দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই বিস্ময়কর খবর। অনেকেরই হয়তো ধারণাই নেই যে ব্রিটিশ রানির মুকুটের দাম কতো হতে পারে। শুনলে হয়তো আমরা বিস্মিত হবেন!
আমরা সবাই জানি ব্রিটিশ রাজপরিবারের সম্পদের ভাণ্ডার অসংখ্য মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রীতে ভরপুর। রাজপ্রাসাদ হতে শুরু করে রাজপরিবারের প্রতিটি আসবাবের কারুকার্যই যেনো চোখ ধাঁধানো। রাজ্যাভিষেকের সময় রীতি মেনে নতুন রাজা কিংবা রানিকে মুকুট পরতে হয়।
রাজপরিবারের ঐতিহ্যবাহী এই মুকুটের গায়ে লাগানো রয়েছে বহু মহা মূল্যবান রত্ন। ব্রিটিশ রাজপরিবারের ওই মুকুটের মূল্য কতো তা কী আপনি জানেন?
সংবাদ মাধ্যমের এক তথ্যে জানা যায়, বেগুনি রঙের ভেলভেট কাপড়ে মোড়া ওই মুকুটটির ওজন প্রায় আড়াই কিলোগ্রাম। বেশ ভারি হওয়ায় এই মুকুট পরে কিছু পড়ার জন্য কেও মাথাও ঝোঁকাতে পারেন না।
মাথা ঝোঁকালে মুকুটের ভারে ঘাড়ে লেগে যেতে পারে এবং মুকুট মাথা থেকে খুলেও যেতে পারে। তাই লেখাটাকে চোখের সমানে এনে তবেই পড়তে হয়।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরা, কালিনান এই রাজমুকুটটিতে শোভা পাচ্ছে। থমাস কালিনান দক্ষিণ আফ্রিকার খনি হতে এই হীরা উদ্ধার করেছিলেন। সেই সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় ছিল ব্রিটিশ আধিপত্য। আর তাই উদ্ধার হওয়া ওই হীরা লুঠ করে নিয়েছিলেন সপ্তম এডওয়ার্ড। জানা যায় যে, এই হীরাকে ৯টি টুকরা করা হয়। তার মধ্যে দু’টি টুকরা মুকুটে লাগানো হয়। বাকি ৭ টুকরা ব্রিটিশ রানির ব্যক্তিগত সংগ্রহশালাতেই শোভা পাচ্ছে।
ব্রিটিশ রাজা পঞ্চম জর্জের রাজ্যাভিষেকের পূর্বে ১৯১০ সালে এই হীরার অংশ মুকুটে লাগানো হয়। মুকুটে লাগানো এই কালিনান হীরার মূল্য সাড়ে ৫২ কোটি ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৭১২ কোটি রুপি, আবার বাংলাদেশী টাকায় এর দাম দাঁড়াচ্ছে ৪ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা!
সব মিলিয়ে পুরা মুকুটটার মূল্য তাহলে কতো হবে? মনে করা হয় যে, এই মুকুটের মোট মূল্য সাড়ে ৩শ’ কোটি ডলার! অর্থাৎ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার মতো!
তবে প্রথমে নাকি মুকুটের মূল্যবান রত্নগুলো বিভিন্ন রাজ পরিবার হতে ধার করা হতো। প্রতিবার রাজ্যাভিষেকের সময় মূল্যবান রত্নে সেজে উঠতো ওই মুকুট। রাজ্যাভিষেকের পর তা আবার খুলে ফেলা হতো।
তবে ১৯১১ সালে পঞ্চম জর্জের রাজ্যাভিষেকের সময় হতে এই রীতি বদলে ফেলা হয়। সোনা, হীরার মতো নানা মূল্যবান রত্ন দিয়ে পাকাপাকিভাবেই সেজে ওঠে মুকুটটি।
এই মুকুটটি বর্তমানে রাখা রয়েছে টাওয়ার অব লন্ডনে। মধ্য লন্ডনে টেমস নদীর উত্তর দিকে রয়েছে এই টাওয়ারটি। মুকুটটির প্রতিটা অংশের পৃথক মূল্য রয়েছে। এতে রয়েছে ৭টি নীলকান্ত মণি, যার মূল্য ২১ লাখ ৪২ হাজার ডলার। ২৬টি টুরমালিন রয়েছে এই মুকুটে, যার মূল্য প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ডলার, অর্থাৎ প্রায় আড়াই কোটি টাকার মতো।
জানা গেছে, এই মুকুটের বেশি ভাগ অংশই সোনা দিয়েই তৈরি। ২২ ক্যারেটের সোনা রয়েছে এই মুকটটিতে, যার মূল্য প্রায় ৮৭ হাজার ডলার। এই মুকুটের সবচেয়ে কম দামি অংশ কোনটি তা জানেন? বেগুনি রঙের ভেলভেট কাপড়টি হলো সবচেয়ে কম দামি। ঐতিহাসিক মূল্য যুক্ত এই কাপড়ের দাম মোটামুটিভাবে ৩ ডলার মাত্র।
মুকুটের একেবারে নীচে মাথায় ঠিকভাবে বসার জন্য যে আরমাইন রিং রয়েছে, সেটিরও দাম বেশ কম, সেটির দাম ৩৪ ডলার।