দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য ভারত অর্থাৎ কোলকাতা ভ্রমণ অন্যতম আকর্ষণের একটি স্থান। আবার ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে গেলে কোলকাতা হয়েই যেতে হবে।
অনেককেই চিকিৎসার প্রয়োজনেও ভারতে যেতে হয়। ভারতীয় ভিসা হবার পর বিভিন্ন রুটে ঢাকা হতে কোলকাতা যাওয়া যায়। তবে কিভাবে এবং কত খরচে বা কোন রুটে কম খরচে বা সহজে কোলকাতা যাওয়া যায় সেই ব্যাপারে সবারই কম বেশি একটু দ্বিধাতেই থাকে। সেই উদ্দেশ্যেই আজকে রয়েছে কোলকাতা যাওয়ার বিভিন্ন উপায় সবার জন্য তুলে ধরা হলো।
বাংলাদেশ থেকে কোলকাতা যাবার সবচেয়ে কম সময়ে, সহজে এবং আরামে যাবার জন্যে বিমানে যাওয়া যায়। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হতে কোলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে বিভিন্ন ফ্লাইট প্রতিদিনই যাতায়াত করে থাকে। বিমানের ক্ষেত্রে কোলকাতায় যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ বিমান, ইন্ডিগো, স্পাইস জেট, এয়ার ইন্ডিয়া, নভোএয়ার ও ইউএস বাংলা উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশ হতে এয়ার ইন্ডিয়া এবং স্পাইস জেটের ফ্লাইটে কম খরচে কোলকাতা যাওয়া সম্ভব। বিমান সংস্থার উপর নির্ভর করে বিমান টিকেটের মূল্য ৪,৫০০ হতে ৬,৬০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে আগে থাকতে টিকিট কাটলে রেট একটু কম পাওয়া যায়। বিমানে চড়ে ঢাকা হতে কোলকাতা যেতে প্রায় ১ ঘন্টার মতো সময় লাগে।
বাংলাদেশ-ভারত সরকারের যৌথ উদ্যোগে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে সরাসরি ঢাকা থেকে কোলকাতা যেতে পারবেন। মৈত্রী এক্সপ্রেস শুক্র, শনি, রবি এবং বুধবার সকাল ৮.১৫ মিনিটে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন হতে কোলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এই ট্রেন দর্শনার পর গেদে বর্ডার দিয়ে কোলকাতার শিয়ালদহ স্টেশনে যায়। ঢাকা হতে কোলকাতা যেতে সময় লাগে প্রায় ৯-১৩ ঘন্টার মতো। ট্রাভেল ট্যাক্সসহ এসি সীটের জনপ্রতি ভাড়া ৩,৪০০ টাকা এবং এসি চেয়ারের জন প্রতি ২,৫০০ টাকা। তবে ৫ বছরের নীচের বাচ্চাদের ভাড়া অর্ধেক রাখা হয়।
এছাড়াও ঢাকা থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে বেনাপোল গিয়ে সেখান থেকে নেমে পায়ে হেটে ঢুকে ইমিগ্রেশন সেরে কোলকাতা যেতে পারবেন। বন্ধন এক্সপেস ট্রেন খুলনা হতে কোলকাতার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এক্ষেত্রে কোলকাতা-দমদম- বনগাঁও-পেট্রোপোল-বেনাপোল- ঝিকরগাছা-যশোর-খুলনা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস যাতায়াত করে থাকে। বন্ধন এক্সপ্রেস খুলনা হতে দুপুর দেড়টায় রওনা দিয়ে সন্ধ্যা ৭-৮টার মধ্যে কোলকাতায় পৌঁছায়। খুলনা ষ্টেশনের কাউন্টারে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট পাওয়া যায়।
বাসের ক্ষেত্রে শ্যামলী, বিআরটিসি স্ক্যানিয়া, গ্রিন লাইন, সোহাগ, দেশ ট্রাভেলস, সৌহার্দ্য রয়েল, সৌদিয়া কোচ বাসে ঢাকা থেকে কোলকাতা যেতে পারবেন। এসব বাসের মধ্যে বিআরটিসি, সোহাগ, শ্যামলী ও গ্রিন লাইনের সার্ভিস খুবই ভালো। তবে শুধুমাত্র শ্যামলী পরিবহণ এনআর বাস সরাসরি কোলকাতায় যায়। অন্য সকল পরিবহণের বাসে করে ঢাকা থেকে কোলকাতা যেতে হলে বেনাপোল এসে বর্ডার পার হয়ে ইন্ডিয়ার অংশে পৌঁছে আবার অন্য বাসে চড়তে হয়। পেট্রাপোল হয়ে কোলকাতা যেতে প্রায় ৪ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।
নন এসি বাসের ভাড়া জন প্রতি ভাড়া ৭০০-৯০০ এবং এসি বাসের ভাড়া ১৫০০-১৯০০ টাকা।
