দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘুমের ঘোরে হেঁটে বেড়ানো, ঘুমের ঘোরে কথা বলা বা চিত্কার করার কথা আমরা দেখেছি মাঝে মধ্যে। কিন্তু তাই বলে ঘুমের ঘোরে ছবি আঁকার মতো ঘটনা এটিই প্রথম।
সংবাদ মাধ্যমের এক খবরে জানা গেছে, এবার এই ঘুমের ঘোরে একেবারে চোখ বুজে অসাধারণ ছবি এঁকে সারা দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জনৈক শিল্পী। এভাবে ঘুমের ঘোরে একটি নয়, শত শত ছবি আঁকেন এই শিল্পী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংগ্রহেও রয়েছে এই শিল্পীর আঁকা ছবি। অবাক করা এই শিল্পীর নাম হলো লী হ্যাডউইন।
৪৪ বছর বয়সী শিল্পী হ্যাডউইনের জন্ম ইংল্যান্ডের ওয়েলসে। জানা গেছে, চার বছর বয়স হতেই রং তুলি হাতে ঘুমের মধ্যে ছবি আঁকতে শুরু করেন হ্যাডউইন। তার পরিবারের লোকজনও বিষয়টি অনেক আগেই জানতেন। হ্যাডউইন যখন কিশোর, তখন একদিন ঘুম হতে উঠে তিনি দেখতে পান তাঁর পাশে একটি কাগজে হলিউড অভিনেত্রী মেরিলিন মনরোর ছবি আঁকা রয়েছে। ওই স্কেচ ও নিখুঁত স্ট্রোক দেখে মুগ্ধ হয়ে যান হ্যাডউইন নিজেই। পরে বুঝতে পারলেন যে ছবিটি ঘুমের মধ্যে তিনিই এঁকেছেন।
এই ঘটনা জানার পর হ্যাডউইনকে নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানীরা। শেষমেশ হ্যাডউইনের বিষয়টি তারাও মেনে নেন। মনোবিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের ধারণা মতে, ছোটবেলার কোনো ঘটনা থেকে তৈরি হওয়া ভয় বা আঘাতের কারণে একরকম মানসিক জটিলতার সৃষ্টিও হতে পারে।
ইংল্যান্ডের ওয়েলসের কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পেনি লুইস জানিয়েছেন, ঘুমন্ত অবস্থায় মস্তিষ্কের যৌক্তিক অংশটি নিষ্ক্রিয় থাকলেও লিম্বিক সিস্টেম সক্রিয় থাকে। সে কারণে ঘুমন্ত অবস্থায় হ্যাডউইনের মস্তিষ্কের লিম্বিক সিস্টেম অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় হয়। সে জন্যই ঘুমন্ত অবস্থায় এমন অসাধারণ ছবি আঁকতে পারেন হ্যাডউইন।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৬শ’রও বেশি ছবি এঁকেছেন হ্যাডউইন। ইউরোপের একাধিক প্রদর্শনীতে চড়া দামে বিক্রিও হয়েছে তাঁর আঁকা ওইসব ছবিগুলো। এর মধ্যে আবার কোনো কোনোটি প্রায় তিন থেকে ৪ হাজার ইউরোতেও বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশের টাকায় যা দাঁড়াচ্ছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ।
এক সময় চিত্রশিল্পী হিসাবে হ্যাডউইনের সুনাম ইউরোপের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। যে কারণে হ্যাডউইনকে নিয়ে ‘স্লিপওয়াকার সিক্রেটস অব দ্য নাইট’ নামে একটি তথ্যচিত্র ইতিমধ্যেই প্রদর্শিতও হয়েছে। তবে লী হ্যাডউইনের এভাবে ছবি আঁকার বিষয়টি বিশ্বের নামীদামী চিকিত্সক এবং মনোবিজ্ঞানীদের কাছে এখনও রীতিমতো বিস্মিয় হয়ে রয়েছে।