দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সময় কাটানোর জন্য আমরা বেড়াতে গিয়ে থাকি। তবে এমন একটি জায়গায় বেড়াতে যাওয়া উচিত যেখানে গেলে আপনি ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই ঘুরে আসুন ময়মনসিংহের ময়না দ্বীপ।
ময়মনসিংহ শহর হতে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদীতে জেগে উঠা ব-দ্বীপটি ময়নার চর বা ময়না দ্বীপ হিসেবে পরিচিত। একদিকে স্বচ্ছ পানির খেলা এবং অপরদিকে বাণিজ্যিক ভাবে চাষকৃত বিশাল লেবু বাগান নিয়ে ছায়া সুনিবিড় ময়না দ্বীপ যেনো সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে বসে রয়েছে।
জানা যায় যে, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কর্মী ময়না মিয়া এখানে বসবাস করতেন। অবসরে গাছের তলায় বসে তিনি বাঁশি বাজিয়ে সময়ও কাটাতেন। বাঁশির সুমধুর সুর শুনে অনেকেই ময়না মিয়ার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। ময়না মিয়া তাদেরকে ব্রিটিশদের তাড়ানোর নানা বুদ্ধিও শিখিয়ে দিতেন। এভাবে আস্তে আস্তে লোক মুখে এই চরের নাম হয়ে যায় ময়না চর বা ময়না দ্বীপ। আবার অনেকের মতে, একসময় এই চরে প্রচুর ময়না পাখির বসবাস ছিল সে থেকেই এমন নামকরণ নাকি করা হয়েছে।
সবুজে ঘেরা কোলাহল মুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে ময়না দ্বীপে চোখে পড়ে নদী কেন্দ্রিক মানুষের জীবন-যাপন, সারিবদ্ধ নৌকা, হাজার হাজার বুনো হাঁসের ঝাঁক এবং পানকৌড়ি কিংবা চিলের মতো বিভিন্ন শিকারি পাখির প্রাচূর্য রয়েছে। আবার ফেরার পথে সূর্যাস্তের চমৎকার দৃশ্য দর্শনার্থীদের বিমোহিত করবে তাতে সন্দেহ নেই। তাই শহর হতে দূরে কোথাও নিরিবিলিতে সময় কাটানোর জন্য ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসেন এই ময়না দ্বীপে। বর্তমানে এই ময়না দ্বীপটি পিকনিক স্পট হিসেবেও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
ঢাকা হতে বাস বা ট্রেনে ময়মনসিংহ যেতে পারবেন। মহাখালী হতে ময়মনসিংহ রুটের বেশীরভাগ বাস চলাচল করে থাকে। এছাড়াও কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে তিস্তা, যমুনা বা অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনে ময়মনসিংহ যাওয়া যাবে।
ময়মনসিংহ পৌঁছেই রিকশা, অটো রিকশা বা সিএনজিতে চড়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ মোড়ে চলে আসুন। শেষ মোড়ে স্থানীয় যে কাওকে জিজ্ঞাসা করলে ময়না দ্বীপের সন্ধান পেয়ে যাবেন অনায়াসে।
এছাড়াও যদি এডভেঞ্চার প্রেমী হন তবে ময়মনসিংহ শহরের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্ক, কাচারি ঘাট কিংবা থানার ঘাটের সামনে থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে ময়না দ্বীপে যেতে পারেন। কয়েকজন মিলে সারাদিনের জন্য নৌকা ভাড়া করলে দেড় হতে দুই হাজার টাকায় ময়না দ্বীপে আপনি যেতে পারবেন।
ময়মনসিংহ শহরে থাকার জন্য পাবেন হোটেল আমির ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল হেরা, সিলভার ক্যাসেল, হোটেল লা ম্যারিয়ান, ঈশাঁ খা ও হোটেল আসাদের মতো বিভিন্ন মানের বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে এখানে।
ময়না দ্বীপের আসে-পাশে খাবারের কোনো রকম দোকান নেই। যদি সারাদিনের পরিকল্পনা করে ময়না দ্বীপে ঘুরতে যান তাহলে আপনাকে সঙ্গে করে খাবার নিয়ে যেতে হবে। জব্বারের মোড়ে সাধারণ মানের কিছু খাবারের হোটেল রয়েছে। ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত হোটেল ধানসিঁড়ি, হোটেল রোম থ্রি, হোটেল সারিন্দা, সেভেল ইলেভেন এবং প্রেস ক্যান্টিনের খাবারের বেশ সুনামও রয়েছে। তাছাড়াও সুযোগ পেলে মুক্তাগাছার মণ্ডা, মালাইকারী, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দই ও মুকুল ভাইয়ের চা খাওয়ার সুযোগ কিন্তু মোটেও হাতছাড়া করবেন না।
ময়না দ্বীপ নির্জন একটি জায়গা তাই নিরাপত্তার জন্য একা কিংবা দুজনে না গিয়ে কয়েকজনের গ্রুপ যাওয়াই ভালো।
ময়মনসিংহের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শশী লজ, সন্তোষপুর রাবার বাগান, মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ী এবং শিল্পাচার্য জয়নাল আবেদিন পার্ক উল্লেখযোগ্য বেড়ানোর স্থান রয়েছে।
তথ্যসূত্র: https://vromonguide.com
This post was last modified on মার্চ ৪, ২০২০ 3:49 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…