স্বাস্থ্য কথা

ইয়াবা সেবনকারীর শারীরিক ভয়াবহতা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে শুধু একটি তাজা প্রানি নষ্ট হয়ে যায় তাই নয় এর প্রভাবে নষ্ট হয়ে যায় একটি সম্পূর্ণ পরিবার। আজ জেনে নিন মাদক ইয়াবা সেবনকারীর শারীরিক ভয়াবহতা সম্পর্কে।

মাদক বা নেশাদ্রব্য আমরা যাই বলি না কেন এই রাস্তা গ্রহণের ফলে অসংখ্য পরিবার হারিয়েছে তাদের আদরের সন্তানকে অসংখ্য সন্তান হারিয়েছে তার উদ্দম শান্তিময় জীবন কে। মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে শুধু একটি তাজা প্রানি নষ্ট হয়ে যায় তাই নয় এর প্রভাবে নষ্ট হয়ে যায় একটি সম্পূর্ণ পরিবার, ভেঙে যায় আবেগের বন্ধন, নষ্ট হয়ে যায় সম্পর্ক এবং ধ্বংস হয়ে যায় হাজারো প্রাণ। সম্প্রতি আমাদের দেশে হাজারো মাদকদ্রব্যের মধ্যে ইয়াবা খুবই জনপ্রিয় এবং প্রভাব সৃষ্টিকারী একটি মাদকদ্রব্য। ইয়াবা এমন একটি মাদকদ্রব্য যা বহন করা অন্যান্য মাদকদ্রব্য থেকে সুবিধা যার ফলে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবা ব্যবসায় তাদের মনোনিবেশ করেছেন। এটি এমন একটি মাদক যা সেবন করলে তা যেন গ্রহণ করতেই ইচ্ছে হয়। এই মাদকের নেশা যেন কোনক্রমে থামতে চায় না যার ফলে এই মাদক আমাদের যুব সমাজকে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ইয়াবার মরণ ছোবলের প্রভাবে বিপথগামী ও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে পরিবার সমাজ ও ব্যক্তি জীবন। দীর্ঘদিন যাবত ইয়াবা সেবনের ফলে আমাদের শারীরিক ও মানসিক সকল দিক থেকে বিপর্যয় হয়ে থাকে। এই ইয়াবার মরণ ছোবলের খুব সহজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে লাখো তাজা প্রাণ। আমরা আলোচনা করবো এই ইয়াবার কুফল সম্পর্কে এবং এর কারণে শারীরিক যেসকল জটিলতা হয়ে থাকে।

রক্তচাপ বৃদ্ধি

ইয়াবা সেবনের ফলে আমাদের হৃদস্পন্দন খুব দ্রুত আকারে বৃদ্ধি পায় যার ফলে আমাদের শারীরিক রক্তচাপ বৃদ্ধি হয়। রক্তচাপ বৃদ্ধির ফলে আমাদের শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে এর মধ্যে তীব্র মাথাব্যথা অন্যতম। অতিরিক্ত রক্ত চাপ হওয়ার ফলে যেকোনো সময় ফিট হয়ে যাওয়া অথবা জ্ঞান হারানোর আশংকা বৃদ্ধিপায়। রক্তচাপ বৃদ্ধির ফলে শরীরে খিঁচুনি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে যা ইয়াবা সেবনের ফলে আমাদের শরীরের মদ্ধ্যে বৃহৎ আকার ধারণ করতে পারে।

Related Post

মস্তিষ্কের সমস্যা

যেকোনো ধরনের নেশা দ্রব্য গ্রহণ এর ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দেয় মস্তিষ্কে। মাদকদ্রব্য গ্রহনের ফলে মস্তিষ্কের উপর প্রভাব এমন মাত্রায় পরে যা একজন ব্যাক্তির চিন্তা ধারা লোপ পেতে থাকে। ইয়াবা সেবনেও মস্তিষ্কে কিছু ছোট ছোট রক্তনালির নষ্ট হয়ে যায় যার ফলে দীর্ঘদিন ইয়াবা সেবন করলে মস্তিষ্কের মধ্যে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যেতে পরে এবং মস্তিষ্কের মধ্যে নানাবিধ সমস্যা ও ব্যথা অনুভূত হতে পারে। দীর্ঘদিন ইয়াবা সেবন করলে অল্প বয়সে ব্রেইন স্ট্রোক করার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় যার ফলে প্যারালাইজড হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ব্রেন স্ট্রোকের ফলে যে কেউই চলাচল অক্ষম হয়ে পড়ে যেতে পারে বর্তমানে এর মাত্রা প্রায় ৯৫ শতাংশ।

কিডনি সমস্যা

ইয়াবা সেবনের ফলে আমাদের কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ইয়াবা সেবনের ফলে লিভার সিরোসিস থেকে লিভার ক্যান্সারে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকে এছাড়া শরীরে এক ধরনের ভয়ানক তাপ তৈরি হয় যা আমাদের কিডনির জন্য খুবি ক্ষতিকর। এছাড়া ইয়াবা সেবনের ফলে কিডনির মধ্যে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে যার ফলে কিডনি ফেইলের পাশাপাশি কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ক্ষুধা কমে যাওয়া

ইয়াবা গ্রহনের ফলে সেবনকারীর শরীরে নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় যার মধ্যে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হল ক্ষুধা কমে যাওয়া। এ খুদাবিহীনতার ফলে খাবার শরীরে কম প্রবেশ করে যার ফলে শরীর আস্তে আস্তে ওজন হারাতে থাকে। ওজনহীনতার কারনে মাঝেমধ্যে বুকের মধ্যে ধরফর করে এবং অস্থিরতা কাজ করে যার ফলে হার্টের সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে। অতিরিক্ত হারে ইয়াবা সেবনের ফলে শারীরিক জটিলতার মধ্যে হার্টের সমস্যা তৈরি হয় যার ফলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

কর্মক্ষমতা হারানো

অতিরিক্ত ইয়াবা গ্রহণের ফলে শরীর অলস হয়ে পড়ে যার ফলে পড়াশোনা ও দৈনন্দিন কাজকর্মের আগ্রহ অতিমাত্রায় কমতে থাকে। ইয়াবা সেবনের ফলে মানুষ কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। অধিক হারে ইয়াবা গ্রহণের ফলে হাইপোথারমিয়া বা উচ্চ তাপমাত্রা হয়ে থাকে যার ফলে শরীরে জ্বালাপোড়া বৃদ্ধি পায়। শারীরিক জটিলতার কারণে ঘুম কমে যায়। অনেক সময় লক্ষনীয় যে ইয়াবা সেবনকারীরা রাত জেগে থাকে কেউ কেউ টানা সাত থেকে দশ রাত পর্যন্ত জেগে থাকে। রাত জাগার পাশাপাশি অনেকেই সারাদিনরাত একটা না ঘুমিয়ে পার করে দেয় যা ইয়াবা সেবনকারীদের অস্বাভাবিক আচরণ গুলোর মধ্যে একটি।
এছাড়া ইয়াবা সেবনকারীদের মধ্যে ডিপ্রেশন বা হতাশাজনিত নানা রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে এর ফলে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। অপরাধপ্রবণতার পাশাপাশি আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে অনেকে হঠাৎ আত্মহত্যা করে বসতে পারে। তাই ইয়াবা মাদক ও সকল ধরনের মাদক দ্রব্য থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে এজন্য পারিবারিক ও সামাজিক সকল প্রকার সহযোগিতা গ্রহণ করতে হবে।

This post was last modified on মে ৩০, ২০২৩ 4:35 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

জিভ দেখেও কিন্তু রোগ চেনা যায়! কোন উপসর্গ দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ শরীরে পানির ঘাটতি হলেও জিভ সাদা হয়ে যায়। নিয়মিত…

% দিন আগে

বেড়ে ওঠার সময় শিশুকে দুধ খাওয়ার সঙ্গে রুটিনেও আনতে হবে বদল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার শিশু বেড়ে ওঠার সময় কেবলমাত্র দুধভাত ও শাকসব্জি খাওয়ানোই…

% দিন আগে

ফেসবুকে পছন্দের পুরনো রিলস খুঁজে পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফেসবুকে কখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় পেরিয়ে যায় বোঝা যায়…

% দিন আগে

শীঘ্রই আসছে জিমের ‘মেঘবালিকা’ নামে নতুন নাটক

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী মাফতুহা জান্নাত জিম। মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজে…

% দিন আগে

স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বন্দুকধারীর গুলি: আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে গুলি করে অজ্ঞাত বন্দুকধারী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম…

% দিন আগে

পৃথিবীতে এমন ৫টি দেশ রয়েছে যেখানে ২৪ ঘণ্টাই দিনের আলো থাকে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি বিশ্বের প্রায় জায়গাতেই ১২ ঘণ্টার দিন, ১২ ঘণ্টার…

% দিন আগে