দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস মহামারির প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার নিজ কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছে, তারা চাইলে ‘আজীবন’ বাড়ি বসেই কাজ করতে পারবেন।
লকডাউনের সময় টুইটার বাড়ি থেকে কাজ করার যে ব্যবস্থা চালু করেছে, সেটি কার্যকর হওয়ায় কোম্পানি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবে সেই সঙ্গে কোম্পানী এটিও জানিয়েছে যে, লকডাউন উঠে যাওয়ার পর যখন অফিস খোলা হবে, তখন কর্মীরা চাইলে অফিসেও আসতে পারবেন।
বিবিসি’র এক খবরে বলা হয়, এর পূর্বে এই মাসের শুরুর দিকে গুগল এবং ফেইসবুক জানিয়েছে, বছর শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মীরা বাড়ি থেকে কাজ করে যেতে পারবেন। বাড়ি থেকে কাজ করার ঘোষণায় টুইটারও বলেছে, ‘গত কয়েক মাসে এটা প্রমাণিত হয়েছে, আমরা এটা (বাড়ি থেকে) কাজ করতে পারছি। সুতরাং আমাদের কর্মীরা যদি বাড়ি থেকেই কাজ করার মতো দায়িত্ব ও পরিস্থিতিতে থাকেন এবং তারা যদি বাড়িতে বসেই আজীবন কাজ করতেও চান, আমরা সেই ব্যবস্থাও করবো।’ টুইটার তাদের ঘোষণায় আরও বলেছে যে, যেসব কর্মীরা অফিসে আসতে আগ্রহী, টুইটার তাদের সেই ইচ্ছাকেও অবশ্য স্বাগত জানাবে। তবে সেই ক্ষেত্রে কিছু অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশ্বজুড়ে সানফ্রানসিসকো ভিত্তিক এই কোম্পানিটির চার হাজারেরও বেশি কর্মী রয়েছে।
গত মার্চ মাস হতেই এই কোম্পানিটি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। সেপ্টেম্বরের আগে তাদের অফিস চালু করার কোনো সম্ভাবনা নেই। টুইটারের ঘোষণাকে ‘যুগান্তকারী’ বলে বর্ণনা করেছেন জনৈক ডিজিটাল উদ্ভাবন বিশেষজ্ঞ শ্রী শ্রীনিবাসন।
স্টোকি ব্রুক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ জার্নালিজমের এই অতিথি অধ্যাপক বলেছেন যে, ‘অনেকেই হয়তো টুইটারের মতো এতো গভীরভাবে বিষয়টিকে গ্রহণই করেননি, তবে কর্ম পরিবেশ কীভাবে আরামদায়ক করে তোলা যায়, তা নিয়ে সিলিকন ভ্যালির এই কোম্পানির কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছুই শেখার রয়েছে।
একটা ধারণা রয়েছে যে, বাড়ি থেকে কাজ করার মানে হলো কাজে ফাঁকি দেওয়া এবং অফিসে চেহারা দেখানোটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে কর্মীরা এখন প্রমাণ করেছেন যে, তারা বাড়ি থেকেও ভালো কাজ করতে পারেন ও প্রয়োজনীয় সব কাজই সম্পন্নও করতে পারেন। অনেকেই আমাকে বলেছেন যে, বাড়িতে তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে এবং সে কারণে ক্লান্তও হয়ে পড়ছেন।’
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব জুড়েই কোম্পানিগুলো এখন বিকল্প উপায় বের করার চেষ্টা করছে, কীভাবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে আস্তে আস্তে অফিসগুলো পুনরায় চালু করা যায় সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।