দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশী বিজ্ঞানীরাও বিশ্বের অন্যান্য দেশের থেকে পিছিয়ে নেই তার প্রমাণ করলো জ্বালানি ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদনের আবিষ্কারের মাধ্যমে। সমপ্রতি এমন এক আবিষ্কার বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছে।
এবার বিশ্ববাসীকে আরো এক চমক উপহার দিতে চলেছেন অসাধারণ প্রতিভাধর এই বাংলাদেশি বিজ্ঞানী। বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনে উদ্ভাবন করেছেন এক অভিনব প্রযুক্তি যাতে প্রয়োজন হয় না তেল, গ্যাস অথবা কয়লার মতো কোন জ্বালানি শক্তির। এমনকি প্রয়োজন নেই পানি, বাতাস কিংবা সৌরশক্তির মতো প্রাকৃতিক শক্তিরও। চৌম্বক ক্ষেত্রে সর্বব্যাপ্ত মহাজাগতিক তরঙ্গের পর্যায়ক্রমিক বিবর্তনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চমকপ্রদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন তরুণ বিজ্ঞানী ড. আহমেদ কামাল। তার উদ্ভাবিত প্রকল্পটি সীমিত ব্যয়ে অতি অল্প জায়গায় স্থাপন করা সম্ভব। ক্ষতিকারক ধোঁয়া, শব্দ, বর্জ্য বা তেজষ্ক্রিয়তা নির্গমন করে না বলে প্রকল্পটি পরিবেশবান্ধব। নিয়মিত জ্বালানি ছাড়াই বিদ্যুৎ তৈরি করে বলে এই প্রযুক্তির একটি হাজার মেগাওয়াট প্রকল্প থেকে প্রতি বছর সর্বোচ্চ দুই হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত মুনাফা করা সম্ভব। এছাড়া সার্বিক উৎপাদন ক্ষমতা অন্য যেকোনো প্রচলিত প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি বলে সারা বছর ধরেই নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।
বাংলাদেশী বিজ্ঞানীর এই অভিনব আবিষ্কার দেশে অসহনীয় বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি বিদ্যুতের বহুমুখী ব্যবহারও নিশ্চিত করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। ইতিমধ্যেই চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজসহ বেশ কয়েকটি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পের অর্থায়ন ও বাণিজ্যিকীকরণের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামে নিজের বাসায় একান্ত আলাপচারিতায় নিভৃতচারী এই বিজ্ঞানী জানান, বর্তমানে তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে খ্যাতনামা বৈজ্ঞানিক সাময়িকী ‘নেচার’-এর জন্য তার আবিষ্কৃত তড়িৎ-চৌম্বক তরঙ্গ প্রবাহের তত্ত্বের ওপর একটি নিবন্ধ লিখেছেন। আহমেদ কামালের গর্বিত মা রিজিয়া কামাল বলেন, ছোট বেলা থেকেই আহমেদ কামালের নেশা ছিল আবিষ্কারের দিকে। নানা রকমের বড় বড় আবিষ্কার ছাড়াও মাত্র দুইদিন আগে মশা মারার এক যন্ত্রও আবিষ্কার করেছে তার ছেলে। প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা লেখাপড়া ও গবেষণা নিয়ে আহমেদ কামাল ব্যস্ত থাকেন বলে জানান তিনি।
মানব কল্যাণে এতসব গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সত্ত্বেও ড. কামাল বরাবরই পর্দার অন্তরালে থাকতেই ভালোবাসেন। তার আবিষ্কারের বিবরণ ইন্টারনেটে নাসা, বেল ল্যাবরেটরি এবং আমেরিকার অন্যান্য বিশ্বনন্দিত গবেষণাগারের সাথে সংশ্লিষ্ট হাজারো সাইটে পাওয়া যায়। পদার্থ, রসায়ন, জীববিদ্যা, গণিত, সফটওয়্যার এবং প্রকৌশলবিদ্যার বহু শাখায় মৌলিক গবেষণা থাকা সত্ত্বেও আহমেদ কামালের পরিচিতির গণ্ডি খুবই সীমাবদ্ধ।
ড. আহমেদ কামাল বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ফেনীর গভর্নর মরহুম খাজা আহমেদের নাতি এবং মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক নাসিমুল কামাল ও বেগম রিজিয়া কামালের পুত্র। তিনি আমেরিকার পারডু ইউনিভার্সিটি থেকে সবচেয়ে কম সময়ে ব্যাচেলরস, ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স এবং জর্জিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে দ্বিতীয় মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার, ফলিত গণিত এবং আইসিটিতে বিশেষজ্ঞ জ্ঞান লাভ করেন। অল্প বয়সেই তিনি আমেরিকা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক, অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান পদে কর্মরত ছিলেন। তার রচিত কয়েকটি ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রন্থ ও বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ সুধীমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, চিকিৎসা জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়নকারী থ্রিডি ইমেজ প্রসেসিং এবং অত্যাধুনিক টেলিকমিউনিকেশন্স ও ইন্টারনেটের থ্রিজি, ফোরজি সংস্করণের আবিষ্কারক যে একজন বাংলাদেশি তা অনেকেরই অজানা। মাত্র ৩৫ বছর বয়সী এ বিজ্ঞানীর নাম প্রফেসর ড. আহমেদ ফারজান কামাল। তার উদ্ভাবিত থ্রিডি ইমেজ প্রসেসিং চিকিৎসা বিজ্ঞানে জীবনরক্ষাকারী এমআরআই, সিটিস্ক্যান এবং ত্রিমাত্রিক সার্জারি জাতীয় প্রযুক্তি এবং থ্রিডি টেলিভিশনের সূচনা করেছিল। এছাড়া তিনি মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের সর্বশেষ থ্রিজি, ফোরজি সংস্করণ উদ্ভাবনের মাধ্যমে টেলিকমিউনিকেশন্সের ক্ষেত্রেও যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তথ্যসূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক।