরকে সুস্থ্য রাখতে প্রত্যক্ষ ভুমিকা পালন করে। আমাদের নিয়ম করে দৈনিক ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। আমাদের সকলের রাতে খাবার পর একটু দেরিতে ঘুমাতে যেতে হবে। খাবারের সাথে সাথে ঘুমানো উচিত না। ঘুমের ব্যাঘাতের ফলে আমাদের শরীর খুব দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে। রাতে ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, টিভি ইত্যাদি না চালানো ভালো এতে করে আমাদের ঘুমে বাধা আসবেনা। তবে রাতে ঘুমানোর আগে বই পড়া বা গান শোনা যেতে পারে।