দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভ্রমণ করতে কোথায় যাবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। তবে আমাদের দেশেও এমন অনেক স্থান রয়েছে যেগুলো ভ্রমণ করতে পারেন। যেমন ভ্রমণ করতে পারে প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান নওগাঁর জগদ্দল বিহার।
নওগাঁ জেলা সদর হতে ৫২ কিলোমিটার দূরে ধামইরহাট উপজেলার একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হলো এই জগদ্দল বিহার (Jagaddal Vihar)। প্রায় ৯শ’ বছরের প্রাচীন এই স্থাপত্য নিদর্শন স্থানীয়দের কাছে বটকৃষ্ণ জমিদার বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ হিসাবেও বিশেষভাবে পরিচিত। মূলত জগদ্দল মহাবিহার ১১শ’ শতাব্দী হতে ১২শ’ শতাব্দীর দিকে প্রতিষ্ঠিত একটি বৌদ্ধ বিহার এবং শিক্ষা কেন্দ্র।
ঐতিহাসিদের মতে, একাদশ শতকে রাজা রামপাল ভীমকে পরাজিত করে প্রিয় পিতৃভূমি বরেন্দ্র উদ্ধার করেন। তিনি প্রজা সাধারণের জন্য পাহারপুরের কাছে রাজধানী রামাবতী এবং শিক্ষা বিস্তারের জন্য জগদ্দল মহাবিহার (বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেন। পাল শাসনামলের শেষার্ধে স্থাপিত প্রাচীন বাংলার শিক্ষা এবং দীক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ এই বিহারে বিভূতিচন্দ্র, আচার্য মোক্ষকর গুপ্ত, আচার্য দানশীল, শুভাকর গুপ্তের মত খ্যাতনামা পণ্ডিতগণ শিক্ষা গ্রহণ এবং গবেষণার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন ধর্মমঙ্গল কাব্যগ্রন্থ এবং নীহারঞ্জনের বাঙ্গালীর ইতিহাস গ্রন্থে এই বিহারের কথা উল্লেখ রয়েছে।
এক তথ্যে জানা যায়, জগদ্দল মহাবিহারের দৈর্ঘ্য পূর্ব-পশ্চিমে ১০৫ মিটার, উত্তর-দক্ষিণে ৮৫ মিটার এবং এর উচ্চতা ৫.৪০ মিটার। ১৯৯৭ সালে এই স্থান খননের মাধ্যমে একটি বিহারের আংশিক স্থাপত্য কাঠামো এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রত্নতত্ত্ব আবিষ্কৃত হয়েছে। পরবর্তীতে ২০০০, ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে জগদ্দল বিহারের ৩২ টিরও বেশি জায়গায় খনন করে অলংকৃত মূর্তি, ১৩৪টি প্রত্নতত্ত্ব , ১৪টি ব্রোঞ্জের মূর্তি, পোড়া মাটির টেরাকোটা, ৩৩টি ভিক্ষু কক্ষ এবং ৮x৮ মিটার প্রস্থের হলঘরও পাওয়া যায়। আবার একমাত্র এই বিহার থেকেই ৬০ সে.মি পুরত্ব বিশিষ্ট বৌদ্ধ বিহারের ছাদের ভগ্নাংশ এবং গ্রানাইট পাথরের পিলার উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও খননের মাধ্যমে আবিষ্কৃত ভিক্ষু কক্ষের প্রবেশ পথে অলংকৃত পাথরের চৌকাঠ, আবার কোথাও কোথাও দেবী কক্ষও দেখা গেছে। জগদ্দল বিহার হতে প্রাপ্ত মূল্যবান প্রত্ন সম্পদ গুলো বর্তমানে পাহাড়পুর জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী বা আব্দুল্লাহপুর থেকে এস আর, শ্যামলী, হানিফ বা মৌ এন্টারপ্রাইজের এসি/নন-এসি বাসে নওগাঁ যাওয়া যায়। তাছাড়া উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু ট্রেনও রয়েছে যেমন একতা, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, নীল সাগর ইত্যাদি ট্রেন। নওগাঁ পৌঁছে লোকাল বাস যোগে ধামইরহাটে অবস্থিত জগদ্দল বিহারে যেতে পারবেন।
এছাড়াও জয়পুরহাট জেলা থেকেও সহজে এই বিহারে যাওয়া সম্ভব। জয়পুরহাট জেলা সদর হতে মঙ্গল বাড়ী ধামইরহাট সড়ক দিয়ে হরতকী ডাঙ্গা হাট হতে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জগদ্দল বিহারে যেতে পারবেন।
নওগাঁতে বেসরকারি আবাসন ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে হোটেল প্লাবন, হোটেল অবকাশ, হোটেল যমুনা, মল্লিকা ইন, হোটেল ফারিয়াল এবং হোটেল রাজ।
নওগাঁ জেলা শহরের গোস্তহাটির মোড়ে খাবারের জন্য বেশ কিছু উন্নত মানের রেস্তোরাঁ রয়েছে। যেগুলোতে আপনি খাবার খেয়ে নিতে পারবেন।
নওগাঁতে অবস্থিত দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে আলতাদীঘি, ডানা পার্ক এবং পাহারপুর বৌদ্ধ বিহার। তাই এই সব স্থানেও আপনি বেড়াতে পারবেন।
তথ্যসূত্র: https://vromonguide.com
This post was last modified on জানুয়ারী ২৩, ২০২০ 11:13 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২৯ কার্তিক ১৪৩১…