দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ট্ট্রাম্প প্রশাসনের জোরালো দাবি সত্ত্বেও নতুন করোনা ভাইরাসটি চীনের গবেষণাগারে তৈরি হয়নি বলে নিজেদের যুক্তিতে অটল রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সোমবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘অনুমাননির্ভর’ দাবির সমর্থনে ওয়াশিংটন এমন কোনোই প্রমাণ দেয়নি, যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে নতুন করোনা ভাইরাসটি চীনের এক পরীক্ষাগার (ল্যাব) হতে উদ্ভূত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি কর্মকাণ্ড বিষয়ক পরিচালক মাইকেল রায়ান ভারচুয়াল ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘ভাইরাসের উৎসের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আমরা কোনো রকম তথ্য বা সুনির্দিষ্ট প্রমাণই পাইনি। কাজেই আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি অনুমাননির্ভর রয়ে গেছে।’
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ভাইরাসটি প্রাণী হতে মানুষে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, গত বছরের শেষের দিকে চীনে যার প্রাদুর্ভাব ঘটেছিলো। এটি সম্ভবত উহানের একটি বণ্য প্রাণীর মাংসের বাজার হতে ছড়িয়েছিল।
আমেরিকার শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজেসের পরিচালক অ্যান্টনি এস ফাউসি সোমবার ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুরেই সুর মিলিয়েছেন। তিনি বলেন যে, ভাইরাসের প্রকৃতি দেখে মনে হয় না কৃত্রিমভাবে বা ইচ্ছাকৃতভাবে এতে হেরফের করা সম্ভব।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ডিসেম্বরে উহান শহরে প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটা এই ভাইরাসটি সম্পর্কে ক্রমাগত চীনের সমালোচনা করে আসছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি অভিযোগ করেন যে, তার পুনর্নির্বাচিত কর্মসূচি ভন্ডুল করতেই চীন আগেভাগে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেনি।
ইতিপূর্বে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাস নিয়েই বলতে পারেন, বিশ্বব্যাপী মহামারি সৃষ্টিকারী ভাইরাসটি চীনের পরীক্ষাগার (ল্যাব) হতে এসেছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জাননো হয় যে, করোনা রভাইরাসের ব্যবস্থাপনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই দোষারোপ বেইজিংয়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের কেবলমাত্র উত্তাপই ছড়াচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, চীনের গবেষণাগার হতে নতুন করোনা ভাইরাসটির উৎপত্তি ঘটেছে বলে অনেক প্রমাণ রয়েছে।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীন। মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা অফিসের পরিচালক বলেছেন, বিশ্লেষকরা এখনও এই প্রকোপের প্রকৃত উৎস নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন।
অপর দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও কড়া সমালোচনা করে আসছেন। এমনকি সংস্থাটিতে অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণাও তিনি দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, সংস্থাটির লজ্জা হওয়া উচিত। তারা যেনো চীনের জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান বা পিআর এজেন্সির ভূমিকা পালন করছে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।