দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হলো। নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে মোনাজাত করছেন শাওনসহ নিকট আত্মীয় ও অন্যরা।
কল্পনায় দেখছি নুহাশ পল্লীর সবুজের মধ্যে শ্বেতপাথরের কবর- তার গায়ে লেখা- ‘চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে, নিয়ো না, নিয়ো না সরায়ে’- হুমায়ূন আহমেদ তার আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘কাঠপেন্সিল’-এ কথাটি লিখেছিলেন। সে কথাগুলো দিয়ে এপিটাফ করা হয়েছে বাংলা সাহিত্যের খ্যাতির বরপুত্র কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের কবরের শিয়রে। কাচ দিয়ে তৈরি এপিটাফের শুরুতেই রয়েছে নামের জায়গায় এই কথাশিল্পীর স্বাক্ষর। গাছ-গাছালিঘেরা নুহাশ পল্লীর লিচুতলায় শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন হুমায়ূন আহমেদ। শ্বেতপাথরে বাঁধানো কবরের বুকে জেগেছে সবুজ দূর্বা ঘাস। গতকাল ১৯ জুলাই ছিল জননন্দিত এই কথাশিল্পীর প্রথম প্রয়াণ দিবস। এদিন তার সমাধি ঢেকে যায় ফুলে ফুলে। অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী এসেছিলেন। তারা দুই হাত তুলে করেছেন মোনাজাত। চেয়েছেন প্রিয় লেখকের আত্মার মাগফিরাত। তাদের চোখের কোণে ছিল অশ্রুবিন্দু। ভোর থেকেই নুহাশ পল্লীর দ্বার খুলে দেওয়া হয় সবার জন্য।
দিনটি শুক্রবার থাকায় ফজরের নামাজের পর থেকে ভক্ত-অনুরাগী আসতে থাকে হুমায়ূন আহমেদের সমাধিতে। গাজীপুরের পিরুজালী গ্রাম ছাড়াও আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ এসেছিলেন তাদের প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমদের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে।
সকালে সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হুমায়ূনপত্নী মেহের আফরোজ শাওন। এ সময় তার দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিত উপস্থিত ছিল। তারাও কচি হাত তুলে ধরে বাবার জন্য দোয়া করেছে।
শাওন বলেন, ’১৯ জুলাই ২০১২-এর পর প্রতিটি মুহূর্তই আমার জন্য একই রকম খারাপ। আজকের দিনটা আমার জন্য আলাদা করে খারাপ নয়। এই কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করাও সম্ভব নয়। আমার বড় ছেলে যখন আমাকে প্রশ্ন করে, আজকে এখানে কেন এত মানুষ এসেছে, কেন ফুল দিচ্ছে আমার বাবা কি এই ফুল নিতে আসবে আমার কোনো জবাব থাকে না। হুমায়ূনহীন প্রতিটি মুহূর্ত আমার একই রকম।’
দুপুরের পর একপশলা বৃষ্টি হয়। সেই বৃষ্টিতে ভিজে হুমায়ূনের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার বইয়ের প্রকাশকরা। তাদের মধ্যে ছিলেনথ অবসর প্রকাশনীর আলমগীর রহমান, অন্যপ্রকাশের মাজহারুল ইসলাম, সময় প্রকাশনের ফরিদ আহমেদ, অনুপম প্রকাশনীর মিলন নাথ, কাকলীর নাছির আহমেদ সেলিম, বাংলাপ্রকাশের হুমায়ুন কবীর ঢালি, জ্ঞানকোষের হাসান সাঈদ, অন্বেষা প্রকাশনের শাহাদাত হোসেন ও পার্লের হাসান জায়েদী। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সালেহ চৌধুরী, ধ্রুব এষ, শাকুর মজিদ, ডা. এজাজুল, হুমায়ূন আহমেদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু স্থপতি ফজলুল করিম ও মনির আহমেদ, নাট্য পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী, এসএম রহমান, অভিনেতা কমল, টুলুসহ আরও অনেকে।