দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শেষ বিকল্প হিসেবে ৬ বিশ্ব শক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি হতে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির চিফ অব স্টাফ এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে প্রচার করেছে রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা আইআরএনএর এক প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয় যে, প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ মাহমুদ ভায়েজি বলেছেন যে, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি হতে বেরিয়ে যাওয়াই ইরানের অপর এক বিকল্প পথ। এর আগেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে লেখা এক চিঠিতে পারমাণবিক চুক্তি থেকে ইরানের বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তুলে ধরেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন মাহমুদ ভায়েজি।
তিনি আরও বলেন, এটা আলোচনা করা হয় যে, কেও কেও ইরানকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিয়ে যেতে পারে…এটা যদি সত্যিই হয়, তাহলে আমরা পারমাণবিক চুক্তি হতে বেরিয়ে যাওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্তও নিতে পারি।
গত সপ্তাহে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক চুক্তির শর্ত না মানার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করে ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্স । এই তিন দেশের যৌথ এক বিবৃতিতে পারমাণবিক চুক্তির বিরোধ নিষ্পত্তি শুরু করার তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইরান চুক্তির শর্ত ধীরে ধীরেই লঙ্ঘন করছে। ২০১৫ সালে ভিয়েনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ইরান চুক্তির শর্ত মানছে না উল্লেখ করে ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি হতে বেরিয়ে আসে।
ইরানের সামরিক বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে মার্কিন হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে তেহরান-ওয়াশিংটনের মাঝে নতুন করে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। এমন এক পরিস্থিতিতে পারমাণবিক চুক্তির শর্ত ইরান মানবে না বলেও গত ৬ জানুয়ারি ঘোষণা দিয়েছে।
ইরানের এই ঘোষণার পর দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র ও পারমাণবিক চুল্লি তৈরিতে ইউরেনিয়ামের ব্যবহার করতে পারে বলেও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণের সীমা না মানার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে ইরান।
জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে, পুরো অঞ্চলকে হুমকির মুখে ফেলে চলমান উত্তেজনায় আমরা পারমাণবিক বিস্তারের সঙ্কট যুক্ত করতে কখনই পারি না। তেহরান চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করায় বর্তমানে ইরান, রাশিয়া, ফ্রান্স, চীন, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য ভিয়েনায় রাজনৈতিক স্তরের এক বৈঠকে মিলিত হবে। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হবে। এই বিরোধের নিষ্পত্তি না হলেও ইরানকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।