দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত ২৭ ডিসেম্বরের কাহিনী। হাতিরঝিলে দেখা গিয়েছিলো এক ভিন্নধর্মী চিত্র। সেখানে দেখা যায় এক নারী এক পুরুষের গলায় রশি বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। পুরুষটি তখন হাঁটুতে ভর দিয়ে হেঁটে চলেছে, কিছুটা কুকুরের মতোই হেঁটে চলেছেন।
ওই বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করার আগে জেনে নেওয়া যাক, এটি আসলে কী এবং কেনোই বা এমনি করা হয়েছে। এটি মূলত ‘পারফর্মিং আর্ট’ ফ্রম পোর্টফোলিও অফ ডগডনেস। পশ্চিমা ধারণার এই পারফর্মিং আর্ট প্রথম দেখা গিয়েছিলো অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার প্রকাশ্য রাস্তায় ১৯৬৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ভ্যালি এক্সপোর্ট এবং পিটার উইবেল এই পারফর্মিং আর্টে অংশ নিয়েছিলেন। অপরদিকে রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায় এই পারফর্মিং আর্টের শিল্পীরা হলেন টুটুল চৌধুরী এবং সেঁজুতি। জানা গেছে সেঁজুতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেইন্টিং ও ড্রয়িংয়ের শিক্ষার্থী।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, সেঁজুতি এই বিষয়টিকে ‘সমাজতাত্ত্বিক’ ও ‘আচরণমূলক’ কেসস্ট্যাডি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, এই পারফর্মিং আর্টের উদ্দেশ্যই হলো, কার্টুনে যেমন বিভিন্ন প্রাণীকে মানুষের মতো কথা বলা এবং আচরণগতভাবে দেখানো হয়, ঠিক তেমনি এখানে মানুষকে প্রাণী চরিত্রে দেখানো হয়। সেঁজুতি লেখক ক্লদিয়া স্লানারের লেখাকে উদ্ধৃত করে লিখেছেন যে, ‘এই ছবিতে একজন নারী একজন পুরুষকে গলায় রশি বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। এটা আমাদের নৈতিক এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কিংবা আরও ভালো কোনো সামাজিক অবস্থার চিত্র অবশ্যই দেখায় না। বরং সমাজ আমাদের ওপর যে সিস্টেম চাপিয়ে দিয়েছে সেটিই ফুটে উঠে এই দৃশ্রে। আমরা যে কাজটা করেছি এই কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ও এই কাজটাকে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিয়েছে সেটিই আমরা মূলত দেখতে চেয়েছি।’
সেদিনের ওই দৃশ্য এবং বিষয়টি নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় হৈ চৈ পড়ে যাওয়ার পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা করেছেন সেঁজুতি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পারফর্মিং আর্টের ছবি এবং ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেতিবাচকভাবে। সেখানে বলা হচ্ছে যে, হাতিরঝিলে দেখা গেলো মানব কুকুর বা আমাদের সমাজে ঢুকে গেলো পশ্চিমা নিম্ন প্রকৃতির সংস্কৃতি। এর জবাবে সেঁজুতি বলেন, ‘রোগ হলে যেমন চিকিৎসকের কাছে যাওন লাগে তবে তার আগে রোগটা নির্ণয় করতে হয়। এখন পরিচিত রোগের সঙ্গে তো পরিচিত তবে অপরিচিত/অজানা রোগ হইলে কেম্নে বুঝবা? এখন আমি অসুস্থ হইলে সেটি কষ্ট দেয় আগে কাকে! আমার পরিবারকেই। আমরা অসুস্থ হইলে কাকে কষ্ট দেয়!! এই সমাজকে। তাই সমাজকে সুস্থ করতে হইলে আগে আমাদের সুস্থ থাকতে হবে, তাই না? তাই আমরা সুস্থ আছি কিনা অইটা পরীক্ষা করলাম মাত্র। কাটা দিয়ে কাটা তোলা বুঝে সবাই তবে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস কেও মন দিয়ে কখনও করে না।’