আপনি যদি কম খবরে কোলাকাতা যেতে চান তাহলে কম খরচে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরাসরি না গিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে কোলকাতা যেতে হবে। প্রথমে বেনাপোল আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসের ক্ষেত্রে- হানিফ, সোহাগ, রয়েল কোচ, এস আলম, ঈগল কিংবা সৌদিয়া এর এসি বা নন এসি বাসে ঢাকা থেকে বেনাপোল যাওয়া যাবে। ঢাকা থেকে শুধু বেনাপোল পর্যন্ত নন এসি বাস ভাড়া ৫০০-৫৫০ টাকা এবং এসি বাস ভাড়া ১০০০-১৩০০ টাকা। তবে কম খরচে যেতে হলে নন এসি বাসেই ঢাকা থেকে বেনাপোল পৌঁছাতে হবে।
বেনাপোল পৌঁছে বেনাপোল ষ্টেশন হতে বেনাপোল ইমিগ্রেশন যেতে ২০-৩০ টাকা আপনার খরচ হবে। তারপর বেনাপোলে বর্ডার পার হয়ে অটোতে ৩০/৪০ রুপি খরচ করেই হরিদাসপুর ভারতীয় ইমিগ্রেশন দপ্তরে যেতে হবে। ইমিগ্রেশন শেষ হলে অটোতে শেয়ার জনপ্রতি ২৫/৩০ রুপিতে বনগাঁও রেল ষ্টেশন যেতে পারেন। তারপর বনগাঁও ষ্টেশন হতে জনপ্রতি ২০-৩০ রুপি দিয়ে লোকাল ট্রেনের টিকেট কেটে শিয়ালদহ ষ্টেশনে চলে যেতে পারেন কিংবা বনগাঁও থেকে দমদম ষ্টেশন। শিয়ালদহ বা দম দম ষ্টেশন থেকে মেট্রো রেলে এসপ্ল্যানেডে (কোলকাতা নিউ মার্কেট স্টপেজ) বা পার্ক স্ট্রীটে যেতে ভাড়া লাগবে মাত্র ১০ রুপি।
বনগাঁও হতে ট্রেনে করে এইভাবে কোলকাতা যেতে সময় লাগবে প্রায় ২ ঘন্টার মতো। সব মিলিয়ে কম খরচের মধ্যে ঢাকা থেকে কোলকাতা যেতে ৭০০-৭৫০ টাকা খরচ হবে। এছাড়াও চাইলে ইমিগ্রেশন শেষে ট্রেনে না গিয়ে বাসে ননএসি/এসি ১৫০-২৮০ রুপিতেও কোলকাতা যেতে পারবেন। তবে বাসে গেলে ট্রেনের চেয়ে সময় অনেক বেশি লাগবে। প্রায় ৪ থেকে ৪.৩০ ঘন্টার মতো সময় লাগবে।
গেদে হয়ে যেতে হলে আপনাকে দর্শনা রেল স্টেশন পর্যন্ত যেতে হবে। তারপর ওখান থেকে ভ্যানে করে আপনি ৩০ টাকা দিয়ে (জনপ্রতি) সীমান্ত এলাকায় যেতে পারেন। সেখানে বাংলাদেশের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন শেষ করে তারপর ভ্যানে করে গেদে চেকপোস্টে গিয়ে পৌঁছাবেন। সেখানে গিয়ে ভারতের চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন এবং গেদে স্টেশনে কাস্টমস শেষ করে লোকাল ট্রেনে উঠতে পারেন। লোকাল ট্রেনে ২৫টি স্টেশনে যাওয়ার জন্য আপনার সময় লাগবে মাত্র ৩ ঘণ্টা (নির্ধারিত সময়)। কারণ ট্রেন লোকাল হলেও এক একটি স্টেশনে হাফ মিনিটের বেশি সময় থামে না।
মৈত্রী এক্সপ্রেসের ট্রেনের টিকেট কমলাপুর রেল ষ্টেশন ও চট্টগ্রাম রেল ষ্টেশন ছাড়া অন্য কোনও ষ্টেশন থেকে কাটা যায় না।
ট্রেনের টিকেট মিনিমাম ৩০ দিন আগে অগ্রিম কাটতে পারবেন এবং কোলকাতা যাওয়ার ১০ হতে ১২ দিন আগে টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। পরবর্তী লেখায় দেওয়া হবে ভারতে কোথায় কোথায় বেড়াবেন।
This post was last modified on জানুয়ারী ৮, ২০২০ 9:55 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রায় একযুগেরও বেশি সময় পর মৌলিক গান নিয়ে মিউজিক ডোমেইনে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১৯৫১ সালের নভেম্বর মাসে বিয়ে হয় ফে ও রবার্টের। বিয়ের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৬ পৌষ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘুম থেকে উঠেই সকাল বেলা দুধ চা খেতে বারণ করেছেন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনপ্রিয় গায়ক মনির খানের প্রথম অ্যালবাম ‘তোমার কোনো দোষ নেই’।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাড়ি-ঘোড়ায় প্রবল এক সংঘর্ষ ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বাগপতে। দিল্লি-সাহারানপুর হাইওয়েতে…