জিভ দেখেও কিন্তু রোগ চেনা যায়! কোন উপসর্গ দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ শরীরে পানির ঘাটতি হলেও জিভ সাদা হয়ে যায়। নিয়মিত মদ্যপান, ধূমপান করলেও জিভের উপর সাদা স্তর পড়ে যায়। তাছাড়াও কিছু রোগ জিভ দেখেই যাচাই করেন চিকিৎসকরা। কখন সাবধান হবেন সেটি আজ জেনে নিন।

আমাদের জ্বরই হোক কিংবা পেটের যন্ত্রণায় হোক- চিকিৎসকেদের কাছে গেলেই তারা প্রথমেই রোগীর জিভ দেখতে চান। কেনো বলুন তো? কারণ অন্য কিছুই নয়, খাবার ভালো না মন্দ বুঝতে যেমন জিভের উপরে ভরসা রাখতে হয়, তেমনি শরীরের হাল বুঝতেও কাজে আসে এই জিভ। জিভের স্বাভাবিক লাল রঙের আভা বদলে গেলে তা বিভিন্ন সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। অনেক সময় জিভের উপর সাদাটে আস্তরণও পড়তে দেখা যায়। তাহলে কেনো হয় এমন? চিকিৎসকদের মতে মুখের স্বাস্থ্যের সঠিক খেয়াল না রাখলে জিভের উপর সাদা আস্তরণ পড়তে পারে। ব্যাক্টেরিয়া এবং ছত্রাকের আক্রমণে এমনটি হতে পারে। শরীরে পানি ঘাটতি হলেও অনেক সময় জিভ সাদা হয়ে যায়। নিয়মিত মদ্যপান, ধূমপান করলেও জিভের উপর সাদা স্তর পড়ে। তাছাড়াও কিছু রোগের ক্ষেত্রেও জিভ দেখেই যাচাই করেন চিকিৎসকরা।

কি কি কারণে জিভ এমন হতে পারে?

Related Post

# অনেক সময় লিউকোপ্লাকিয়ার কারণেও এমনটি হতে পারে। নাম খটমট হলেও সমস্যাটি সাধারণত খুব একটা উদ্বেগের কিন্তু নয়। জিভ বা মুখগহ্বরের উপরের ত্বকের কোষের অত্যাধিক বৃদ্ধির কারণেও এই সমস্যা দেখা দেয়। এই কোষগুলো কেরাটিন নামে একটি প্রোটিনের সঙ্গে মিশে জিভে একটি সাদা আস্তরণ তৈরি করে থাকে। সাধারণত নিজে থেকে সেরে গেলেও কখনও কখনও লিউকোপ্লাকিয়া থেকে মুখের ক্যান্সারের আশঙ্কাও থাকে। তাই অবহেলা না করে সময় থাকতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

# মুখের ভিতরে ‘ক্যান্ডিডা ইস্ট’ নামে এক প্রকার ছত্রাক থাকে। এই ছত্রাকটি মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলে অনেক সময় জিভে সাদাটে আস্তরণ তৈরি হতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ওরাল থ্রাশ। সাধারণত এটি গুরুতর সমস্যা না হলেও ওরাল থ্রাশ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়েও দিতে পারে। তাই এই সমস্যার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে কোনও গভীর সমস্যা।

# আমরা অনেকেই জানি সিফিলিস একটি যৌন রোগ। জিভে সাদা রঙের আস্তরণ এই রোগের অন্যতম লক্ষণও হতে পারে। সাধারণত অসুরক্ষিত যৌন মিলনের মধ্যদিয়ে এই রোগের ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে। সময় মতো চিকিৎসা না হলে এই রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই জিভে এই ধরনের কোনও সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

# জিভের রং হঠাৎ নীলচে কিংবা বেগুনি হয়ে গেলেও বুঝতে হবে শরীরে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়েছে। এ ছাড়াও, শ্বাসযন্ত্র বা কার্ডিয়োভাসকুলারের কোনও সমস্যা থাকলেও জিভের রং নীল হতে পারে।

# জিভের রং একেবারে ফ্যাকাশে হয়ে গেলে তা রক্তে আয়রণের অভাবের ইঙ্গিতও বহন করে। আবার জিভের উপর লাল ও সাদা চাকা চাকা দাগ অটোইমিউন রোগের ইঙ্গিত হতে পারে, তাই এই সমস্ত সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on মে ১২, ২০২৪ 12:27 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

কোন ফলটি বেমানান? ১৫ সেকেন্ডে খুঁজে পেলেই বুঝতে হবে আপনি বুদ্ধিমান!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই ছবিতে প্রতিটি ফলই রয়েছে জোড়ায় জোড়ায়। আম-কলা-আপেলের মতো চেনা…

% দিন আগে

এক অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ১ জুন ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…

% দিন আগে

মাঝে-মধ্যেই ঝিঁঝি ধরে কী কারণে? ডায়েটে যেসব খাবার রাখতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রক্তপ্রবাহের গতি শ্লথ হলে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ার মতো লক্ষণ…

% দিন আগে

ওজন কমাসহ পুদিনা পাতার পানি খেলে আরও অনেক উপকার পাবেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুদিনা পাতার পানি খেলে কোনও সুফল পাওয়া যাবে না, সেটি…

% দিন আগে

ইনফিনিক্সের বাজেট ফোন স্মার্ট ৮ প্রো সারাদেশে পাওয়া যাচ্ছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের বাজারে এলো ইনফিনিক্সের নতুন স্মার্টফোন ‘স্মার্ট ৮ প্রো’। ব্র্যান্ডটির…

% দিন আগে

আসিফ আলতাফের নতুন গান ‘টাকা’ [ভিডিও]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জীবনমুখী গানের তরুণ শিল্পী আসিফ আলতাফ এবার গেয়েছেন ‘টাকা’ শিরোনামে…

% দিন আগে