দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিজ্ঞানীরা এবার জীবন্ত রোবট তৈরি করেছেন। বিশ্বে এটিই প্রথম জীবিত রোবট হিসেবে পরিগণিত হবে। ব্যাঙের স্টেম সেল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে এই রোবট, যার নাম বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন জেনোবট।
জীবন্ত এই রোবটগুলো হাঁটতে পারে এমন কি সাঁতারও কাটতে পারে। বাড়তি খাবার সরবরাহ ছাড়াই টানা কয়েক সপ্তাহ দিব্যি টিকে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম সিএনএন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্ত ও টাফটস ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) নকশার মাধ্যমে গবেষণাগারে পৃথিবীর প্রথম এই জীবন্ত রোবটটি তৈরি করেছেন। আফ্রিকান এক প্রজাতির ব্যাঙের স্টেম সেল দিয়ে রোবটটি তৈরি করা হয়েছে। এই রোবটটির প্রস্থ ১ মিলি মিটারেরও কম।
গবেষকরা আফ্রিকান ব্যাঙের ভ্রুণ হতে জীবিত স্টেম সেল সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে এর সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটিয়েছেন। তবে সুপার কম্পিউটারের নকশা অনুযায়ী আকার পেতে এটিকে বার বার কর্তন এবং পুনর্গঠন করা হয়। এটির এমন শারীরিক গঠন, যা প্রকৃতিতে আর কখনও দেখাই যায়নি।
ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্ত এই বিষয়ে জানিয়েছে, কাঙ্ক্ষিত গঠন দেওয়ার পর কোষগুচ্ছটি নিজে থেকেই যেনো তৎপর হয়ে ওঠে। ত্বকের কোষগুলো এর শরীরের কাঠামোও গঠন করে। হৃদপেশির কোষগুলোর স্পন্দন দেয় এর চলৎশক্তি। এমনকি এর রয়েছে স্বনিরাময় ক্ষমতাও। বিজ্ঞানীরা এরকম একটি রোবটকে কেটে দুই টুকরো করার পর দেখেন যে- তা নিজে থেকেই পূর্বরূপে ফেরত আসে ও আবারও চলতে শুরু করে।
এই বিষয়ে গবেষক জশুয়া বনগার্ড বলেছেন, জেনোবট কোনো গতানুগতিক রোবট নয়, আবার কোনো সাধারণ প্রাণীও নয়। এরা হলো ‘জীবন্ত যন্ত্র’। এরা একই সঙ্গে জীবন্ত এবং যন্ত্রের মতো প্রোগ্রামযোগ্য। তাছাড়া গাঠনিক দিক থেকেও জেনোবটগুলো প্রচলিত রোবটের মতো নয়। এদের কোনো চকচকে গিয়ার বা রোবটিক বাহু নেই। দেখতে গোলাপি রঙের চলন্ত ক্ষুদ্র মাংসপিণ্ডের মতো। তাছাড়া এ রোবট এমন কিছু কাজ করতে সক্ষম যা স্টিল বা প্লাস্টিকের রোবট দিয়ে সম্ভব নয়।
গবেষকরা আরও বলেন, প্রচলিত রোবটগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়েও যায়। এসব রোবট প্রাণীর স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করতে পারে। তবে জেনোবট একটি জৈবিক মেশিন হলেও পরিবেশবান্ধব ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ হবে।